হৃদয় হাসান, কুমিল্লা: ডাকসুর সাবেক ভিপি ও গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নূরুল হক নূর বলেছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সদ্য গঠিত এনসিপিকে পৃষ্ঠপোষকতা করছে। এ নিয়ে আমরা সরকারকে বারবার সতর্ক করেছি। যদি সরকার নিরপেক্ষ আচরণে ব্যর্থ হয়, তাহলে নির্বাচনের আগেই একটি নিরপেক্ষ সরকার গঠনের প্রয়োজন হতে পারে।
শুক্রবার (২৬ জুলাই) কুমিল্লা নগরীর কান্দিরপাড় টাউন হল মাঠে 'গণঅভ্যুত্থানের জনআকাঙ্ক্ষা ও রাষ্ট্র সংস্কার' শীর্ষক সমাবেশে বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “সরকার যদি নিরপেক্ষ আচরণ না করে, তাহলে নির্বাচনের জন্য আরেকটি নিরপেক্ষ সরকার প্রয়োজন হতে পারে। আমরা চাই, সরকার সব দলের প্রতি সমান আচরণ করুক।”
ভিপি নূর অভিযোগ করেন, “কোনো কোনো জেলায় বৃক্ষমেলা বন্ধ করে, স্কুল-কলেজের ক্লাস বাতিল করে, শিক্ষার্থীদের জোর করে সরকারি দলীয় সমাবেশে নেওয়া হচ্ছে—এটা নতুন কিছু নয়, পুরনো আমলেরই পুনরাবৃত্তি।”
তিনি বলেন, “আমরা চাই আওয়ামী লীগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হোক। পাশাপাশি যারা তাদের সহযোগিতা করেছে—জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন—তাদের বিরুদ্ধেও একই ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নূর বলেন, “গত ৫০ বছরের পুরোনো রাজনীতি জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। সেই সংঘাতময় রাজনীতির কবর রচনা করতে হবে। তরুণরাই সেই পরিবর্তনের নেতৃত্ব দেবে।”
তিনি আরো বলেন, “গত ১৬ বছর ধরে অনেকে লড়াই করেছেন, কিন্তু ফ্যাসিবাদের পতন ঘটাতে পারেননি। তাই আমরা গণঅধিকার পরিষদ গঠন করেছি—তরুণদের বিপ্লবের জন্য প্রস্তুত করতে।”
আগামী নির্বাচনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “গণঅধিকার পরিষদ একটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল হিসেবে ‘ট্রাক’ প্রতীক নিয়ে ৩০০ আসনে নির্বাচনে অংশ নেবে।”
ভিপি নূর কুমিল্লার প্রসঙ্গে বলেন, “মেঘনায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে মানুষ ঘরবাড়ি হারাচ্ছে, অথচ প্রশাসন নির্বিকার। অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই কুমিল্লা শহরে দেখা দেয় জলাবদ্ধতা ও যানজট। গণঅধিকার পরিষদের তরুণ নেতৃত্বের মাধ্যমে ঐতিহাসিক কুমিল্লাকে আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত করা হবে।”
তিনি আরও বলেন, “শান্তিপূর্ণ ও সহনশীল রাজনৈতিক পরিবেশ বজায় রাখতে হবে। নতুন ধারার রাজনীতির নেতৃত্ব তরুণদেরই নিতে হবে।”
সমাবেশ শেষে ভিপি নূরের নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়, যা নগরীর প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খান, ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মঞ্জুর মোর্শেদ মামুন এবং কুমিল্লা জেলা সভাপতি মো. ফয়েজ উল্লাহসহ বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ।