শিমুল চৌধুরী ধ্রুব: [২] ঈদের আগে রাজধানীর বাজারগুলোতে বেড়ে গিয়েছিল প্রয়োজনীয় নিত্যপণ্যের দাম। কয়েক দফা আমদানির পর পেয়াজের দাম কিছুটা কমলেও অন্যান্য দ্রব্যের দাম বেড়েছিলো অস্বাভাবিকভাবে। মাংসের বাজারেরও ছিলো একই অবস্থা। গরু ও খাসির মাংসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ানো হয় মুরগির দাম।
[৩] সেসময় অনেকের ধারনা ছিলো ঈদের পর হয়তো দাম কমে যাবে। কিন্তু শুক্রবার (১২ এপ্রিল) ঈদের পরদিন কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কোনো কিছুরই দাম কমেনি, বরং ঈদের আগের তুলনায় বেড়েছে সবজির দাম। অথচ বাজারে ক্রেতার সংখ্যা ছিলো খুবই কম।
[৪] বাজার ঘুরে দেখা যায়, ঈদের পর এখনও বেশিরভাগ বিক্রেতারা আসেননি। এমনকি কারওয়ান বাজারের অন্যতম বড় মার্কেট কিচেন মার্কেট ছিলো বন্ধ। তবে কিছু কিছু মুরগি ও সবজির দোকান খোলা রয়েছে। ক্রেতার সংখ্যা খুবই কম থাকায় বিক্রেতারা অলস সময় পার করছেন।
[৫] যেসব মুরগির দোকান ঘুরে দেখা যায়, ঈদের আগে বেড়ে যাওয়া দামেই এখনও মুরগি বিক্রি হচ্ছে। বর্তমানে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা, সোনালি ৩৮০ টাকা, লাল লেয়ার ৩৪০ টাকা ও সাদা লেয়ার ২৯০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। খাসির মাংস ১১৫০ টাকা এবং ছাগল বা ভেড়ার মাংস প্রতি কেজি পাওয়া যাচ্ছে ১০০০ টাকা। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ৮০০ টাকা। বিক্রেতারা জানান, মুরগির দাম এখন আর কমার সম্ভাবনা নেই। বরং বাড়তে পারে।
[৬] এক বিক্রেতা বলেন, বাজারে মুরগির সংকট রয়েছে। খাদ্য ও মুরগির বাচ্চার দাম বেশি। তারপরও মুরগি পাওয়া যাচ্ছে না। এক মাস আগে দুই হাজার মুরগি অর্ডার করে দুই ধাপে মাত্র এক হাজার ৩০০ মুরগি পেয়েছি। খামারিদের কাছে মুরগি নেই। ঈদে সব বন্ধ তাই এমন বাড়তি দাম। সব যখন খুলবে তখন আরও দাম বাড়বে।
[৭] এদিকে ঈদের আগের তুলনায় দাম বেড়েছে সবজির। বিক্রেতারা জানান, কিছু কিছু সবজিতে ৫-১০ টাকা ও কিছু কিছু সবজিতে ১৫-২০ টাকা দাম বেড়েছে। কিছু সবজির দাম অপরিবর্তিত আছে।
[৮] বাজার ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে প্রতি কেজি মিষ্টি কুমড়া ৩০-৪০ টাকা, লম্বা বেগুন ৭০-৮০ টাকা, গোল বেগুন ৫০-৬০ টাকা, টমেটো ৫০-৬০ টাকা, পেঁপে ৬০ টাকা, সজনে ডাঁটা ১৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০-৫০ টাকা, কাকরোল ১৪০-১৫০ টাকা, ঢেড়স ৪০-৫০ টাকা, পটল ৬০-৬৫ টাকা, করলা ৪০-৫০ টাকা, শসা ৩০-৪০ টাকা, গাজর ৫৫-৬০ টাকা, বরবটি ৫০-৬০ টাকা, উস্তা ৬০-৭০ টাকা, কাঁচা আম ১৪০-১৫০ টাকা, ঝিঙ্গে ৯০ টাকা, ধুন্দল ৮০ টাকা, লতি ৬০ টাকা, ফুলকপি প্রতি পিস ৩০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৫০ টাকা, প্রতি কেজি আলু ৫০ টাকা, পেঁয়াজ ৬০ টাকা, আদা ২০০ টাকা, রসুন ২০০ টাকা, পালং শাক প্রতি আঁটি ১৫ টাকা ও লাল শাক প্রতি আঁটি ২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
[৯] সুমন তালুকদার নামের এক ক্রেতা বলেন, ঈদের পর সবজির দাম বেড়েছে। ১৬০ টাকা করে সজনের দাম চাচ্ছে বিক্রেতারা। এ সময় এ সবজিটির দাম ১০০ টাকার নিচে হওয়া উচিত ছিল। আমরা বাজার করতে গিয়ে দামের কারণে অনেক কিছুই কিনতে পারি না। আবার পরিমাণেও কম কিনতে হচ্ছে। আমাদের দিশেহারা অবস্থা।
[১০] কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. জাকির বলেন, বাজারে ব্যাপারী ও পাইকারি বিক্রেতারা নেই। সবাই ঈদে বাড়িতে গেছেন। যার কারণে সবজির সরবরাহ কম। তাই দাম একটু বেশি। তবে সব সবজির দাম বাড়েনি। কিছু কিছু সবজির দাম বেড়েছে। এটা কমে যাবে। সম্পাদনা: কামরুজ্জামান
এসবি২
আপনার মতামত লিখুন :