শিরোনাম
◈ ২০২৫-২৬ অর্থবছর: বাড়তে পারে সেবা মাশুল, সুদ, টোল ও ইজারামূল্য ◈ কেন দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন, ‘স্ট্রেইট কাট’ জানালেন পিনাকী ভট্টাচার্য (ভিডিও) ◈ ভয়াবহ নতুন তথ্য বাংলাদেশসহ ৮ দেশে অ্যান্টিবায়োটিক নিয়ে ◈ ১৪ হাজারের বেশি হজযাত্রীর ভিসা এখনো হয়নি ◈ পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জরুরি বৈঠক, ভারতের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি ◈ চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে বৈঠকে রোহিঙ্গাদের জন্য জামায়াতের রাষ্ট্র গঠনের প্রস্তাবে যা বলল মিয়ানমার ◈ বিমানের বিশেষ সুবিধা ফিরিয়ে দিলেন খালেদা জিয়া ◈ সরকারের হস্তক্ষেপ না থাকায় গণমাধ্যম সূচকে উন্নতি : মাহফুজ আলম ◈ বাংলাদেশ সফর কর‌বে ভারত, বাতিলের শঙ্কা উড়িয়ে দিল বিসিবি ◈ ২ কৃষককে ফেরত পাওয়ায় ২ ভারতীয়কে ছেড়ে দিল বিজিবি (ভিডিও)

প্রকাশিত : ০১ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৬:১০ বিকাল
আপডেট : ১৯ এপ্রিল, ২০২৫, ০৮:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

সংবিধান নিয়ে রাজনীতিবিদদের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতাদের টানাপোড়েন

মহসিন কবির: সংবিধান নিয়ে রাজনীতিবিদদের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতাদের টানাপোড়েন সম্পর্ক চলছে। ছাত্র নেতারা বলছেন সংবিধান বাতিল করতে হবে। রাজনীতিবিদরা বলছেন ’৭২ সালের সংবিধান বাতিল নয়। 

সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বিএনপিসহ মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো অবস্থান না জানালেও এ বিষয়ে দলগুলোর কেউ কেউ প্রশ্ন তুলে বলেছেন, জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করার আগে রাজনৈতিক দল ও অংশীজনের সঙ্গে আলোচনার প্রয়োজন ছিল। তা না করে হঠাৎ কোনো ঘোষণা বিভাজন তৈরির আশঙ্কা থাকে। 

’৭২ সালের সংবিধানের সংস্কার অথবা বাতিলের দাবি এবার জোরেশোরে তুলছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে ৩১ ডিসেম্বর বিকেলে ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ দেওয়ার কথা জানিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের নেতারা বলেছেন, ঘোষণাপত্রে মুজিববাদী সংবিধানের কবর রচিত হবে।

প্রকাশের আগে ঘোষণাপত্রের খসড়া ফ্যাসিবাদবিরোধী সব রাজনৈতিক দল, ছাত্রসংগঠনসহ সব অংশীজনের কাছে পাঠিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সেই খসড়ায় সংবিধানের সংস্কার অথবা বাতিলের কথা বলা হয়েছে। অবশ্য দলগুলোর মতামতের প্রেক্ষাপটে ঘোষণাপত্রের কোনো কোনো বিষয় পরিবর্তনও হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

ঘোষণাপত্র প্রকাশকে সামনে রেখে রাজধানীর বাংলামোটরের রূপায়ণ টাওয়ারে রোববার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে মুজিববাদী ’৭২-এর সংবিধানের কবর রচনার কথা বলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদ।

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, গত ৫ আগস্ট জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র না হওয়ার কারণে বিদেশে বসে ষড়যন্ত্র করেই যাচ্ছে ফ্যাসিস্টরা। এটি গণ-অভ্যুত্থানের বৈধতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। গণ-অভ্যুত্থানকে ঘিরে মানুষের যে আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি হয়েছে এবং ’৭২-এর সংবিধান মানুষ যে প্রত্যাখ্যান করেছে, তার একটি দালিলিক প্রমাণ হিসেবে ৩১ ডিসেম্বর জাতির সামনে মুজিববাদী ’৭২-এর সংবিধানের কবর রচিত হবে। নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে মানুষের আকাঙ্ক্ষাকে সামনে রেখে ৩১ ডিসেম্বর সবাই শহীদ মিনারে জড়ো হবে।

বিপ্লবের ঘোষণাপত্র আরও আগেই দেওয়া প্রয়োজন ছিল বলে জানান সারজিস আলম। তবে বিভিন্ন সেক্টর থেকে সহযোগিতা না পাওয়ায় তা সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, ঘোষণাপত্র বাংলাদেশের একটি দলিল হয়ে থাকবে। নতুন যাঁরা দেশ পরিচালনায় আসবেন তাঁদের জন্য এ ঘোষণাপত্র একটি নির্দেশক হিসেবে থাকবে। এটি বাংলাদেশের সব মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাবে।

আবদুল হান্নান মাসউদ বলেন, ‘নাৎসিবাদী সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগকে অপ্রাসঙ্গিক ঘোষণা করে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে গণমানুষের আকাঙ্ক্ষা ঘোষণা করা হবে। এরই মধ্যে ঘোষণাপত্রের খসড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে পাঠানো হয়েছে। শহীদ পরিবারের লোকজন ছাড়াও সব রাজনৈতিক দল ও গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ ৩১ ডিসেম্বর শহীদ মিনারে জড়ো হন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, একাত্তর সালে মুক্তিযুদ্ধে ফ্রন্ট লাইনে অংশগ্রহণ করেছি। আমার সামনে বহু সহকর্মী ও বন্ধুবান্ধব মারা গেছেন। শহীদের রক্তের ওপর দিয়ে লেখা যে সংবিধান, সেই সংবিধানকে যখন কবর দেওয়ার কথা বলা হয়, তখন কিন্তু আমাদের কষ্ট লাগে। তিনি বলেন, আমি বাহাত্তর সালের সংবিধানের সমর্থক নই। আমি একাত্তর সালের সংবিধানের মুক্তিযুদ্ধের রক্তের সমর্থক। মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল বলেই এই সংবিধান। ওই সংবিধানে যদি খারাপ কিছু থাকে, নিশ্চয়ই সেটা বাতিলযোগ্য। যদি নতুন কোনো সংবিধান লিখতে হয়, তা-ও তো লিখতে হবে, ‘আগের অমুক সালের সংবিধান বাতিল করে এই সংবিধান জারি করা হলো।’ সুতরাং এই সংবিধানকে সংশোধন করা যাবে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘অনুরোধ করব, বিষয়গুলো বোঝার চেষ্টা করবেন। ভুল বুঝবেন না। কবর দিয়ে ফেলব, মেরে ফেলব, কেটে ফেলব—এ সমস্ত কথা ভালো কথা নয়। এ ধরনের কথা ফ্যাসিবাদের মুখ থেকে আসে।’

গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম শীর্ষ নেতা ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক মনে করেন, যখন বৃহত্তর ঐক্যের প্রয়োজন, তখন বাহাত্তরের সংবিধান বাতিল করাসহ বিভিন্ন বক্তব্য এবং এ ধরনের উদ্যোগ অনাস্থা-বিভেদ বাড়াবে।

আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সদস্য সচিব মুজিবুর রহমান মঞ্জু বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের এই উদ্যোগকে নৈতিকভাবে সমর্থন জানিয়ে বলেন, আমরা মনে করি, জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র আরও আগেই দেওয়া উচিত ছিল এবং তা সবাই মিলে। তারা (ছাত্ররা) যেন সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করেই এটি করে। যদিও শেষ সময়ে উদ্যোগ নিয়েছে তবুও চূড়ান্ত ডকুমেন্টেশন সবাইকে নিয়ে করা উচিত।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়