রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপ-উপাচার্য, ডেপুটি রেজিস্ট্রারসহ কয়েকজন শিক্ষককে ‘হেনস্তা’ করার ঘটনায় জড়িতদের বিচার এবং শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধার (পোষ্য কোটা) দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের ‘কমপ্লিট’ শাটডাউন চলছে। সোমবার সকাল থেকে এ শাটডাউন শুরু হয়।
এর আগে গতকাল রোববার বিকাল সাড়ে ৫টায় কমপ্লিট শাটডাউনের ঘোষণা দেন রাবি অফিসার্স সমিতির সভাপতি মোক্তার হোসেন।
তিনি বলেন, ‘‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য এবং কর্মকর্তাদের হেনস্তার ঘটনায় জড়িতদের দৃশ্যমান বিচার কার্যকর করতে হবে। আমাদের ‘প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা’র দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় কমপ্লিট শাটডাউন থাকবে। চিকিৎসা, পানি ও বিদ্যুৎসহ জরুরি প্রয়োজন এই কর্মসূচির আওতার বাইরে থাকবে। তবে ক্লাস-পরীক্ষা এই কর্মসূচির আওতায় থাকবে।’’
রাকসুর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এই কর্মসূচির কারণে রাকসু নির্বাচন পিছিয়ে গেলে সেই ব্যর্থতা প্রশাসনের, আমদের না।’
এর আগে, শনিবার থেকে শিক্ষার্থীরা পোষ্য কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদ এবং তা বাতিলের দাবি জানিয়ে আন্দোলন শুরু করেন। ওই দিন বেলা তিনটার দিকে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন প্রশাসনিক ভবন থেকে বের হলে তার গাড়ি আটকে ‘প্রতীকী ভিক্ষাস্বরূপ’ টাকা-পয়সা গাড়ির ওপরে দিতে থাকেন আন্দোলনকারীরা। সেখানে শিক্ষক-কর্মকর্তা ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে তুমুল ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে।
এক পর্যায়ে গাড়ির চাবি কেড়ে নেন বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা। ফলে তিনি পায়ে হেঁটে বাসভবনের দিকে রওনা দিলে তার বাসভবনে ঢুকতে না দিয়ে গেটে তালা লাগিয়ে দেয়া হয়। এরপর তিনি প্রক্টর মাহবুবর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে জুবেরী ভবনের দিকে যান। শিক্ষার্থীরাও তার পিছু পিছু হাঁটতে শুরু করেন।
কয়েক ঘণ্টা জুবেরী ভবনের দ্বিতীয় তলায় অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন উপ-উপাচার্য, প্রক্টর, রেজিস্ট্রারসহ অনেকে। অবশেষে রাত সোয়া ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা জুবেরী ভবনের সামনে থেকে তাদের অবস্থান তুলে নেন। এতে সহ-উপাচার্য মাঈন উদ্দীনসহ কয়েকজন শিক্ষক প্রায় সাত ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর মুক্তি পান। গতকাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সিন্ডিকেট মিটিংয়ে পোষ্য কোটা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয়। সেই সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে।