সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলায় এক হৃদয়বিদারক ও পৈশাচিক নির্যাতনের ঘটনায় এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। প্রেমের সম্পর্কের ছদ্মাবরণে প্রতারণা, টাকা আত্মসাৎ এবং ভয়াবহ শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এক প্রবাসী যুবক। তার লিঙ্গ কেটে ফেলা হয় পরিকল্পিতভাবে। এই বর্বর ঘটনার বিচার চেয়ে সুনামগঞ্জের আমল গ্রহণকারী জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সি.আর. মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলার বাদী দোয়ারাবাজার উপজেলার মঙ্গলপুর ডাউকেরকাড়া মো. জসিম উদ্দিন (৪৫) । তিনি জানান, তার ছোট ভাই বুরহান উদ্দিন (৩৫) প্রায় সাত বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক গড়েছিলেন নিগার সুলতানা নামে এক তরুণীর সঙ্গে। প্রবাসে অবস্থানকালে ভাই বিভিন্ন সময়ে ৭,৭৪,০০০ টাকা পাঠান নিগারের কাছে। দেশে ফিরে বিয়ের প্রস্তাব দিলে নিগার তা এড়িয়ে যান। পরবর্তীতে জানা যায়, নিগার সুলতানা জামালগঞ্জ ব্র্যাক ব্যাংকের ম্যানেজার হুমায়ুন কবীরের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িত।
গত ১৩ই মে নিগার ও হুমায়ুন কবীর কৌশলে বুরহান উদ্দিনকে জামালগঞ্জ নতুনপাড়ায় নিগারের বাসায় আসতে বলেন। তিনি এলে তাকে চায়ে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ানো হয়। অচেতন হওয়ার পর হাত-পা বেঁধে রাতভর পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়। পরে ধারালো ব্লেড দিয়ে তার লিঙ্গ কেটে দেয়া হয়। এরপর তাকে একটি ঘরের ভেতর তালাবদ্ধ করে রেখে তারা পালিয়ে যায়। নির্যাতনের পর ভুক্তভোগীকে জামালগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। কিন্তু অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় তাকে তাৎক্ষণিকভাবে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
তিনি বলেন, এই ঘটনা আমার ভাইয়ের জীবনের সব স্বপ্ন ধ্বংস করে দিয়েছে। যদি এই ঘৃণ্য অপরাধের কঠোর বিচার না হয়, তাহলে আরও অনেক প্রবাসী এমন ভয়াবহতার শিকার হবেন।
জামালগঞ্জে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, যুবকটির অবস্থা খুবই গুরুতর ছিল। তার যৌনাঙ্গ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। আমরা দ্রুত রেফার করি।
ব্র্যাক জামালগঞ্জ অফিসের একজন কর্মকর্তা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানান, নিগার ও হুমায়ুন কিছুদিন ধরে ছুটিতে আছেন। বিষয়টি অফিসিয়ালি আমাদের কাছে এখনো আসেনি। তদন্তের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। উৎস: মানবজমিন।