ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কলেজ প্রশাসন। রবিবার (২২ জুন) দুপুরের মধ্যে সব শিক্ষার্থীকে হোস্টেল ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাংলা ট্রিবিউনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. কামরুল আলম। শনিবার (২১ জুন) এক নোটিশে শিক্ষার্থীদের এই নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে হাসপাতালের কার্যক্রম যথারীতি চলবে বলে জানা গেছে।
নোটিশে বলা হয়, শনিবার ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী— কলেজের চলমান অবস্থা নিরসনের লক্ষ্যে আগামীকাল রবিবার থেকে এমবিবিএস শিক্ষার্থীদের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হলো। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পেশাগত এমবিবিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থী ও বিদেশি শিক্ষার্থী এই ঘোষণার আওতামুক্ত থাকবেন।
প্রসঙ্গত, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের অ্যাকাডেমিক ভবন এবং আবাসিক হল ঝুঁকিপূর্ণ মনে করায়, তা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা। বিকল্প আবাসন এবং ছাত্রাবাস ও অ্যাকাডেমিক ভবন সংস্কারের দাবিতে গত ২৮ মে থেকে সব ধরনের ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে আসা নবীন ব্যাচ ‘কে-৮২’ তাদের সিনিয়র ব্যাচদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে অরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানও বর্জন করে।
শিক্ষার্থীরা জানান, ফজলে রাব্বী হলের মূল ভবনের তৃতীয় তলায় ওয়াশরুম ও টয়লেটের সিলিং থেকে ঘন ঘন পলেস্তারা খসে পড়ায় বিপজ্জনক পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। বেশিরভাগ জানালায় কাচ ভেঙে গেছে এবং এর আগের একটি ঘটনায়, ঝড়ের সময় পুরো জানালার গ্রিল পায়ে ভেঙে পড়লে একজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছিলেন। তৃতীয় তলার বেশ কয়েকটি কক্ষ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। গত ৬ জুন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থীরা তাদের আবাসিক হলগুলোতে জীবনের ঝুঁকির কথা জানিয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেন।
বিবৃতিতে তারা বলেন, ফজলে রাব্বি ছাত্রাবাসসহ গার্লস হোস্টেল ও অ্যাকাডেমিক ভবনসহ আরও কয়েকটি ভবন এখন মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। গণপূর্ত বিভাগ সাত মাস আগে ফজলে রাব্বি হলকে বসবাসের অনুপযোগী এবং পরিত্যক্ত ঘোষণা করা সত্ত্বেও প্রত্যেক শিক্ষার্থী এখনও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এখানে বসবাস করছেন। পরিস্থিতি এতটাই নাজুক যে, রানা প্লাজা বা জগন্নাথ হলের ট্র্যাজেডির পুনরাবৃত্তি হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না— যা হবে দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার জন্য একটি লজ্জাজনক ঘটনা। উৎস: বাংলাট্রিবিউন।