শিরোনাম
◈ মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল কুয়ালালামপুর! ◈ আওয়ামী লীগ থেকে তো প্রচুর যোগাযোগ হচ্ছেই, আমাকে বলে দলের হাল ধরতে: তাজউদ্দীন আহমদের বড় মেয়ে ◈ এপস্টাইন কী ভাবে ‘শিকার’ ধরতেন? কী করতেন প্রেমিকা? আমেরিকা থেকে স্মৃতিচারণ ভুক্তভোগীর, চ‌লে আস‌লো ট্রাম্পের নাম  ◈ শয়ে শয়ে মুসলমানকে বেআইনিভাবে বাংলাদেশে তাড়াচ্ছে ভারত: হিউমান রাইটস ওয়াচ এর প্রতি‌বেদন ◈ নিম্নচাপ ও অমাবস্যার জোড়া প্রভাবে উপকূল প্লাবিত, দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদীর পানি বিপদসীমার ওপরে ◈ শর্ট বল খেলতে না পারলে টেস্ট খেলার দরকার কী? : সু‌নিল গাভাস্কার ◈ ভারতের ফুটবল কোচ হতে চান জাভি হার্না‌ন্দেজ, আবেদনে সারা দেয়নি ফেডারেশন ◈ এন‌সি‌পি কী আওয়ামী লীগ বিরোধিতাকে পুঁজি করে রাজনীতি করতে চায়? ◈ দশম গ্রেডে প্রধান শিক্ষকদের বেতন কার্যকরে প্রস্তুত সরকার, সহকারী শিক্ষকরা চায় ১১তম গ্রেড ◈ বাংলাদেশের ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ

প্রকাশিত : ২৫ জুলাই, ২০২৫, ০৮:১৪ রাত
আপডেট : ২৬ জুলাই, ২০২৫, ০১:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ফিটনেসবিহীন রাষ্ট্র মেরামতের জন্যই জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপি প্রতিষ্ঠতি হয়েছে : নাহিদ ইসলাম

আল হেলাল, সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘আমরা এমন একটা দেশে বাস করি, যেখানে বাসের ফিটনেস থাকে না, বিমানের ফিটনেস থাকে না, এমনকি মানুষেরও ফিটনেস থাকে না। শেখ হাসিনা আমাদের জন্য একটি ফিটনেসবিহীন রাষ্ট্র চাপিয়ে দিয়ে গেছে।’

আজ শুক্রবার বিকেলে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের আলফাত স্কয়ারে এনসিপির পথসভায় নাহিদ ইসলাম এ কথা বলেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে ঢাকার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত ব্যক্তিদের স্মরণ করে বলেন, ‘আল্লাহ এই পরিবারগুলোকে ধৈর্য ধরার শক্তি দিন।’

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা এই প্রজন্ম, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি ফিটনেসবিহীন রাষ্ট্র রেখে যেতে পারি না। এটা আমাদের দায়িত্ব। যাঁরা গণ–আন্দোলনে শহীদ হয়েছেন, যে আকাঙ্ক্ষায় মানুষ জীবন দিয়েছেন, শহীদ পরিবারের সদস্যরা আছেন, তাঁদের আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য হলেও এই রাষ্ট্র মেরামত করতে হবে। এনসিপি রাষ্ট্র মেরামতের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।’

এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদকে উৎখাত করেছি। এখন গণতান্ত্রিকভাবে নিয়মতান্ত্রিকভাবে সংস্কারের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে চাই। এ জন্য আমরা মানুষের কাছে যাচ্ছি, মানুষের কথা শুনছি।’ তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ, নতুন বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের লড়াই চলবে। তাঁরা জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র আদায় করে ছাড়বেন।

পথসভায় আগত লোকজনের উদ্দেশে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, ‘আমরা আপনাদের চিনতাম না, আপনারাও আমাদের চিনতেন না। ইতিহাস ও সময় আমাদের সামনাসামনি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। বিগত ১৬ বছর শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদ, গুম, খুন, গণহত্যার বিরুদ্ধে বিরোধী দলগুলোর নেতারা যখন আন্দোলন এগিয়ে নিতে পারছিলেন না, তখন জনতা রাস্তায় নেমে আসে। ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ে প্রকৃত বিজয়ী জনগণ। জনগণকে নিয়েই আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়ব।’

নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ‘মুজিববাদ এখনো নানাভাবে ছলেবলে মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করছে। এ দেশে মুজিববাদের জায়গা হবে না। মুজিববাদ মানেই একদলীয় শাসন, লুটেরা, সাম্প্রদায়িকতা, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জমি দখল। মুজিববাদকে এ দেশে দাঁড়াতে দেওয়া হবে না।’ তিনি বলেন, সুনামগঞ্জ হাওর ও নদীর এলাকা। হাওরের প্রকৃতি ও পরিবেশ এবং মানুষের কথা মাথায় রেখেই উন্নয়ন করতে হবে। এখানকার কৃষি ও কৃষককে গুরুত্ব দিতে হবে।

পথসভায় এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘আওয়ামী ফ্যাসিস্টরা আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। আমরা যত দিন বেঁচে আছি, ফ্যাসিস্টদের এ দেশে ফিরতে দেওয়া হবে না।’ তিনি প্রখর রোদের মধ্যেও পথসভায় যোগ দেওয়ায় উপস্থিত লোকজনকে ধন্যবাদ জানান।

এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘আমাদের অনেক সময় দখলদার ও চাঁদাবাজেরা বলে, বাংলা নাকি আমাদের বাপ-দাদার নয়। আমরা তাদের বলছি, বাংলা নয় তোদের বাপ-দাদার। আমরা শুনতে পাাচ্ছি, যারা এনসিপিতে যোগ দিতে চায়, এনসিপি করতে চায়, তাদের ভয়ভীতি দেখানো হয়। তাই গ্রামেগঞ্জে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে।’ সুনামগঞ্জ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘রাজা যায়, রাজা আসে, সরকার যায়, সরকার আসে; কিন্তু সুনামগঞ্জের মানুষের যে জীবনপদ্ধতি, সেটি আগের মতোই রয়ে গেছে।’

এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সুনামগঞ্জ সার্কিট হাউসে ওঠেন। শুক্রবার সকালে সংগঠনের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সার্কিট হাউসে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। দুপুরে শহরের কেন্দ্রীয় মডেল জামে মসজিদে জুমার নামাজ আদায় শেষে সেখান থেকে পদযাত্রা শুরু করেন। পদযাত্রাটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে আলফাত স্কয়ারে যায়। সেখানে বেলা আড়াইটার পথসভা শুরু হয়।

এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক অনিক রায়ের সঞ্চালনায় পথসভায় দলের উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা, জেলার যুগ্ম সমন্বয়ক আবু ছালেহ নাসিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। মঞ্চে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহত ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। পথসভায় স্বাগত বক্তব্য দেন এনসিপির সুনামগঞ্জ জেলার প্রধান সমন্বয়ক হাছন রাজার প্রপৌত্র দেওয়ান সাজাউর রাজা চৌধুরী। বেলা সাড়ে তিনটায় এনসিপির নেতারা সিলেটের উদ্দেশে সুনামগঞ্জ ত্যাগ করেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়