শিরোনাম
◈ চলতি বাজেটে রাজস্ব খাতে বরাদ্দ বাড়ছে, আগামী বাজেটের রূপরেখা দেবে অন্তর্বর্তী সরকার ◈ খুনিকে দ্রুত জীবিত গ্রেপ্তার চাই, বন্দুকযুদ্ধের নাটক দেখতে চাই না: ইনকিলাব মঞ্চ ◈ আন্তর্জাতিক রোবট অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশের দাপট, গোল্ডসহ ১১ পদক অর্জন ◈ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্যাখ্যা দেননি. ইনকিলাব মঞ্চ কর্মসূচি দেবে সোমবার ◈ হাদি হত্যা মামলায় নতুন মোড়, সেই ফয়সালসহ সংশ্লিষ্টদের ব্যাংকে শত কোটি টাকার লেনদেন ◈ বাংলাদেশের দুর্বল ব্যাংক কিনতে চীনকে প্রস্তাব, সহজ হবে লেনদেন, কমবে ডলারের চাপ (ভিডিও) ◈ চূড়ান্ত হলো বিএনপির ৩০০ আসনের মনোনয়ন, শিগগিরই ঘোষণা ◈ ধ্বংস্তূপ থেকে আবার দেশকে টেনে তুলবে বিএনপি: তারেক রহমান (ভিডিও) ◈ ভোটের আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলবে: ইসি ◈ ভারত সফ‌রে মে‌সি ৮৯ কো‌টি টাকা পে‌লেও উদ্যোক্তা শতদ্রু দ‌ত্তের ২২ কোটি টাকা ফ্রিজ করলো তদন্তকারী অ‌ফিসাররা

প্রকাশিত : ২১ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১২:০৬ দুপুর
আপডেট : ২২ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৩:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ঢাকার শিল্পে গ্যাস সংকট মেটাতে ভোলার গ্যাস এলএনজিতে আনার সিদ্ধান্ত: ১২–২৪ মাসে সরবরাহের পরিকল্পনা

সহযোগীদের খবর: দ্বীপজেলা ভোলার প্রাকৃতিক গ্যাস এলএনজিতে রূপান্তর করে ঢাকা ও আশপাশের শিল্প-কারখানায় বড় পরিসরে সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছে পেট্রোবাংলা ও জ্বালানি বিভাগ। এ উদ্দেশ্যে দেশী-বিদেশী অন্তত নয়টি কোম্পানি আগ্রহ প্রকাশ করলেও প্রাথমিক যাচাই শেষে চারটি প্রতিষ্ঠানকে সংক্ষিপ্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। চূড়ান্ত অনুমোদন পেলে কোম্পানিগুলো সর্বনিম্ন ১২ থেকে সর্বোচ্চ ২৪ মাসের মধ্যে গ্যাস সরবরাহ করবে বলে জানিয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে যাতে সরবরাহ ব্যাহত না হয়, সে জন্য উভয় প্রান্তে পাঁচদিনের এলএনজি মজুদ রাখতে অবকাঠামো নির্মাণের কথাও জানিয়েছে কোম্পানিগুলো। সূত্র: বণিক বার্তা প্রতিবেদন

জ্বালানি বিভাগ ও পেট্রোবাংলাসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ভোলার গ্যাস এলএনজি আকারে পরিবহন ও সরবরাহের জন্য রাশিয়া, চীন ও সিঙ্গাপুরভিত্তিক চারটি কোম্পানিকে চূড়ান্তভাবে বাছাই করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো রাশিয়ার গ্যাজপ্রম ইপি ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড, চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশন (সিএমসি) ও সিএনপিসি চাংগিং ড্রিলিং ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড এবং সিঙ্গাপুরভিত্তিক জিসিজি এলএনজি কোম্পানি।

জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ ভোলার গ্যাস এলএনজিতে রূপান্তর করে শিল্প খাতে সরবরাহের উদ্যোগ নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিভাগের সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘এ লক্ষ্যে সম্ভাব্য কয়েকটি কোম্পানির শর্টলিস্ট করা হয়েছে। তবে ভোলায় শিল্প-কারখানা স্থাপন এবং স্থানীয় জনগণের গ্যাস সংযোগ নিয়ে চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তা সত্ত্বেও চেষ্টা করা হচ্ছে, কারণ ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় গ্যাসের তীব্র সংকটের প্রেক্ষাপটে ভোলার গ্যাস নেয়ার ক্ষেত্রে শিল্প মালিকদের আগ্রহ রয়েছে।’

ভোলা থেকে সিএনজি (কমপ্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস) করে গ্যাস আনার জন্য বিশেষ আইনের অধীনে দেশীয় কোম্পানি ইন্ট্রাকো সিএনজিকে দায়িত্ব দিয়েছিল ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার। দৈনিক পাঁচ মিলিয়ন গ্যাস সিএনজি আকারে আনছে কোম্পানিটি, যা চাহিদার তুলনায় খুবই সীমিত। তাই অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশের শিল্প-কারখানাগুলোয় গ্যাসের সংকট কাটাতে ভোলা থেকে এলএনজি প্রক্রিয়ায় গ্যাস আনার সিদ্ধান্ত নেয়। এতে দেশী-বিদেশী অনেক কোম্পানি আগ্রহও দেখায়। সে উদ্যোগের অংশ হিসেবে এবার এলএনজি করে গ্যাস আনার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে যেতে চাইছে জ্বালানি বিভাগ।

এদিকে ভোলার গ্যাস এলএনজি আকারে সরবরাহের ক্ষেত্রে পরিবহন ব্যয়সহ প্রতি ঘনমিটারের দাম ৪৭ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে (বিইআরসি) প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। মূল্য নির্ধারণের প্রস্তাব আগামী ২৩ ডিসেম্বর বিইআরসির সভায় উত্থাপনের কথা রয়েছে। ওই সভায় দাম চূড়ান্ত না হলে বিষয়টি গণশুনানির মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে বিইআরসির শীর্ষ এক কর্মকর্তা বণিক বার্তাকে বলেন, ‘এলএনজি আকারে ভোলার গ্যাস সরবরাহের বিষয়টি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একদম নতুন প্রযুক্তি। ফলে এ প্রযুক্তির বিভিন্ন কারিগরি দিক বিবেচনা করা হচ্ছে। টেকনিক্যাল কমিটি কাজ করছে। তারা একটা প্রতিবেদন দেবে। এরপর বিষয়টি চলতি সপ্তাহে কমিশনের সভায় উত্থাপন করা হবে।’

অন্যদিকে ইন্ট্রাকো ভোলা থেকে সিএনজি করে আনা গ্যাস বিক্রি করছে সাড়ে ৪৭ টাকায়। এর মধ্যে গ্যাস কেনা বাবদ দাম ১৭ টাকা এবং বাকি ৩০ দশমিক ৫০ টাকা পরিবহন ও অন্যান্য খরচ উল্লেখ করে বিগত সরকার এক নির্বাহী আদেশে গেজেট প্রকাশ করে। ২০২৩ সালের ৮ মে প্রকাশিত ওই গেজেট সংশোধনের মাধ্যমে এলএনজি যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আইন পরিবর্তনের কারণে যেহেতু নির্বাহী আদেশে গ্যাসের দাম নির্ধারণের সুযোগ নেই, তাই বিইআরসিকে চিঠি দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ভোলা থেকে দৈনিক ৩০ মিলিয়ন গ্যাস এলএনজি আকারে নদীপথে আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ গ্যাস ঢাকায় আনার পর ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার শিল্প-কারখানায় সরবরাহের পরিকল্পনা জ্বালানি বিভাগের। এটি করার জন্য যে কোম্পানিকে দায়িত্ব দেয়া হবে, তারা মূলত ভোলা থেকে গ্যাস কিনে নির্ধারিত দরে আগ্রহী শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোয় সরবরাহ করবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভোলার গ্যাস নিতে বিতরণ কোম্পানি তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (টিজিটিডিসিএল) অধিভুক্ত এলাকায় ৩২টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তাদের একটি তালিকাও করেছে তিতাস। এসব প্রতিষ্ঠানে গ্যাসের মোট চাহিদা ১৫ মিলিয়ন ঘনফুটের কিছু বেশি।

ভোলায় এখন পর্যন্ত তিনটি গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে। কূপ খনন করা হয়েছে মোট নয়টি, যেগুলোর দৈনিক উৎপাদন সক্ষমতা ১৯০ মিলিয়ন ঘনফুট। তবে সরবরাহ সংকটের কারণে মাত্র ৭০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে বর্তমানে। এরই মধ্যে ভোলায় বেসরকারিভাবে শিল্প-কারখানা ও সরকারিভাবে সার কারখানা স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এসব কারখানা নির্মাণ করা গেলে ভোলায় গ্যাসের চাহিদা বাড়বে। সেই সঙ্গে এলএনজি করে গ্যাস আমদানি করা গেলে পূর্ণ মাত্রায় তা ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। তাই আরো ১৫টি কূপ খননের লক্ষ্যে কাজ করছে পেট্রোবাংলা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়