শিরোনাম
◈ চার দশক পর জাতিসংঘের মঞ্চে নেতৃত্বের দৌড়ে বাংলাদেশ ◈ ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলায় গাজায় নিহত ছাড়ালো ২৫০ ◈ এক চাকা খুলে পড়া অবস্থায়ও প্রথম চেষ্টায় অবতরণ: উত্তেজনাপূর্ণ শেষ ৩ মিনিটে কী আলোচনা করেছেন পাইলট ও এটিসি ◈ ফারাক্কা বাঁধ বাংলাদেশের জন্য মরণফাঁদ: মঈন খান (ভিডিও) ◈ ডিজিটাল রূপান্তরে নারী-পুরুষের সমান সুযোগ নিশ্চিতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: প্রধান উপদেষ্টা ◈ যে ৮ জেলায় সকালের মধ্যে ঝড় হতে পারে ◈ তিন ধাপে জালনোট তৈরির ভয়ংকর ফাঁদ (ভিডিও) ◈ ‘শয়তানের নিঃশ্বাসে’ সম্মোহিত: আত্মীয় সেজে প্রবাসীর সর্বস্ব লুটে নিলো প্রতারক নারী (ভিডিও) ◈ জবি আন্দোলনে আলোচিত দিপ্তী চৌধুরী (ভিডিও) ◈ সব দলের রাজনীতি এখন আ.লীগের কাছে বিক্রি হয়ে গেছে: হাসনাত আব্দুল্লাহ (ভিডিও)

প্রকাশিত : ১৫ মে, ২০২৫, ০৯:৪৩ রাত
আপডেট : ১৭ মে, ২০২৫, ০৩:০৩ রাত

প্রতিবেদক : মনজুর এ আজিজ

বন্যা নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশকে ৩৩০০ কোটি টাকা দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক

মনজুর এ আজিজ : বাংলাদেশের বন্যাকবলিত এলাকার মানুষের দুর্ভোগ লাঘব ও ভবিষ্যতে দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য ২৭ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২১ টাকা ৫০ পয়সা ধরে) এ অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩ হাজার ২৮০ কোটি টাকা। সংস্থাটির প্রধান কার্যালয় ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুমোদন করা হয়েছে এ ঋণ। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিস থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সংস্থাটির ঢাকা অফিস জানায়, বাংলাদেশের জন্য বিশ্বব্যাংকের নির্বাহী পরিচালকদের বোর্ড এই ঋণ অনুমোদন দেয়। এই অর্থ ২০২৪ সালের আগস্টের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর পুনরুদ্ধার, গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো নির্মাণ ও পুনর্বাসন, কৃষিব্যবস্থার উন্নয়ন এবং মানুষের জীবিকার সুরক্ষায় ব্যয় করা হবে।

বিশ্বব্যাংক জানায়, ‘বাংলাদেশ সাসটেইনেবল রিকোভার, ইমারজেন্সি প্রিপেয়ারনেস অ্যান্ড রেসপন্স (বি-স্ট্রং)’ শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের গ্রামীণ এবং বন্যা সুরক্ষা বিষয়ক অবকাঠামো নির্মাণ ও পুনর্গঠন করা হবে। ফলে প্রায় ১৬ লাখ মানুষ বন্যার ক্ষয়ক্ষতি থেকে সুরক্ষা পাবে।

এই অর্থায়নের বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ বিষয়ক অন্তর্বর্তীকালীন কান্ট্রি ডিরেক্টর গেইল মার্টিন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন এবং দুর্যোগ প্রস্তুতিতে একটি অগ্রণী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী পরিচিত। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি এবং ঘন ঘন ও তীব্র প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেশের অর্থনীতি এবং জনগণের জীবনযাত্রার ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলে। তাই প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিরুদ্ধে স্থিতিশীলতা গড়ে তোলা বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক অগ্রাধিকার।

তিনি বলেন, এই প্রকল্প বাংলাদেশের দুর্যোগ প্রস্তুতি ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করবে। পাশাপাশি সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জীবিকা ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।

বিশ্বব্যাংক জানায়, প্রকল্পটি পূর্বাঞ্চলীয় জেলাগুলোতে অবকাঠামো, কৃষি ও জীবিকার ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার পাশাপাশি ভবিষ্যতে বন্যার বিরুদ্ধে দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা অর্জনে সহায়ক হবে। এর আওতায় ৭৯টি বহুমুখী বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ ও পুনর্বাসন করা হবে। একই সঙ্গে জলবায়ু সহিষ্ণু করে সংযোগকারী রাস্তা ও সেতুগুলো তৈরি করা হবে। স্বাভাবিক সময়ে এসব আশ্রয়কেন্দ্র প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হবে। 

এছাড়া বন্যা সুরক্ষা বাঁধ নির্মাণ, মেরামত ও পুনর্বাসন এবং খাল পুনঃখননের কাজও এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত। বন্যা পূর্বাভাস ব্যবস্থার উন্নয়নেও সহায়তা করা হবে। স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে দুর্যোগের জন্য প্রস্তুত করতে নৌকা, সরঞ্জাম, প্রশিক্ষণ ও মহড়ার ব্যবস্থা করা হবে।

বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র ডিজাস্টার রিস্ক ম্যানেজমেন্ট স্পেশালিস্ট স্বর্ণা কাজী এই অর্থায়ন প্রসঙ্গে বলেন, এই প্রকল্পটি একই সঙ্গে পুনরুদ্ধার ও পুনর্গঠনের চাহিদা এবং দীর্ঘমেয়াদি দুর্যোগ স্থিতিশীলতার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়। ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি বিভিন্ন অ-ভৌত কার্যক্রমের সমন্বয়ে একটি কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এর মাধ্যমে পুনরুদ্ধার ও স্থিতিশীলতা তৈরির একটি সামগ্রিক পদ্ধতি নিশ্চিত করা যাবে। ভবিষ্যতে বন্যার ঝুঁকি কমিয়ে দুর্বল জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব হবে।

বিশ্বব্যাংক জানায়, প্রকল্পটি বন্যা কবলিত এলাকার মানুষের আয়ের সুযোগ বাড়াতে আর্থিক সহায়তা ও বাজার-সংশ্লিষ্ট দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ দেবে। পাশাপাশি অস্থায়ী কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি করা হবে। এর মাধ্যমে ৩ লাখ ৮০ হাজারের বেশি মানুষ অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে। কৃষি উৎপাদনশীলতা বাড়াতে অন্তত ৬৫ হাজার কৃষি পরিবারকে উচ্চ ফলনশীল, জলবায়ু সহিষ্ণু ও টেকসই ফসল উৎপাদন প্রযুক্তি, কৃষি যন্ত্রপাতি ও উন্নত সেচ সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে সহায়তা করা হবে। মানসম্পন্ন বীজ সরবরাহের জন্য বীজ গ্রাম স্থাপন করা হবে এবং নারীদের বসতবাড়ি ও কমিউনিটি বাগানে উৎসাহিত করা হবে। টেকসই কৃষি পদ্ধতি সম্পর্কে জ্ঞান ভাগ করে নেওয়ার জন্য কৃষক দলও গঠন করা হবে। ফলে খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টির উন্নতি ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়