নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর অনলাইন শপ’, ‘চাঁদপুর ইলিশ বাজার’, ‘চাঁদপুর ইলিশ ঘাট’ ইত্যাদি নামে পেইজ খুলে অনলাইনে চমকপ্রদ বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে ধোঁকা দিয়ে অভিনব কৌশলে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিলো একটি প্রতারক চক্র। এ চক্রের ৮ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিবি সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- আনাছ শেখ (২১), কামাল শেখ (২১), ইয়ানুর মোল্লা (২১), জোবায়ের হোসেন (২৩), রুবেল শেখ (২৯), সাগর হোসেন (২৩), মো. আলীনূর ইসলাম (১৮) ও শরিফুল ইসলাম (২১)। সোমবার ও মঙ্গলবার খুলনা, নড়াইল ও যশোরে বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ২৫টি মোবাইল ফোন ও ৭০টি অবৈধ সিম উদ্ধার করা হয়।
বুধবার ডিবি সাইবার সূত্রে জানা যায়, গত ২০ নভেম্বর মোঃ মাসুম বিল্লাহ ‘চাঁদপুর ইলিশ বাজার’নামক ফেসবুক পেইজে সুলভ মূল্যে ইলিশ মাছ বিক্রির চমকপ্রদ বিজ্ঞাপন দেখে ইলিশ অর্ডার দেন এবং তাদের দেওয়া একটি বিকাশ নম্বরে ১৫ হাজার টাকা অগ্রিম প্রদান করেন। কিন্তু উক্ত অর্ডারের প্রেক্ষিতে তিনি কোনো ইলিশ পাননি। এ ঘটনায় মো. মাসুম বিল্লাহ বাদী হয়ে খিলগাঁও থানায় একটি মামলা করেন।
মামলাটি পরবর্তীতে ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগে হস্তান্তর করা হয়। তদন্তাধীন এই মামলায় তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় প্রতারক চক্রকে শনাক্ত করে ডিবি। পরবর্তীতে সোমবার ও মঙ্গলবার খুলনা, নড়াইল ও যশোরে অভিযান পরিচালনা করে প্রতারক চক্রের আট জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিবি-সাইবার সূত্রে আরও জানা যায়, প্রতারক চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন অনলাইন শপের ছবি ব্যবহার করে পেইজ খুলে চাঁদপুরের তাজা ইলিশ সুলভ মূল্যে সরবরাহের বিজ্ঞাপন দিয়ে আসছিলো। তারা ইলিশ সরবরাহের অর্ডার নিয়ে অগ্রিম টাকা গ্রহণ করতো। টাকা নেওয়ার পর তারা গ্রাহকদের ইলিশ মাছ বুঝিয়ে দিতো না এবং কোন যোগাযোগ রাখতো না। চক্রটির মূলহোতা আনাছ শেখ ও শরিফুল ইসলামের নেতৃত্বে তারা বিভিন্ন ব্যক্তির এনআইডি সংগ্রহ করে মোবাইল কোম্পানি, বিকাশ ও নগদের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর সহায়তায় ভুয়া সিম ও অ্যাকাউন্ট খুলে এই অভিনব প্রতারণা চালিয়ে আসছিলো।
আরও জানা যায়, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে অনলাইনে এই অভিনব প্রতারণার সাথে জড়িত বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। তাদের প্রতারণার শিকার অসংখ্য ভুক্তভোগী ডিএমপির বিভিন্ন থানায় সাধারণ ডায়েরি ও অভিযোগ করেছেন, যার অনেকগুলো ডিবি সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগে তদন্তাধীন রয়েছে। চক্রটির সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।
অনলাইনে কেনাকাটার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করার জন্য এবং অপরিচিত পেইজ থেকে কেনাকাটার প্রেক্ষিতে অগ্রিম টাকা প্রদানের আগে তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা ভালোভাবে যাচাই করার জন্য সম্মানিত নগরবাসীকে আহ্বান জানাচ্ছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ।