মাজহারুল মিচেল: [২] দুর্নীতির টাকায় আইনের মারপ্যাঁচে আবার নিজের নামে দলিল করেও শেষ রক্ষা হয়নি গাজীপুর জেলা রেজিস্ট্রার অহিদুল ইসলামের। তিনি প্রথমে শাশুড়ির নামে ফ্ল্যাট ও পরে নিজের বাবার নামে জমি ক্রয় করেন। কিন্তু তাতেও কোন লাভ হয়নি। শেষ পর্যন্ত দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধানে তার অপকৌশল ধরা পড়েছে।
[৩] দুদকের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ জিন্নাতুল ইসলাম বাদী হয়ে সংস্থাটির সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে ঢাকা ১ এ মামলাটি দায়ের করেন।
[৪] আসামি গাজীপুর জেলা রেজিস্ট্রার অহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে মোট ১ কোটি ৩ লাখ ৫৮ হাজার ৬৪৯ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
[৫] দুদকের জনসংযোগ দপ্তর সূত্রে রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) এসব তথ্য জানা গেছে।
[৬] মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামি অহিদুল ইসলাম ২০১৯ সালের ২২ ডিসেম্বর পদোন্নতির মাধ্যমে জেলা রেজিস্ট্রার পদে যোগদান করেন। আর ২০২০ সালের ১ জুলাই গাজীপুর জেলায় বদলি হয়ে অদ্যাবধি কর্মরত আছেন।
[৭] এজহারে জানা যায়, আসামির বিরুদ্ধে সম্পদ বিবরণীর নোটিশ জারি হলে তিনি ২০২১ সালের আগস্টে তা জমা দেন। সেখানে তিনি ১ কোটি ৪৪ লাখ টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য প্রদর্শন করেন। দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে তিনি ৩৯ লাখ ৪৮ হাজার ৯৩ টাকার স্থাবর সম্পদ প্রদর্শন করলেও ওই সম্পদ তার আয় হতে ক্রয়কৃত নয় বলে জানান।
[৮] তার দেওয়া বক্তব্য এবং আয়কর নথির তথ্য মতে ১৯৯৫ সাল হতে ২০২০-২১ অর্থবছর পর্যন্ত বেসরকারি ও সরকারি চাকরির বেতন ভাতা, পিতা মাতার নিকট হতে দানমূলে প্রাপ্ত জমির আয়, গ্রন্থ রচনার মাধ্যমে প্রাপ্ত রয়ালটি, গৃহ সম্পত্তির আয়, জমি অধিগ্রহণের বিপরীতে ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রাপ্ত অর্থ, শেয়ার ব্যবসার আয় এবং এফডিআর/সঞ্চয়পত্রের মুনাফার প্রাপ্ত অর্থসহ সর্বমোট ২ কোটি ৬৩ লাখ ৩৬ হাজার টাকা আয়ের উৎস প্রদর্শন করেছেন।
[৯] দুদকের অনুসন্ধান বলছে, আসামির শাশুড়ি ৩০ লাখ ৫৩ হাজার টাকায় ফ্ল্যাটটি ক্রয় করেই ৭ মাস পর ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফ্ল্যাটটি অহিদুল ইসলামের নাবালক পুত্র অয়নের নামে হেবা ঘোষণা দলিল মূলে দান করেন।
[১০] অবৈধ সম্পদ লুকাতে একইভাবে নিজের বাবাকে ব্যবহার করেছেন আসামি অহিদুল। বাবা আনছার উদ্দিন ২০১৩ ও ২০১৪ সালে ১৬৪.৫৫ শতাংশ জমি ক্রয় করে তা পরবর্তীতে অপর তিন পুত্র ও কন্যাকে না দিয়ে শুধু আসামির নামে হেবা ঘোষণা দলিল মূলে দান করেন। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব