আরমান কবীর : আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০২৪ সালে ডামি নির্বাচনের আয়োজন এবং ভোট চুরির মাধ্যমে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীকে এমপি নির্বাচিত করার অভিযোগে টাঙ্গাইলে সেই সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার (১৯ মে) টাঙ্গাইলের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভূঞাপুর থানা আমলী আদালতে কামরুল হাসান নামে এক ব্যক্তি মামলাটি দায়ের করেন। সংশ্লিষ্ট আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট রুমেলিয়া সিরাজাম মামলাটি আমলে নিয়ে ভূঞাপুর থানার ওসিকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
মামলার বাদি কামরুল হাসান (৫৫) টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার ভারই গ্রামের মৃত মমতাজ উদ্দিন আহম্মেদের ছেলে মামলায় আসামির তালিকায় শেখ হাসিনাসহ ১৯৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরো ১৫০ থেকে ২০০ জনকে।
শেখ হাসিনা ছাড়াও উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর-গোপালপুর) আসনের সাবেক এমপি তানভীর হাসান ছোট মনির, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী আব্দুল আওয়াল, তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন ও টাঙ্গাইলের সাবেক জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
এছাড়া পুলিশ ও প্রিজাইডিং অফিসারসহ নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়েছে।
বাদি মামলায় উল্লেখ করেন, ‘আমাদের শত্রু রাষ্ট্র ভারতের নির্দেশক্রমে শেখ হাসিনা অন্য আসামিদের সাথে যোগসাজশ করে বিগত ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি একটি ডামি নির্বাচনের আয়োজন করেন। বাদি কামরুল হাসান ভূঞাপুরের অলোয়া ইউনিয়নের ভারই উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোটার ছিলেন। তিনি অন্য ভোটারদের সাথে ওই কেন্দ্রে ভোট দিতে গেলে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। আসামিরা তাকে মারপিট করে এবং হত্যার হুমকি দেয়। নির্বাচনে পুলিশ ও প্রিসাইডিং অফিসারের সহায়তায় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা ভোটকেন্দ্র দখল করে জোরপূর্বক নৌকা মার্কায় সিল মেরে বাক্স ভর্তি করে। এভাবে অন্যের ভোট চুরি করে টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর-গোপালপুর) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তানভীর হাসান ছোট মনিরকে এমপি পদে নির্বাচিত করা হয়। এতে দেশ ও জনগণের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়।’
বাদিপক্ষের আইনজীবী টাঙ্গাইল বার সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু রায়হান খান বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে মোট ১৯৩ জনের বিরুদ্ধে এই মামলা রুজু করা হয়েছে। বিজ্ঞ বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে বাদির জবানবন্দি গ্রহণ করেন। পরে ভূঞাপুর থানার ওসিকে মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। সেইসাথে আগামী ১৩ আগস্ট মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন আদালত। আশা করি আদালতে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে।’