মাসুদ আলম: রাজধানীর যমুনা ফিউচার পার্কের একটি মোবাইল শোরুম থেকে গত ৫ জুলাই আইফোন, স্যামসাং ও সনি ব্র্যান্ডেরসহ ৫৫টি মোবাইল ফোন চুরি হয়ে যায়। এ ঘটনায় জড়িত চোর চক্রের ৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে ডিবি গুলশান বিভাগ। রোববার থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত রাজধানীর বসুন্ধরা, ভাটারা ও কুমিল্লায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন- অনিক হাসান, নাহিদ হাসান ও নাদিম মোহাম্মদ সাগর। তাদের কাছ থেকে দুটি সনি এক্সপেরিয়া ৮, তিনটি সনি এক্সপেরিয়া ৫, একটি স্যামসাং গ্যালাক্সি এ৩২, চারটি স্যামসাং গ্যালাক্সি এস৯+, চারটি স্যামসাং গ্যালাক্সি এস১০+, একটি স্যামসাং নোট ৯, একটি স্যামসাং নোট ২০, একটি স্যামসাং নোট ১০+, তিনটি আইফোন ৮, একটি আইফোন ৮+, চারটি আইফোন এক্স, দুটি আইফোন এক্সএস, সাতটি আইফোন এক্সআর, একটি আইফোন এক্সএস ম্যাক্স, চারটি আইফোন ১১, তিনটি আইফোন ১১ প্রো, একটি আইফোন মিনি ও একটি আইফোন ১২ প্রোসহ মোট ৪৫টি মোবাইল উদ্ধার করা হয়। যার বাজার মূল্য প্রায় ১৫ লাখ টাকা।
সোমবার সংবাদ সম্মেলনে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, শেফা ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল শোরুম থেকে তালা ভেঙে তিন জন স্মার্টচোর ব্যাগভর্তি মোবাইল চুরি করে নিয়ে যায়। কিন্তু সেখানে সিকিউরিটি গার্ড কেউ ছিল না। নাহিদ হোসেন আট মাস পূর্বে চুরি হওয়া ওই মোবাইল শপে কর্মরত ছিলো। সে সময় নাহিদ ওই দোকানের চাবির একটি কপি তৈরি করে নিজের কাছে রাখে। পরবর্তী সময়ে তিনি তার পূর্ব পরিচিত অনিক হাসানকে দিয়ে ওই দোকানে চুরি করায়। আর এ চুরি করা মোবাইল প্রতিদিন দু’একটা করে অপর সহযোগী নাদিমের মাধ্যমে বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সে মোবাইল কিনতে আসা ক্রেতাদের কাছে কমদামে বিক্রি করে আসছিলো।
তিনি বলেন, আগে এক সময় স্টেডিয়াম মার্কেট, গুলিস্তান হকার্স মার্কেট, আন্ডারপাস মার্কেট ও সিনেমা হলের আশপাশ এলাকায় চোরাই ঘড়ি ও মোবাইল বিক্রি হতো। কিন্তু এখন যমুনা ফিউচার পার্ক ও বসুন্ধরার মতো আভিজাত্যপূর্ণ মার্কেটেও চোরাই পথে মোবাইল এনে কেনাবেচা হচ্ছে। তিনি গ্রাহক, মার্কেট কর্তৃপক্ষ ও দোকানদারদের এটি প্রতিহত করতে অনুরোধ জানান। এ চোরাই মোবাইল ক্রয়-বিক্রয় প্রতিরোধে যেকোন সহায়তার আশ্বাসও প্রদান করেন তিনি। এরপরেও যদি কেউ চোরাই মোবাইল কেনা-বেচা করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
হারুন আরও বলেন, বসুন্ধরা ও যমুনা ফিউচার মার্কেটে লাগেজে আনা মোবাইলগুলো সরকারি ট্যাক্স ফাঁকি দেয়। একদিকে তারা সরকারি ট্যাক্স ফাঁকি দিচ্ছে অন্যদিকে মোবাইল যারা কিনছেন সেসব গ্রাহকেরা মোবাইল রেজিস্ট্রেশন করা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এই মোবাইলগুলো চুরি হওয়ার পরে আইএমইআই নম্বর না থাকার কারণে সেগুলো উদ্ধার সম্ভব হয় না।
সিকিউরিটি গার্ডের সহয়তা ছাড়া যমুনা ফিউচার পার্কের মতো মার্কেট থেকে এভাবে মোবাইল চুরি করা সম্ভব কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গ্রেপ্তাররা স্বীকার করেছেন তারা দিনের বেলায় এসব চুরি করেছে। এভাবে চুরির বিষয়টি মার্কেট কর্তৃপক্ষ দায় এড়াতে পারে না। মার্কেট কর্তৃপক্ষ যদি আমাদের সহায়তা চান তাহলে সহায়তা দেব।