শিরোনাম
◈ আইপিএল আয়োজনের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে আরব আমিরাত ◈ ভারত আসবে না বাংলাদেশ সফরে, হবে না এশিয়া কাপও ◈ এপ্রিলে  ১০১ কোটি ৩৮ লাখ টাকার চোরাচালান পণ্যসামগ্রী জব্দ করেছে বিজিবি ◈ ঐক্যবদ্ধ শাহবাগ বিএনপির অপেক্ষায়: সারজিস আলম ◈ জনআকাঙ্খা ও রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে আওয়ামী লীগের বিষয়ে সুচিন্তিত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জনতা পার্টি বাংলাদেশের ◈ ভারত-পাকিস্তান তৃতীয় দিনের মতো সংঘর্ষে জড়ালো, যুদ্ধাবস্থা সীমান্তজুড়ে ◈ 'আপ বাংলাদেশ' নতুন রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ ◈ দেশে অনলাইন জুয়া সর্বগ্রাসী হয়ে উঠেছে: অনলাইনে জুয়া বন্ধে কঠোর হচ্ছে সরকার ◈ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ (ভিডিও) ◈ আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শাহবাগ মোড় অবরোধের ডাক হাসনাতের (ভিডিও)

প্রকাশিত : ১৮ মার্চ, ২০২৩, ০৯:২২ রাত
আপডেট : ১৮ মার্চ, ২০২৩, ০৯:২২ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ খাতে বিনিয়োগের কোনো বিকল্প নেই: বিজিএমইএ সভাপতি

মনজুর এ আজিজ: তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান বলেছেন, আগামীতে কাঙ্খিত প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হলে বর্তমান সময়ে ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজখাতে বিনিয়োগ বাড়ানো ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প নেই। তিনি বলেন, বিশেষভাবে নন-কটন খাতে আমাদের বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। বিগত চার দশকে আমাদের তৈরি পোশাক রপ্তানি ৪৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছালেও আমাদের পণ্যের ম্যাটেরিয়াল ডাইভারসিফিকেশন হয়নি। 

শনিবার (১৮ মার্চ) রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিজিএমই সহসভাপতি নাসির উদ্দিন, পরিচালক শোভন ইসলাম শাওনসহ পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা।

লিখিত বক্তব্যে ফারুক হাসান বলেন, কোভিড-১৯ এর ক্ষত সেরে উঠতে না উঠতেই আমরা একটি নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছি। সাম্প্রতিক সময়ে ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে বিশ্ব অর্থনীতিতে এক অস্থির পরিস্থিতি বিরাজ করছে, যার প্রভাব পড়েছে আমাদের অর্থনীতি ও শিল্পে।

আমাদের প্রধান বাজারগুলোতে, বিশেষ করে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি রেকর্ড পর্যায়ে পৌঁছেছে। এসব উন্নত দেশের ভোক্তারা ভোগ্যপণ্যের ব্যয় কমিয়ে দিয়েছেন, ফলে কমে আসছে পোশাকের চাহিদা। তাই পোশাকের অর্ডার কমিয়ে দিয়েছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো। তবে অফ প্রাইস বা ডিসকাউন্টেড পণ্যের প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ বাড়ছে।

আবার ক্রেতারা তাদের সোর্সিং কৌশল পরিবর্তন করছেন, একসঙ্গে বড় অর্ডার না দিয়ে ছোট ছোট প্লটে অর্ডার দিচ্ছেন, ফলে কারখানা পর্যায়ে আমাদের উৎপাদন পরিকল্পনা বিপর্যস্ত হচ্ছে।

অপরদিকে, বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য নীতিতে যে পরিবর্তনগুলো আসছে সে বিষয়গুলোতে আমাদের যথেষ্ট প্রস্তুতির প্রয়োজন আছে নতুবা আমাদের বড় ধরনের সংকটের মধ্যে পড়তে হবে। 

এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য আমরা সরকারের সঙ্গে একান্তভাবে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা নেশন ব্র্যান্ডিংয়ের পাশাপাশি অ্যাপারেল ডিপ্লোমেসি উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছি, যা আপনারা দেখছেন। বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তোরণের পথটি মসৃণ করতে ট্রানজিশন পিরিয়ড বাড়িয়ে ছয় বছর করার জন্য আমরা সরকারের মাধ্যমে সব প্রেফারেন্স গিভিং দেশগুলোকে অনুরোধ করছি।

তবে আশার বিষয় হচ্ছে, এতসব চ্যালেঞ্জের মধ্যে থেকেও আমরা রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পেরেছি। ২০২২ সালে আমাদের পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৪৫ দশমিক ৭০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যা ২০২১ এর তুলনায় ২৭ দশমিক ৬৪ শতাংশ বেশি। আর ২০২৩ এর জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে আমাদের মোট পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৮ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ২০২২ এর একই সময়ের তুলনায় ১০ দশমিক ১২ শতাংশের বেশি। তবে আমরা যে প্রবৃদ্ধি দেখছি তা মূলত মূল্যভিত্তিক প্রবৃদ্ধি। কিন্তু পরিমাণের দিক থেকে কোনো প্রবৃদ্ধি হয়নি, বরং ঋণাত্মক হয়েছে।

রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির পেছনে মূলত তিনটি কারণ রয়েছে: প্রথমত, বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি, জ্বালানি তেলসহ অন্যান্য কাঁচামালের মূল্য বাড়ার কারণে আমাদের উৎপাদন খরচ উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। যার প্রভাব পড়ছে পোশাকের মূল্যের ওপর।

দ্বিতীয়ত, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমাদের শিল্পে উচ্চ-মূল্য সংযোজিত পণ্যে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ হয়েছে। আমাদের বেশ কিছু কারখানা অপেক্ষাকৃত উচ্চ মূল্যে পণ্য রপ্তানি করছে যেমন- জ্যাকেট, এক্টিভ ওয়্যার এবং স্যুট। ফলে পোশাকের ইউনিট প্রাইস বেড়েছে। আমাদের যে হারে মূল্যভিত্তিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে সেই অনুপাতে পরিমাণভিত্তিক/ভলিউমে প্রবৃদ্ধি হয়নি।

তৃতীয়ত নতুন বাজারগুলোতে রপ্তানির ক্ষেত্রেও আমরা ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। ২০০৯-১০ অর্থবছরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সরকার বাজার বহুমুখীকরণের জন্য যে প্রণোদনা দিয়েছিল, তাতে অপ্রচলিত বাজারগুলোতে পোশাক রপ্তানি উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।

চলতি অর্থবছরের জুলাই-ফেব্রুয়ারি সময়ে ভারতে রপ্তানি হয়েছে ৭৫৩ দশমিক ৯২ মিলিয়ন ডলার, প্রবৃদ্ধি ৬১ দশমিক ৫৭ শতাংশ, জাপানে ১ দশমিক ০৮ বিলিয়ন ডলার, প্রবৃদ্ধি ৪৭ দশমিক ৬৫ শতাংশ, দক্ষিণ কোরিয়ায় ৩৮৭ দশমিক ৬৩ মিলিয়ন ডলার, প্রবৃদ্ধি ৩৯ দশমিক ৮১ শতাংশ। এছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের বাজারে আমাদের রপ্তানি বেড়েছে। বিশেষ করে সংযুক্ত আরব আমিরাতে ১৮ দশমিক ৪০ শতাংশ, সৌদি আরবে ৪৭ দশমিক ০৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

তিনি বলেন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের রপ্তানি অনুযায়ী আমাদের মোট পোশাক রপ্তানির প্রায় ৭৪ দশমিক ১৪ শতাংশই ছিল কটনের তৈরি, যা ১০ বছর আগে ২০০৮-০৯ অর্থবছরে ছিল ৬৯ শতাংশ, অর্থাৎ বিগত ১০ বছরে আমাদের শিল্পটির কটন নির্ভরতা বরং বেড়েছে। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ মোট ২০ লাখ ৫২ হাজার টন ফাইবার আমদানি করে, যার ৯৩ দশমিক ৫৭ শতাংশ ছিল কটন। যেখানে বিশ্বের মোট টেক্সটাইল কনজাম্পশনের প্রায় ৭৫ শতাংশই নন-কটন এবং কটনের শেয়ার মাত্র ২৫ শতাংশ। বর্তমানে বৈশ্বিক পোশাক বাণিজ্যের ৫২ শতাংশ পণ্য নন-কটনের, সেখানে আমাদের রপ্তানির মাত্র ২৬ শতাংশ নন-কটন।  

বর্তমান বিশ্বে ভোক্তাদের ক্রমাগত জীবনযাত্রার পরিবর্তন এবং টেকসই ও পরিবেশবান্ধব পোশাকের চাহিদা বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে নন-কটনের পণ্য চাহিদা বাড়ছে। সুতরাং এখাতে আমাদের বিপুল সম্ভবনা রয়েছে। 

এমএ/এসবি২

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়