শিরোনাম

প্রকাশিত : ০৭ মে, ২০২৫, ১২:৪১ রাত
আপডেট : ০৭ মে, ২০২৫, ০২:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বেনাপোল-বাহাদুরপুর সড়কে দূর্ভোগ পথচারীদের

আইরিন হক, বেনাপোল (যশোর) : যশোরের বেনাপোল পৌরসভার বেনাপোল- বাহাদুরপুর সড়কের দেড় কিলোমিটার সড়কটি (পৌরসভার অন্তর্ভূক্ত) মেরামতের জন্য বছর খানেক আগে খুড়াখুড়ি করে রাখলেও মেরামত না হওয়ায় জনগনের চলাচলের ভোগান্তির শেষ নেই। এই দেড় কিলোমিটার সড়ক মেরামতের জন্য ৬ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়। বরাদ্দকৃত টাকার কিয়দংশ ব্যয় করে খুড়াখুড়ি করে রুলার দিয়ে সমান করে দায় সেরেছে সংশ্লিষ্টরা।

তবে পৌরসভা বলছে, রিজিলিয়েন্ট আরবান এন্ড টেরিটরিয়াল ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পটি (আরইউটিডিপি) প্রায় ২৪০ কোটি টাকার চুক্তি হবে পৌর সভার সাথে। এ চুক্তি হওয়ার পর সকল প্রক্রিয়াধীন সড়কসহ অন্যান্য কাজ দ্রুত সংস্কার করা হবে।

জানা গেছে, বেনাপোল বাজারের সোনালী ব্যাংকের সামনে দিয়ে চলে যাওয়া বাহাদুরপুর সড়কটির পাশে রয়েছে বেনাপোল প্রথম শ্রেণীর পৌরসভার কার্যালয়, মহিলা আলীয়া মাদ্রাসা, প্রাথমিক স্কুল, কিন্ডার গার্ডেন স্কুল, বেনাপোল ডিগ্রী কলেজসহ অসংখ্য বাড়িঘর। এই সড়কে প্রায় ৫০ হাজার লোক প্রতিদিন যাতায়াত করে থাকে। ছোট বড় মিলিয়ে কয়েকশ‘ যানবাহন চলাচল করে। কাঁদাপানি ও ধুলায় স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীসহ পথচারীদের গায়ের পোষাক নস্ট হয়ে যাচ্ছে। স্কুল, মাদ্রাসা ও কলেজে উপস্থিতি কমে গেছে।

সড়কটির দুই পাশের বাসিন্দাদের বাড়িঘর ধুলায় ঢেকে যাচ্ছে। রং করা বাড়িগুলো দেখলে মনে হয় পরিত্যক্ত কোন বাড়ি। সড়কটি চলাচলের জন্য অনুপযোগী থাকায় ২০২৪ সালের ৪ আগষ্ট বেনাপোল পৌর সভার বাজেট পাশ হয়। কিন্তুু ৫ আগষ্ট হাসিনা সরকারের পতন হলে জনপ্রতিনিধিও বাতিল হয়ে যায়। যার ফলে দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও সড়কটি মেরামত করা হয়নি। এতে ছোট খাট পরিবহনসহ পথচারিদের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। বেনাপোল পৌরসভার এ সড়কটি মানুষ ও যানবাহন চলাচলের জন্য ৬ লাখ টাকা ব্যয় করে ওই খানা-গর্ত সমান করা হয়।

বেনাপোল পৌরসভার প্রকৌশলী মোশাররফ হোসেন জানান, নতুন করে বরাদ্দ না হলে ওই সড়ক মেরামত করা সম্ভব না। এর পর বাজেট না থাকায় সড়কটি মেরামত সম্ভব হচ্ছে না। তবে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে ২৪০ কোটি টাকার রিজিলিয়েন্ট আরবান এন্ড টেরিটরিযাল ডেভেলপমেন্ট (আরইউটিডিপি) প্রকল্পটি বেনাপোল পৌর সভার প্রশাসকের সাথে চুক্তি করবে। এই প্রকল্পটি পাশ হয়ে গেলে পৌরসভার সকল প্রক্রিয়াধীন সড়কসহ অন্যান্য কাজ দ্রæত সংস্কার করা হবে।

বেনাপোল ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ কামরুজ্জামান শান্তি বলেন, বেনাপোল কলেজে প্রায় ১২শ‘ ছাত্র-ছাত্রী অধ্যায়নরত আছে। এই সড়কটির করুণ হাল। সবাইকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এতে ছাত্র-ছাত্রীর উপস্থিতি সংখ্যা অনেক কমে গেছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ হওয়ায় শতকরা ২৫ ভাগ শিক্ষার্থী কলেজে উপস্থিত হচ্ছে। এ সড়কে ইজিবাইক, রিক্সাভ্যান যেতে চান না। গেলেও দ্বিগুন ভাড়া দাবি করেন। এ কারণে অনেক অভিভাবক অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে ছেলে মেয়েকে কলেজে পাঠাতে চাচ্ছে না।

বেনাপোল মহিলা আলীম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা জাহিদুল ইসলাম বলেন, সড়কটি দীর্ঘদিন যাবত অব্যবস্থার মধ্যে পড়ে আছে। ছাত্রীরা ঠিকমত মাদ্রাসায় আসতে পারছে না। কাঁদা-পানি- ধুলায় তাদের ড্রেস নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। দ্রæত সড়কটি মেরামতের দাবি জানান তিনি।

শিক্ষাথী আবিদ হোসেন  জানান, এই সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী। আমাদের চলাচল করতে অনেক কষ্ট হয়। কোন যানবাহন এ সড়কে আসতে চায় না। যদিও আসে ভাড়া দ্বিগুন চায়। যœবাহনে উঠলে শরীরে ব্যাথা করে। এ কারণে আমরা প্রতিদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসতে পারি না। এতে পড়াশুনায় ব্যাঘাত ঘটছে। গায়ে একটি পোষাক পড়ে আসলেও ব্যাগে করে আর একটি পোষাক নিয়ে আসতে হয়। পোষাকে হাত দেয়া যায় না। ধুলাবালিতে ভরে থাকে। গা হাত পা চুলকায়। প্রতিদিন স্কুল কলেজ থেকে বাড়ি গিয়ে জামা কাপড় ধুয়ে দিতে হয়।

বেনাপোল পৌর প্রশাসক ও শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ড. কাজী নাজিব হাসান বলেন, বেনাপোল পৌরসভায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটি খুব খারাপ ও খোড়াখুড়ির মধ্যে ছিল। আমি প্রশাসকের দায়িত্ব নিয়েছি ৬ মাস হলো। আমাদের দায়িত্ব নেওয়ার আগেই সড়কটি খারাপ ছিল। আমরা চেস্টা করছি সড়কটি দ্রæত সংস্কার করার জন্য।

একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছি। প্রকল্পটি স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ে (এলজিইডি) পাঠিয়েছি। এলজিইডি‘রও একটি প্রজেক্ট রয়েছে আরইউটিডিপি প্রকল্প। প্রকল্পটি অনুমোদন হয়েছে। কিন্তু টেন্ডার প্রক্রিয়া হয়নি। টেন্ডার প্রক্রিয়া হয়ে গেলে কাজ শুরু করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়