শিরোনাম
◈ মেট্রো স্টেশনে বসছে এটিএম ও সিআরএম বুথ ◈ ১৬ই জুলাই রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা ◈ রহস্যময় নাকামোতো এখন বিশ্বের ১২তম ধনী, বিটকয়েন সম্পদ ১২৮ বিলিয়ন ডলার ◈ শাহবাগ মোড় অবরোধ করলো স্বেচ্ছাসেবক দল ◈ বিএসবির খায়রুল বাশারকে আদালত প্রাঙ্গণে ডিম নিক্ষেপ, কিল-ঘুষি ◈ গণপ্রতিরোধের মুখে শেখ হাসিনা পালাতে বাধ্য হয়েছিলেন: ভোলায় নাহিদ ইসলাম  ◈ গৌরনদীতে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বদলি আদেশ ঘিরে অবরোধ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ৩ ◈ ফ্যাসিস্টদের জায়গা এই বাংলার মাটিতে হবেনা: ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি ◈ ফরিদপুরে চায়না দুয়ারির ফাঁদে অস্তিত্ব-সংকটে দেশীয় প্রজাতির মাছ ◈ বিনা বিচারে ৩০ বছর কারাভোগের পর মুক্তি পেলেন কানু মিয়া

প্রকাশিত : ১৪ জুলাই, ২০২৫, ০৮:৩৩ রাত
আপডেট : ১৫ জুলাই, ২০২৫, ০২:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ফরিদপুরে মোবাইল ব্যাংকিং প্রতারণা চক্রের মূলহোতাসহ ৫ জনকে আটক 

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর প্রতিনিধি: ফরিদপুরের মধুখালীতে সেনা ক্যাম্প ও পুলিশের সমন্বয়ে যৌথ অভিযানে মোবাইল ব্যাংকিং প্রতারণা ও অর্থপাচার চক্রের মূলহোতাসহ পাঁচ সক্রিয় সদস্যকে আটক করেছে যৌথবাহিনী। 

সোমবার (১৪ জুলাই) ভোররাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে যৌথবাহিনী মধুখালী উপজেলার ডুমাইন বাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় আটককৃতদের কাছ থেকে ১০৬ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ৪২টি গ্রামীণফোনের সিমকার্ড ও ১০টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করেন। 

আটককৃতরা হলেন, প্রতারণা চক্রের মূলহোতা মো. কামরুল মিয়া (৪০), তার চার সহযোগী অমরেশ বিশ্বাস (৩০), সোহান মালিক (২৪), হাফিজুর রহমান (৪২) ও শেখ শাকিল আহমেদ (২৬)। তারা সকলেই ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ডুমাইন বাজার এলাকার বাসিন্দা। আটককৃতদের মধুখালী থানায় হস্তান্তর করলে মামলার পর আসামীদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। 

অভিযান সূত্রে জানা যায়, মোবাইল ব্যাংকিং প্রতারণা ও আন্তর্জাতিক অর্থপাচার চক্রের বিরুদ্ধে সম্প্রতি ফরিদপুর সেনা ক্যাম্পে একাধিক অভিযোগপত্র জমা পড়ে। সেনাবাহিনীর ১৫ রিভারাইন ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়নের নেতৃত্বে তিন দিনব্যাপী এই চক্রের প্রযুক্তি ব্যবহার, ভৌগোলিক অবস্থান এবং আর্থিক লেনদেন পদ্ধতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করেন তারা।

প্রতারকদের প্রতারিত অর্থের একটি বড় অংশ বাংলাদেশে সক্রিয় শতাধিক অনলাইন জুয়া ও বেটিং সাইটে প্রবেশ করানো হতো। এই চক্র বিশেষ সফটওয়্যার ও স্ক্রিপ্ট ব্যবহার করে অনৈতিকভাবে 'শতভাগ জয়' নিশ্চিত করে জুয়ার মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করত। অর্থের একটি বড় অংশ সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রবাসী বাংলাদেশিদের দ্বারা তৈরি ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে পাচার করা হতো। অবশিষ্ট অর্থ চক্রের সদস্যরা স্থানীয়ভাবে ভাগ করে নিত। যেখানে প্রতারকরা বিকাশ, নগদ ও অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিং সেবার ভূয়া কাস্টমার কেয়ার প্রতিনিধি সেজে ভুক্তভোগীদের কথা বলতেন। 

জানা গেছে, প্রতারক চক্র গ্রাহকদের অ্যাকাউন্ট, পিন ও ওটিপি (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে তাদের অ্যাকাউন্ট থেকে অবৈধভাবে অর্থ সরিয়ে নিচ্ছিল। যৌথবাহিনীর কাছে দেওয়া অভিযোগের কমন মোবাইল নম্বর গুলো গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে ট্রেস করে জানতে পান, প্রতারকদের অর্থের উৎস দেশের বিভিন্ন জেলা হলেও এর চূড়ান্ত গন্তব্য মূলত ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের একটি নির্দিষ্ট এলাকায় কেন্দ্রীভূত।

মধুখালী থানা সূত্র জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা স্বীকার করে যে, তারা দেশব্যাপী বিকাশের ভুয়া কল সেন্টার সেজে গ্রাহকদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে প্রতারণা করত। নতুন মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট চালু রাখার জন্য তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয় অবৈধ সিম সরবরাহকারী গ্রুপ থেকে বিকাশ ও নগদ পূর্ব-নিবন্ধিত মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করত। 

মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুজ্জামান জানান, এই প্রতারণা চক্রের বিস্তৃতি কেবল ফরিদপুরেই সীমাবদ্ধ ছিল না। তারা রাজশাহী, খুলনা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, ময়মনসিংহসহ দেশের প্রায় প্রতিটি বিভাগেই তাদের অপতৎপরতা বিদ্যমান ছিল। এটি দেশের মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা ডিজিটাল প্রতারণার ভয়ংকর ফাঁদ। আটককৃতদের ফরিদপুর আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়