আপনার রান্নাঘরের কাবার্ডেই রয়েছে এমন একটি সাধারণ ও সাশ্রয়ী খাবার প্রতিদিন মাত্র ১-২ চামচ খেলেই শরীর সুস্থ রাখা সম্ভব—এমনটাই দাবি করেছেন বিজ্ঞানী ও অধ্যাপক ড. ড্যান গাবলার।
অর্গানিক কেমিস্ট্রিতে পিএইচডি করা ড. গাবলার গবেষণা করেন কীভাবে প্রাকৃতিক উপাদানসমৃদ্ধ খাবার ও উদ্ভিদের অণু আমাদের স্বাস্থ্য উন্নয়নে ভূমিকা রাখে। টিকটকে তার জনপ্রিয় সিরিজ ‘Yes or No’-তে তিনি সহজ ভাষায় খাবারের স্বাস্থ্য উপকারিতা ব্যাখ্যা করেন এবং প্রচলিত ভুল ধারণা ভেঙে দেন।
স্বাস্থ্য রক্ষায় পিনাট বাটারের জবাব—'হ্যাঁ' ড. গাবলারের মতে—
* মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য বাড়ায়? হ্যাঁ
* ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়? হ্যাঁ
* ভিটামিন শোষণে সহায়ক? হ্যাঁ
* বার্ধক্যে স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি হ্রাস করে? হ্যাঁ
* হৃদরোগ, যকৃত, কিডনি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়? হ্যাঁ
* টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়? হ্যাঁ
* কার্বোহাইড্রেট যেমন সাদা পাউরুটির সঙ্গে খেলে ব্লাড সুগার স্পাইক কমায়? হ্যাঁ
তাঁর ভাষায়, “এই উপকার পেতে দামি ব্র্যান্ড কিনতে হবে না, যেকোনো সাধারণ পিনাট বাটারই যথেষ্ট।” তিনি প্রতিদিন ১-২ চামচ খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
কীভাবে পিনাট বাটার হার্ট ভালো রাখে?
পিনাট বাটারে থাকে মনোস্যাচুরেটেড ও পলিস্যাচুরেটেড ফ্যাট—যা হৃদয়ের জন্য উপকারী এবং এতে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল নেই। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত বাদাম ও পিনাট বাটার খাওয়ার ফলে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে এবং কোলেস্টেরলের মাত্রাও উন্নত হয়।
নিবন্ধিত ডায়েটিশিয়ান ওয়ান না চুন জানান, “পিনাট বাটারে থাকা ভালো চর্বি এলডিএল (ক্ষতিকর) কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইড কমায়।”
ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সহায়ক
হার্ভার্ডের পুষ্টিবিদ ওয়াল্টার উইলেট বলেন, “নিয়মিত বাদাম ও পিনাট বাটার খেলে টাইপ-২ ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস পায়।”
এতে থাকা ফ্যাট ও প্রোটিন ধীরে হজম হয়, ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ স্থিতিশীল থাকে। গবেষণায় প্রমাণিত, উচ্চ গ্লাইসেমিক খাবারের সঙ্গে ২ চামচ পিনাট বাটার খেলে রক্তে শর্করার বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে থাকে।
ক্যানসারের ঝুঁকি কীভাবে কমায়?
পিনাট বাটারে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট—যেমন ভিটামিন ই, রেসভেরাট্রল, কুমারিক অ্যাসিড ইত্যাদি। এগুলো শরীরের কোষকে ক্ষতিকর ফ্রি রেডিকেল থেকে রক্ষা করে, যা ক্যানসারসহ বিভিন্ন জটিল রোগের অন্যতম কারণ।
অতিরিক্ত ক্যালোরি সত্ত্বেও ওজন কমাতে সাহায্য? হ্যাঁ।
কারণ এতে থাকা প্রোটিন, ফ্যাট ও ফাইবার দীর্ঘক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখে—ফলে খিদে কমে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
রোগ প্রতিরোধে ও পাচনে সহায়ক পিনাট বাটারে থাকা ফাইবার হজমে সহায়তা করে, রক্তে শর্করা ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। অথচ বিশ্বের ৯০% প্রাপ্তবয়স্ক প্রয়োজনীয় পরিমাণ ফাইবার গ্রহণ করেন না।
কোন পিনাট বাটার কিনবেন?
স্বাস্থ্য উপকার পেতে কোনো ব্যয়বহুল ব্র্যান্ড লাগবে না। তবে কেনার সময় লেবেল দেখে নিন—সবচেয়ে ভালো পিনাট বাটার শুধু চিনাবাদাম দিয়ে তৈরি। অনেক ব্র্যান্ড অতিরিক্ত চিনি, তেল ও প্রিজারভেটিভ যোগ করে, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।