বিভিন্ন অভিযোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. মুসতাক আহমেদ সাময়িক অব্যাহতি পেয়েছেন। অব্যাহতি পাওয়ার আগে তিনি বিভাগের স্নাতকোত্তর ২০২২ শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ছিলেন। পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৯ মাস পার হলেও ওই পরীক্ষার নম্বর পত্র দিতে চাচ্ছিলেন না তিনি। অবশেষে তার লকার ভেঙ্গে ওইসব নম্বরপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গঠিত এক বিশেষ কমিটির মাধ্যমে ওই নম্বরপত্র উদ্ধার করা হয়।
এর আগে, গতকাল বুধবার সকালে ওই বর্ষের শিক্ষার্থীরা দ্রুত ফল প্রকাশের দাবিতে বিভাগের সকল কক্ষে তালা দিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। আজ বৃহস্পতিবার বিশেষ কমিটির পরিচালনায় নম্বরপত্র উদ্ধার শেষে শিক্ষার্থীরা তালা খুলে দেয়।
ভুক্তভোগী ওই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও বর্তমান সভাপতির অভিযোগ, অব্যাহতি পাওয়া শিক্ষক অধ্যাপক ড. মুসতাক আহমেদ দীর্ঘদিন ধরে নম্বরপত্র দেওয়া নিয়ে অসহযোগিতা করছিলেন। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে বেশ কয়েক দফায় চিঠি দেওয়া হলেও নম্বরপত্র না দিয়ে তিনি দাবি করেন, তার কাছে থাকা সব নম্বরপত্র তিনি দিয়ে দিয়েছেন। তার কাছে আর কোনো নম্বরপত্র নেই।
গতকাল বুধবার শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচির পরিপ্রেক্ষিতে বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মোজাম্মেল হোসেন বকুলসহ কয়েকজন শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে জরুরি আলোচনায় বসেন। পরে উপাচার্যের নেতৃত্বে ওই শিক্ষাবর্ষের পরীক্ষাসংক্রান্ত নথিপত্র উদ্ধারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমানকে আহ্বায়ক করে ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত অধ্যাপক মুসতাক আহমেদের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে এর আগে নম্বরপত্র আটকে থাকা বিষয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘আমার কাছে কোনো নম্বরপত্র নেই, যা ছিল সব সরবরাহ করেছি। ফলাফল প্রকাশ করতে না পারা বর্তমান সভাপতির ব্যর্থতা। তিনি (বর্তমান সভাপতি) ব্যর্থতা ঢাকতে তালবাহানা করছেন।’
এ বিষয়ে বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোজাম্মেল হোসেন বলেন, ‘উপাচার্যের তৈরি করে দেওয়া কমিটির সদস্যদের নেতৃত্বে ও সকলের উপস্থিতিতে আজ সকালে ওই শিক্ষকের লকার ভাঙ্গা হয়েছে। সেখান থেকে দীর্ঘদিন ধরে মাস্টার্স ২০২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের আটকে থাকা নম্বরপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। তবে সেখানে শুধু থিসিস গ্রুপের ৩ শিক্ষার্থীর মৌখিক নম্বরপত্র পাওয়া যায়নি। পরীক্ষা সংক্রান্ত বাকি সকল নথিপত্রই পাওয়া গেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই আশা করি ওই বর্ষের রেজাল্ট দিতে পারব।’
আপনার মতামত লিখুন :