নিনা আফরিন, পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীতে এক তরুণীকে হাত-পা বেঁধে জোরপূর্বক তুলে নেওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। যদিও পুলিশ জানিয়েছে, বিষয়টি রাজনৈতিক নয়, এটি একটি পারিবারিক ঘটনা।
ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার (২৮ জুন) রাতে রাঙ্গাবালী উপজেলার মৌডুবী ইউনিয়নের মাঝের দেওর এলাকায়।
জানা গেছে, বাইলাবুনিয়া গ্রামের শাখাওয়াত হোসেনের মেয়ে তন্নী এবং পাশের গ্রামের ছাত্রলীগ নেতা কামাল গাজীর মধ্যে দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পারিবারিক সম্মতি না থাকলেও গত ২০ জুন তারা পালিয়ে বিয়ে করেন। এরপর থেকে তন্নী স্বামীর বাড়িতে অবস্থান করছিলেন।
শনিবার গভীর রাতে মেয়েকে ফিরিয়ে আনতে কামালের বাড়িতে যান তন্নীর বাবা, চাচা, মামা ও স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ কয়েকজন। মেয়েটি যেতে না চাইলে কয়েকজন মিলে তাকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে যান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ১৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, এক তরুণীকে টেনে-হিঁচড়ে কয়েকজন নিয়ে যাচ্ছে।
ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর কামাল গাজী তার ফেসবুক পেজে লেখেন, "আমার কলিজার টুকরাকে আমার বাড়ি থেকে হাত-পা বেঁধে তুলে নিয়ে গেছে। দেশবাসীর সহযোগিতা চাই।"
প্রথমে ভিডিওর ঘটনায় বিএনপির নেতাদের দায়ী করে পোস্ট দেন কামাল। এতে রাজনৈতিক বিভ্রান্তি দেখা দেয়। তবে পরে তিনি পোস্টটি সরিয়ে নেন এবং জানান, এটি পারিবারিক ইস্যু।
রাঙ্গাবালী থানার ওসি এমারৎ হোসেন বলেন, "তদন্তে জানা গেছে, তন্নী গত সপ্তাহ থেকে স্বেচ্ছায় কামালের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। তাদের বিয়ের কোনো নথি পাওয়া যায়নি। ঘটনার রাতে তার বাবাসহ আত্মীয়রা জোর করে তাকে নিয়ে যান। তবে কেউ এখনো লিখিত অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
পুলিশ জানায়, অভিযানে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকজন রয়েছেন, তবে পুরো ঘটনাটি মূলত পারিবারিক। ঘটনাকে রাজনৈতিক রূপ দিয়ে কেউ যাতে সামাজিক মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়াতে না পারে, সে বিষয়ে সচেতন থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে পটুয়াখালী জেলা পুলিশ জানায়, ঘটনাটি নিয়ে তৃতীয় কোনো পক্ষ যাতে সুযোগ না নিতে পারে, সে জন্য সতর্ক থাকতে হবে।
এদিকে তন্নী গণমাধ্যমকে জানান, তিনি স্বেচ্ছায় কামালকে বিয়ে করেছেন এবং তার সাথেই সংসার করতে চান।
অন্যদিকে তার বাবা শাখাওয়াত হোসেন বলেন, “তন্নী এখনো অপ্রাপ্তবয়স্ক। তার বয়স ১৭ বছর। মেয়েটিকে আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে নিয়ে ফেরত এনেছি, বর্তমানে সে আমাদের হেফাজতে আছে।”