মনজুর এ আজিজ : দেশে রান্নার কাজে বহুল ব্যবহৃত এলপি গ্যাসের দাম ১২ কেজির সিলিন্ডার প্রতি ৩৫ টাকা কমিয়ে ১২০০ টাকা করা হয়েছে। যা পূর্বে ছিল ১২৩৫ টাকা। এছাড়া অটোগ্যাস লিটার প্রতি ৫৫ দশমিক ৯২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। রোববার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন দর ঘোষণা করেন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল।
ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে অংশ নেন কমিশনের সদস্য মোহাম্মদ আবু ফারুক, মকবুল ই-এলাহী চৌধুরী, মোহাম্মদ বজলুর রহমান, কামরুজ্জামান, বিইআরসির সচিব খলিলুর রহমান খান। নতুন দর রোববারই সন্ধ্যা ৬টা থেকে কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।
টানা কয়েকমাস ঊর্ধ্বমূখী থাকার পর মে মাসে থেকে কমতে থাকে এলপি গ্যাসের দাম। চলতি মাসে এলপি গ্যাসের দর কমলেও ডলারের দর ঊর্ধ্বমূখিতার কারণে সেই সুবিধা থেকে বঞ্চিত বাংলাদেশের ভোক্তারা।
ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে সাম্প্রতিক বছরগুলোর সব রেকর্ড ছাড়িয়ে এপ্রিলে ১২ কেজি এলপি গ্যাসের দাম গিয়ে দাঁড়ায় ১৪৩৯ টাকায়। এপ্রিল মাসে (সৌদি আরামকো) সর্বোচ্চ দর ওঠে প্রপেন ৯৪০ বিউটেন ৯৬০ ডলার। ২০১৪ সালের পর আর কখনও এতো বেশি দরে বেচাকেনা হয়নি বাংলাদেশে রান্নার কাজে বহুল ব্যবহৃত এ জ্বালানি পন্যটি। চলতি মাসে প্রোপেন ও বিউটেনের দাম কমে যথাক্রমে ৫৯০ ও ৫৬০ ডলার হয়েছে।
দর কার্যকর হচ্ছে না এমন প্রশ্নের জবাবে বিইআরসি চেয়ারম্যান বলেন, কোন ভোক্তা যদি বেশি দাম দিতে বাধ্য হন, তিনি যদি সেই কোম্পানির বিরুদ্ধে কমিশনে লিখিত অভিযোগ দেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিইআরসির সদস্য মকবুল ই- ইলাহী চৌধুরী বলেন, বেশি দামে যারা কিনছেন, তারা রশিদটা নিয়ে আমাদেরকে জানান, দেখেন না আমরা কি করি। আমরা কিন্তু লিখিত অভিযোগ পাইনি। দাম কার্যকরের ক্ষেত্রে ভোক্তাদেরও দায়িত্ব রয়েছে। কোন কোম্পানি মানি না মানবো না, এমনটি বলার সুযোগ নেই। কেউ বললে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত বছরের ১২ এপ্রিলের আগে পর্যন্ত এলপিজির দর ছিল কোম্পানিগুলোর ইচ্ছাধীন। ১২ এপ্রিল প্রথমবারের মতো দর ঘোষণা করে বিইআরসি। তখন বলা হয়েছিল আমদানি নির্ভর এই জ্বালানির সৌদি রাষ্ট্রীয় কোম্পানি আরামকো ঘোষিত দরকে ভিত্তি মূল্য ধরা হবে। সৌদির দর উঠানামা করলে ভিত্তিমূল্য উঠানামা করবে। অন্যান্য কমিশন অরপরিবর্তিত থাকবে। ঘোষণার পর থেকে প্রতিমাসে এলপিজির দর ঘোষণা করে আসছে বিইআরসি। সাধারণত মাসের তিন-চার তারিখের মধ্যে দর ঘোষণা করা হয়ে থাকে। কিন্তু চলতি মাসে এ ডলারের দর নিয়ে মতবিরোধ থাকায় জটিলতা দেখা দেয়। এলপিজি ব্যবসায়ীদের দাবি বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত দরে তারা ডলার কিনতে পারছে না।
এলপিজি আমদানিকারকরা অপরেশনাল কমিশন বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে আসছে। ১১টি কোম্পানি বিইআরসিতে লিখিত আবেদন দেয়। তাদের দাবি হচ্ছে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি হওয়ায় জাহাজ ভাড়া বেড়েছে, অভ্যন্তরীণ রুটেও ভাড়া বেড়েছে। সম্প্রতি কমিশনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছে। সেখানে গণশুনানির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
