শিরোনাম
◈ রাজধানীর শাহবাগে এনসিপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ (ভিডিও) ◈ ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগরে যুবদল নেতা গুলিবিদ্ধ ◈ মিরপুরে কমিউনিটি সেন্টারে ভয়াবহ আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৬ ইউনিট ◈ শান্তি ও সহযোগিতার আকাঙ্ক্ষা পূরণে জাতিসংঘকে হতে হবে আরও গতিশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক: ড. মুহাম্মদ ইউনূস ◈ ওমরাহ যাত্রায় এখন থেকে রিটার্ন টিকিট বাধ্যতামূলক: নতুন নির্দেশনায় কড়াকড়ি সৌদি কর্তৃপক্ষের ◈ আগামী নির্বাচনে যাদের জয়ী হবার কোনো সম্ভবনা নেই তারাই নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে : মির্জা আব্বাস ◈ পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়ন ছাড়া বিকল্প নেই: সুপ্রদীপ চাকমা ◈ শাহবাগে আর্থিক লেনদেন বিরোধে এনসিপি'র দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ১ ◈ তারেক রহমান ফিরবেন নভেম্বরে, চলতি মাসেই ২০০ আসনে একক প্রার্থী চূড়ান্ত করবে বিএনপি: সালাহউদ্দিন আহমদ ◈ ‘ভোটকেন্দ্রে থাকবে বডি ক্যামেরা ও সিসিটিভি, উড়বে ড্রোন’

প্রকাশিত : ১৯ অক্টোবর, ২০২৫, ০৭:৫২ বিকাল
আপডেট : ২৪ অক্টোবর, ২০২৫, ০৫:০০ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ড, গ্রাউন্ড হ্যান্ডলার নাকি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের দায়?

রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে বিপুল অঙ্কের পণ্য পুড়ে গেছে। ধ্বংস হয়েছে গার্মেন্টস রপ্তানির চালান, ওষুধশিল্পের কাঁচামাল ও আন্তর্জাতিক কুরিয়ার সার্ভিসের শত শত শিপমেন্ট। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখানে কেবল আর্থিক ক্ষতি নয়, বরং দেশের শিল্প ও সরবরাহব্যবস্থার ওপরও বড় আঘাত এসেছে।

উড়োজাহাজ থেকে কার্গো নামানো থেকে শুরু করে আমদানিকারকের হাতে পণ্য বুঝিয়ে দেওয়া পর্যন্ত দায়িত্বে থাকে গ্রাউন্ড হ্যান্ডলার—বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস (বিমান)। পণ্য আনলোড, স্ক্যানিং, ওজন, হ্যান্ডলিং, স্টোরেজ, বিলিং ও ডকুমেন্টেশন—সবই তাদের কাজ। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পণ্য না তুললে প্রতিদিনের জন্য আলাদা ফিও নেয় তারা।

অন্যদিকে, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) বিমানবন্দরের মালিক ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে অবকাঠামো, নিরাপত্তা ও কার্গো টার্মিনাল ব্যবস্থাপনা তদারকি করে। এ জন্য বিমানবন্দর ব্যবহার, নিরাপত্তা যাচাই, স্ক্যানিং ও পার্কিং চার্জ নেয় বেবিচক।

বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাফা) তথ্য অনুযায়ী, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রতি কেজি পণ্য আমদানিতে শূন্য দশমিক ২৯ মার্কিন ডলার চার্জ আদায় করা হয়। এর মধ্যে শূন্য দশমিক ১০ ডলার নেয় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস, অন্য শূন্য দশমিক ১৯ ডলার বেবিচক।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সহসভাপতি খায়রুল আলম ভূঁইয়া মিঠু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখানে মালামালের দায়িত্ব তো গ্রাউন্ড হ্যান্ডলার বিমানের। তাদের ওপরে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) রয়েছে। তাদেরই এটা নিরাপত্তা দিয়ে রাখার কথা। এ জন্য তারা পণ্যপ্রতি আমাদের থেকে চার্জ নেয়। এখন ব্যবসায়ীদের শত শত কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ কে দেবে?’

রপ্তানিকারকেরা দীর্ঘদিন ধরে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে লজিস্টিক অদক্ষতা ও অপর্যাপ্ত অবকাঠামো নিয়ে অভিযোগ করে আসছেন। সীমিত স্থান ও অপর্যাপ্ত গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং ব্যবস্থার কারণে বৃহৎ মালবাহী বিমানের পরিচালনাও সীমিত। এত সব সীমাবদ্ধতার পরও শাহজালাল বিমানবন্দরে পণ্য পরিবহন খরচ অন্য দেশের তুলনায় বেশি।

বাফা সূত্রে জানা যায়, দিল্লি বিমানবন্দরে প্রতি কেজি পণ্যের জন্য চার্জ মাত্র শূন্য দশমিক শূন্য পাঁচ মার্কিন ডলার, কিন্তু শাহজালালে তা ছয় গুণ বেশি—শূন্য দশমিক ২৯ ডলার। এ ছাড়া ঢাকায় জেট জ্বালানির দামও প্রতিবেশী দেশের তুলনায় ৩০ শতাংশ বেশি, যা সামগ্রিক পরিবহন ব্যয় বাড়াচ্ছে। কিন্তু ব্যবসায়ীদের প্রশ্ন—এত চার্জ নেওয়া সত্ত্বেও নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনায় গাফিলতির দায় নেবে কে?

সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ইমরান হোসাইন বলেন, ‘আমার প্রতিটা মালের জন্য গ্রাউন্ড হ্যান্ডলার বিমান আর শাহজালাল বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ পৃথক চার্জ নেয়, যা প্রতিবেশী দেশের তুলনায় অনেক বেশি। এরপরও পর্যাপ্ত সুবিধা নেই।’

বর্তমানে বছরে প্রায় ১ লাখ ৭৫ হাজার টন পণ্য শাহজালাল বিমানবন্দর দিয়ে পরিবহন করা হয়। গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের পুরো দায়িত্ব বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস পালন করলেও নিজস্ব ফ্লাইটে পণ্য পরিবহন করে মাত্র প্রায় ১৭ শতাংশ। এ ছাড়া এমিরেটস এয়ারলাইনস, ক্যাথে প্যাসিফিক, কাতার এয়ারওয়েজ, টার্কিশ এয়ারলাইনস ও ইথিওপিয়ান এয়ারলাইনস ঢাকা থেকে কার্গো পরিবহন পরিচালনা করে।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ৪৫টি আন্তর্জাতিক কুরিয়ার সার্ভিস অপারেশন চালায়। তাদের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে হাজার কোটি টাকার মালামাল আসে। গতকাল শনিবারের আগুনে যার প্রায় সব পুড়ে গেছে।

গতকাল বেলা সোয়া ২টার দিকে আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সে আগুনের সূত্রপাত হয়। গত শুক্রবার ও গতকাল ছুটির দিনে মালামাল খালাস বন্ধ থাকায় গুদামে বিপুল রাসায়নিক, গার্মেন্টস পণ্য ও ওষুধশিল্পের কাঁচামাল মজুত ছিল—যার সব পুড়ে গেছে।

একটি আন্তর্জাতিক কুরিয়ার সার্ভিসের এক কর্মী জানান, বেলা ২টা ১৫ মিনিটে আগুন দেখা যায়। কিছুক্ষণ পর ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি আসে, কিন্তু ৮ নম্বর গেট দিয়ে প্রবেশ করতে না পারায় প্রায় ১৫–২৫ মিনিট বাইরে অপেক্ষা করতে হয়।

আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে ফায়ার সার্ভিসের ৩৭টি ইউনিট। নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, সিভিল অ্যাভিয়েশন, দুই প্লাটুন বিজিবিসহ পুলিশ-আনসার সদস্যরাও আগুন নেভানোর কাজে অংশ নেন। সূত্র: আজকের পত্রিকা

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়