শিরোনাম
◈ খালেদা জিয়া যেসব সুবিধা পাবেন ভিভিআইপি হিসেবে ◈ ইরানি মসজিদগুলোতে কেন ফিরোজা - নীল রঙ ব্যবহার করা হয়? ◈ হিথ্রো বিমানবন্দরে তারেক রহমানের ভিডিওটি পুরোনো ◈ প্রধান নির্বাচন কমিশনার জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দে‌বেন ১১ ডিসেম্বর, ভোটগ্রহণের সময় এক ঘণ্টা বাড়তে পারে ◈ ম‌্যান‌চেস্টার সি‌টির জা‌র্সিতে ইং‌লিশ লি‌গে হালান্ডের শত গোলের রেকর্ড  ◈ যুক্তরাষ্ট্র যে কোনো সময় ভেনেজুয়েলায় হামলা চালাবে ◈ হালা‌ন্ডের গো‌লের রেকর্ড, ফুলহ‌্যা‌মের বিরু‌দ্ধে ম্যানচেস্টার সিটির রোমাঞ্চকর জয় ◈ আতলেতিকোকে ৩-১ গো‌লে হারা‌লো বার্সেলোনা  ◈ টাকা দরপতনে বিনিয়োগকারীরা দিশেহারা, সর্বস্বান্ত হয়েছেন অনেকে ◈ মারা গে‌ছেন ইংল্যান্ডের কিংবদন্তি ক্রিকেটার রবিন স্মিথ

প্রকাশিত : ০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১০:৩২ দুপুর
আপডেট : ০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১১:২৯ দুপুর

প্রতিবেদক : মহসিন কবির

টাকা দরপতনে বিনিয়োগকারীরা দিশেহারা, সর্বস্বান্ত হয়েছেন অনেকে

মহসিন কবির: শেয়ারবাজারে টানা দরপতনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন সারধারণ বিনিয়োগকারীরা। প্রতিদিন লস হচ্ছে বিনিয়োগের টাকা। লস হতে হতে এখন সর্বস্বান্ত। কোন কূলকিনারা পাচ্ছেন না তারা। 

মাঝেমধ্যে সূচকের কিছুটা ওঠানামা থাকলেও হতাশা যেন নিত্যদিনের সঙ্গী। প্রাতিষ্ঠানিক, ব্যক্তি শ্রেণি, বিদেশি - সব শ্রেণির বিনিয়োগকারীরাই হতাশায় দিন পার করছেন। এমন দরপতন রোধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কারও কোনো কর্ণপাত নেই। 

বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ, পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) যেন ঘুমিয়ে আছে। অথচ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণই তাদের মূল কাজ। বিনিয়োগকারীরা দিন দিন নিঃস্ব হলেও দেখার যেন কেউ নেই। তাঁদের প্রশ্ন, কে থামাবে দেশের শেয়ারবাজারের দরপতন।

বাজারের এই দরপতনের জন্য বাজারসংশ্লিষ্টরা কয়েকটি কারণের কথা জানিয়েছেন। তাঁরা বলেন, সম্প্রতি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত পাঁচ ব্যাংকের শেয়ারের দাম শূন্য ঘোষণা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তাতে ব্যাংকগুলোর শেয়ারের লেনদেন বন্ধ করে দেওয়া হয়। শেয়ারের দাম শূন্য ঘোষণা করায় এসব শেয়ারের বিনিয়োগকারীরা কিছুই পাবেন না। এ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। এরপর পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের করা মার্জিন ঋণ-সংক্রান্ত নতুন বিধানের বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে বাজারে। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতা।

জানা গেছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সিন্ডিকেটের কারসাজির মাধ্যমে একটি পক্ষ মুনাফা করে। পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের একটি শ্রেণিও সুবিধা পায়। যদিও ওই সময়ে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের অন্য একটি অংশ লোকসানে পড়ে যায়। বিগত সরকারের সুবিধাভোগী পক্ষ শেয়ারবাজার থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়েছে। এখন তারা নেই। তাই সাধারণ মানুষের প্রশ্ন- কারসাজিরতে জড়িতরা বের হওয়ার পরও কেন টানা দরপতন? পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে এসেছে, এখান থেকে বের হওয়ার পথ খুঁজে পাচ্ছে না কেউ। লোকসানের পরিমাণ এত বেড়েছে যে, কিছু লোকসান দিয়ে শেয়ার বিক্রি করে বের হয়ে যাবেন, সে উপায়ও নেই। এর মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে যাঁরা শেয়ার কিনেছিলেন, তাঁরাও লোকসানে। কোনোভাবেই দরপতন থামছে না।

শীর্ষ এক মার্চেন্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গণমাধ্যমকে বলেছেন, অস্বীকার করার উপায় নেই, একসময় বেশ কিছু কারসাজি চক্র শেয়ারবাজারের গতি-প্রকৃতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। সংঘবদ্ধভাবে অনুসারীদের নিয়ে কোনো কোনো শেয়ারের দর বাড়িয়েছে, বাজারে চাহিদা তৈরি করেছে। তাদের দেখাদেখি অন্য শেয়ারের দরও কম-বেশি বেড়েছে। এখন তারা শেয়ার কেনাবেচায় সক্রিয় নেই। ফলে বাজারে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ কমেছে। এর মধ্যে ব্যাংক সুদের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় কৌশলী বড় বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করে নিরাপদ বিনিয়োগে চলে যাচ্ছেন। সব মিলিয়ে বাজারে নেতিবাচক প্রবণতা তৈরি হয়েছে, যা থেকে বের হতে পারছে না।

সোমবারের বাজার চিত্র : দেশের শেয়ারবাজারে গতকাল সোমবার লেনদেনকৃত বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারদর কমেছে। এতে ঢাকা ও চট্টগ্রাম উভয় স্টক এক্সচেঞ্জেই (ডিএসই ও সিএসই) মূল্য সূচকে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। সূচকের পাশাপাশি দুই স্টক এক্সচেঞ্জেই লেনদেন কমেছে।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ডিএসইতে গতকাল লেনদেন শুরুর পরপরই বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার দর কমে যায়। দিনশেষে এই বাজারে লেনদেনকৃত মোট কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৩৮টির, কমেছে ৩২২টির। আর দর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৮টির। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৬৪ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৯১৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১৬ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২৮ পয়েন্টে ও বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ২১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮৯৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

সূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৪১৫ কোটি ৯০ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৪৯২ কোটি ৫৪ টাকা। এ হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ৭৬ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। দেশের প্রধান এই শেয়ারবাজারে গতকাল টাকার অঙ্কে লেনদেনের ভিত্তিতে শীর্ষ ১০টি কোম্পানি হলোÑ সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, ডমিনেজ স্টিল বিল্ডিং, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, ইনটেক, রহিমা ফুড, একমি পেস্টিসাইজ, সোনালী পেপার, মুন্নু ফেব্রিক্স এবং বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার।

অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল লেনদেনকৃত মোট ১৮২টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৪০টির, কমেছে ১৩১টির এবং ১১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে এই বাজারের সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১২৩ পয়েন্ট। এদিন সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩ কোটি ২৯ লাখ টাকা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়