শিরোনাম
◈ তেল আমদানি এখনো পুরনো দামে, যুদ্ধ দীর্ঘ হলে পরিস্থিতি পুনর্বিবেচনা হবে: সালেহউদ্দিন আহমেদ ◈ ট্রাম্পের আকস্মিক জি-সেভেন সম্মেলন ত্যাগ: ইরান-ইসরায়েল নয়, আরও বড় কিছু ঘটছে? ◈ জুলাই মাসের মধ্যে `জাতীয় সনদ' তৈরি করতে পারবো: আলী রীয়াজ ◈ ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ বয়কট করল জামায়াতে ইসলামী ◈ নেতানিয়াহুর ঔদ্ধত্যে ইসরায়েলের সামরিক অহংকার চূর্ণ, ইতিহাসে ফিরছেন আহমদ চালাবির ছায়া:হামিদ মীর ◈ ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে জি-৭ নেতাদের বিবৃতি: ইসরায়েলের পক্ষে অবস্থান, ইরানকে ‘সন্ত্রাসের উৎস’ আখ্যা ◈ ইরানে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানাল ২১ মুসলিম দেশ ◈ ভয়াবহ যুদ্ধের ই‌ঙ্গিত দি‌য়ে  ইরা‌নের রাজধানী তেহরানের বাসিন্দাদের শহর ছাড়তে বললেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ◈ ইসরায়েল ইরানে পরমাণু বোমা ফেললেই, পাকিস্তান পরমাণু হামলা চালাবে নেতানিয়াহুর দেশে, এবার কি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ? ◈ দেখা হলে সাকিবকে  জিজ্ঞাসা করবো কেন আমার বিরু‌দ্ধে ভুল তথ্য দি‌য়ে‌ছি‌লেন : তা‌মিম ইকবাল

প্রকাশিত : ০৮ নভেম্বর, ২০২৪, ১২:২৩ দুপুর
আপডেট : ১০ মে, ২০২৫, ০৭:০০ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ধলেশ্বরী-বংশীর দেশে

ডেস্ক রিপোর্ট : ঢাকার উপকণ্ঠে ধামরাই। শহরঘেঁষা হলেও এখানে আছে নয়নাভিরাম প্রকৃতি; বিশেষ করে ধামরাইয়ের কাজিয়ালকুণ্ড, আড়ালিয়া, মাখুলিয়া, কানারচর, মাধবপট্টিসহ আরও অনেক গ্রাম ছবির মতো সুন্দর।

এসব গ্রামের কয়েকটিতে রয়েছে প্রচুর হিজল ও করচগাছ। এক অদ্ভুত প্রশান্তি দেবে তারা। বংশী ও ধলেশ্বরী নদীঘেরা গ্রামের নিচু ফসলি মাঠ থেকে বর্ষার পানি নেমে গেছে। উঁচু গ্রামগুলো এখন দ্বীপ নয়, টিলার মতো দেখতে। নৌকার বদলে সেখানে এখন হাঁটাপথ। বর্ষার মাছশিকারিরা এখন কৃষক। থইথই পানি না থাকলেও নিচু জমি আর খালে যে পানি আছে, সেখানে ভেসে বেড়ায় পাতিহাঁসের দল। মাঠগুলো ভরে উঠেছে শীতের সবজিতে। কোথাও কোথাও চাষ করা হয়েছে সরিষা। মধ্য ডিসেম্বরে তার হলুদ ফুলে ভরে উঠবে মাঠ, তারই প্রস্তুতি নিচ্ছে সবুজ চারাগুলো।

এসব গ্রাম এখনো বেশ নীরব। পাকা রাস্তায় তীব্র বেগে ছুটে যায় গাড়ি, কিন্তু শহরের মতো উচ্চ শব্দে হর্ন বাজায় না। ফলে নিস্তব্ধতা ঘিরে ধরে। দুপুরে মনে হয় মাঠগুলো ঝিম মেরে রোদ পোহায়। বিষণ্ন দুপুরে ঘুঘুর ডাক যে কাউকে উদাস করবে।

ছবির মতো সুন্দর গ্রামের সিঁথি। তার মেঠো পথে সারি সারি তালগাছের ছায়ায় হেঁটে ও ব্যাটারিচালিত রিকশায় চড়ে আড়ালিয়া বাজারে উপস্থিত হই। সেখানকার টংদোকানে গরম-গরম আলুপুরি, শিঙাড়া আর গরুর দুধের মালাই চায়ের স্বাদ জিবে লেগে থাকবে দীর্ঘদিন। খেয়েদেয়ে চাঙা হয়ে বাজারের পাশের চৌটাইল গ্রামের পিঠ ঘেঁষে বয়ে যাওয়া ধলেশ্বরীর বুকে ডুবসাঁতারে মাতামাতি করে শৈশবের স্মৃতি হাতড়ানোর সুযোগ পাওয়া যাবে। বিনা টিকিটে ইচ্ছেমতো গোসল করে চলে যেতে পারেন কাজিয়ালকুণ্ড। এখানে সড়কের দুই পাশের গাছের ছায়ায় পেতে রাখা বেঞ্চে বেলা পার করে দেওয়া যায় অনায়াসে। গাছের ফাঁক গলে হুহু করে আসা আসন্ন শীতের বাতাস দুপুরের গরমেও স্বস্তি দেবে।

ধানের নাড়ার স্তূপ ও পাখির ডাকে এখানে অপার্থিব পরিবেশ। ঘুরতে ঘুরতে সকাল গড়িয়ে দুপুর। পেটে নিশ্চয় লেগে গেছে টান। কাজিয়ালকুণ্ডের ঢুলিভিটা সড়কে রয়েছে নানান ক্যাটাগরির রেস্টুরেন্ট। খাবারের মানের চেয়ে দাম কিছুটা বেশি মনে হতে পারে। এর চেয়ে ভালো নিজেরা সওদাপাতি করে গ্রামের ভেতর কোনো টংদোকানিকে দলে ভিড়িয়ে রান্না করিয়ে নেওয়া।

পেট ঠান্ডা হলে হাঁটতে হাঁটতে চলে যেতে পারেন মাখুলিয়া। ধান শুকানোর মনোরম মুহূর্ত, গ্রামের বউঝিদের গোলায় ধান তোলার ব্যস্ততা যান্ত্রিকতা থেকে খানিক মুক্তি দেবে। সেখান থেকে যেতে পারেন কানারচরের দিকে। সেখানে আছে বিস্তৃত ফসলি জমি। মাটির গভীর থেকে ফসলের জন্য তোলা শ্যালো মেশিনের নলের সামনে বসে আরও একবার গোসল করতে পারেন। না হলে তাকিয়ে থাকুন দিগন্তের দিকে। যত দূর চোখ যায় শুধু কাঁচা-পাকা ধানখেত দেখতে পাবেন। আশ্চর্য হয়ে ভাবতে শুরু করবেন, এমন সুন্দর গ্রামের নাম কে রেখেছে কানারচর!

সূর্য যখন পশ্চিমে হেলে পড়বে, ঠিক তখনই মধ্য ফোর্ডনগরের দিকে ছুটে যান। বটতলা ছাড়িয়ে, বাঁশের সেতু মাড়িয়ে, ইঞ্জিনবোটে চড়ে বংশী নদীতে ভেসে বেড়ান কিছুক্ষণ। মাঝির সঙ্গে কথা হবে, ট্রলার যাবে দক্ষিণ দিকে। সঙ্গে নিন ছোলা ভুনা, পেঁয়াজি আর হাতে ভাজা মুড়ি। মাখা মুড়ি শেষ হওয়ার আগেই হয়তো আবিষ্কার করবেন, জীবনটা এখানে অনেক সুন্দর। ভাসতে ভাসতে ভরসন্ধ্যায় নেমে পড়ুন সাভারের নামাবাজার গুদারা ঘাটে।

যাবেন যেভাবে

ঢাকার যেকোনো প্রান্ত থেকে নিজস্ব বা ভাড়া করা গাড়ি, মোটরসাইকেল বা বাইসাইকেল কিংবা গণপরিবহনে সাভারের থানা রোড হয়ে নামাবাজার ব্রিজের ওপর দিয়ে দিনে দিনে ঘুরে আসা যায়। উপজেলা ধামরাই হলেও সাভারের থানা রোড বা বাজার রোড দিয়ে যাতায়াত সহজ।

আরও যা দেখা যাবে

খুব ভোরে পৌঁছাতে পারলে আড়ালিয়ার পাশে মানিকগঞ্জ জেলার সিঙ্গাইরের নয়নাভিরাম খড়ার চর, কাংশা ও ফড়িঙ্গা গ্রাম ঘুরে আসা যাবে।

টিপস
গল্পের মতো ঘুরতে চাইলে সঙ্গে রাখুন কয়েক সেট পরিধেয় জামাকাপড়। ভোজনরসিক হলে সকালের নাশতায় নামাবাজারের থাপড়ানো রুটি ও দই-মিষ্টি তালিকায় রাখতে পারেন।

সুত্র : আজকের পত্রিকা

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়