শিরোনাম
◈ ভালোবাসার শহর প্যারিসে বৃষ্টিভেজা রাতে শুরু হলো অলিম্পিকস ২০২৪ ◈ সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৫৩তম জন্মবার্ষিকী আজ ◈ কারফিউ আরো শিথিলের সিদ্ধান্ত হবে আজ, জানালেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ একদফা দাবিতে জাতীয় ঐক্যের ডাক বিএনপির ◈ শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালে শ্রীলঙ্কা  ◈ ডিবি হেফাজতে কোটা আন্দোলনের ৩ সমন্বয়ক ◈ কোটা আন্দোলন: ঢামেকে চিকিৎসাধীন শিক্ষার্থীসহ তিন জনের মৃত্যু ◈ হেলিকপ্টার দিয়ে মানুষ হত্যার জবাব জনগণ একদিন আদায় করে নেবে: মির্জা ফখরুল ◈ প্রতিটি হামলার ঘটনার বিচার হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ সাম্প্রতিক সহিংসতায় আহতদের চিকিৎসার দায়িত্ব নেবে সরকার: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত : ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ০৫:৩৪ বিকাল
আপডেট : ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ০৫:৩৪ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বঙ্গবন্ধু কৃষি পদক পাওয়া ফুলচাষি দেলোয়ারের বাগানে

এবছর টবে বিক্রি হচ্ছে টিউলিপ ফুল

এ এইচ সবুজ, গাজীপুর: [২] দেশে প্রথমবারের মতো ২০২০ সালে শীতপ্রধান দেশের টিউলিপ ফুল ফুটিয়ে আলোচনায় আসেন গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার ফুলচাষি দেলোয়ার হোসেন। শুধু টিউলিপ-ই-নয় একই সঙ্গে শ্রীপুরের মাটিতে তিনি জার্বেরা ও লিলিয়াম ফুল চাষ করে সুনাম কুঁড়িয়েছেন। বাংলাদেশে টিউলিপ-জার্বেরা ফুলের নাম নিলে প্রথমে আসে ফুলচাষি দেলোয়ার হোসেনের নাম। এরপর তিনি পরপর তিন বার ফুটিয়েছেন রঙ-বেরঙের টিউলিপ।

[৩] দেলোয়ারের সফলতায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে তার বাগানে মানুষজন ছুটে আসে। তাকে দেখে টিউলিপ চাষে আগ্রহী হন তারা। প্রেমে পড়ে এ ফুল চাষে উদ্যোগী হন। ইতোমধ্যে টিউলিপ ফুলের চাষ সম্প্রসারিত হচ্ছে দেশজুড়ে। তাদের পেছনে শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন ফুলচাষি দেলোয়ার। এর আগে বিদেশি ফুল জার্বেরা চাষেরও পথ দেখিয়েছিলেন তিনি। দেলোয়ারের সফলতায় সরকার তাকে বঙ্গবন্ধু কৃষি পদকে ভূষিত করেছে।

[৪] এ বছর নানা প্রতিবন্ধকতায় দেলোয়ার নিজের বাগানে টিউলিপের শেড আর স্থাপন করেননি। তবে এখনও তার স্বপ্ন টিউলিপ ফুলকে ঘিরে। ফুলচাষের অর্থনীতিতে ভবিষ্যতে অবদান রাখতে চান তিনি। কিন্তু এ কাজ তার একার পক্ষে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব না, প্রয়োজন সরকারি সহায়তা।

[৫] তবে দেলোয়ার হোসেন এবার প্রায় এক হাজার টিউলিপের টব তৈরি করেছেন। ফুল ও কলির মিশ্রণে প্রতিটি টব ৫০০ টাকা করে বিক্রি করছেন। বাজারে বেশ চাহিদা রয়েছে। সৌখিন ফুলপ্রেমিদের বাসা-বাড়ির বারান্দায় এখন জায়গা পেয়েছে শীতের দেশের এই টিউলিপ।

[৬] এ বিষয়ে দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমি ফুল বাণিজ্যিকীকরণে কাজ করছি। ফুলের ব্যবসা করি। আমি দুই বছর টিউলিপের যে চাষ করেছি, সেটা পর্যটন পর্যায়ে চলে যায়। এটার উৎপাদন খরচ অনেক বেশি। পর্যটন পর্যায়ে থেকে কোনো আয় আসে না। যা খরচ হয়, তা ব্যক্তিগত পর্যায়ে পুষিয়ে ওঠা সম্ভব না। সামনের বার বড় করে আমরা উৎপাদনে যাব, সেটার লক্ষ্যই হবে বাংলাদেশে টিউলিপ ফুলের বিকাশ ঘটানো। দেশে ফুলের বাজার ধরে জাতীয় আয়ে ভূমিকা রাখা।

[৭] তিনি আরও বলেন, তবে এর আগে যেটা প্রয়োজন, সেটি হচ্ছে সরকারি সহায়তা। যেমন টিউলিপের বাল্ব আমদানি করতে উচ্চ হারে ট্যাক্স ও ভ্যাট দিতে হয়। এটি করমুক্ত রাখা ও দেশের পতিত সরকারি জমি লিজ দিয়ে সহায়তা করা। এভাবে ফুলচাষিদের সহায়তা করলে দেশের অনেকে টিউলিপ চাষে এগিয়ে আসবে।

[৮] দেলোয়ারের ছোট্ট টিউলিপ বাগান থেকে টিউলিপের টব কিনেছেন আলমগীর হোসেন। তিনি বলেন, গত বছর এই সময়ে দেলোয়ারের টিউলিপ বেশ সাড়া ফেলেছিল দেশে। এবার একই সময়ে টিউলিপ বাগান দেখতে পাইনি। দেলোয়ার হোসেন এবার টিউলিপ বাগান না করায় আমার মতো টিউলিপ বাগান দেখতে আসা দর্শনার্থীরা হতাশ হয়ে ফিরছেন। সরকার যদি উদ্যোগ নেয়, তাহলে টিউলিপ দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেয়া সম্ভব।

[৯] ময়মনসিংহের ভালুকা থেকে টিউলিপ দেখতে এসেছিলেন মার্জিয়া আকতার। তিনি বলেন, গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে এসেছিলাম এই বাগানে। তখন বেশ সুন্দর ছিল বাগানটি। টিউলিপের সৌন্দর্য দেখতে এবার এলেও বাগান না করায় হতাশ হয়েছি। পরে টিউলিপের টব বিক্রি করতে দেখে সেই হতাশা কেটে গেছে। আমি এখান থেকে দুটি টিউলিপের টব সংগ্রহ করেছি। যা দেখতে এতই সুন্দর যে চোখ ফেরানো দায়।

[১০] টিউলিপ ফুলের চাষ সম্প্রসারিত করতে দেলোয়ার হোসেনকে সহযোগিতা করা হবে বলে জানিয়েছেন শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমাইয়া সুলতানা বন্যা। তিনি বলেন, শীতপ্রধান দেশের ফুল টিউলিপের চাহিদা রয়েছে বাংলাদেশের ফুলের বাজারে। এছাড়াও বাণিজ্যিক অবস্থানও ভালো। ফুলচাষি দেলোয়ার হোসেন যদি টিউলিপ ফুল চাষ করে দেশের বাজারে ছড়িয়ে দিতে চান, সেক্ষেত্রে কৃষি বিভাগের পক্ষ সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

[১১] চলতি মৌসুমেও দেলোয়ার হোসেন নেদারল্যান্ডস থেকে ৪০ হাজার টিউলিপের বাল্ব (বীজ) আমদানি করেছেন। যা পঞ্চগড়ের ইউএসডিও নামে এনজিওর মাধ্যমে ২২ হাজার, চট্টগ্রামে ৬ হাজার, ঢাকায় ৩ হাজার, রাজশাহীতে ৬ হাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে চাষ হয়েছে। এবার একটু বেশি শীত হওয়ায় ফুলও ফুটেছে ভালো।

প্রতিনিধি/একে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়