চরভদ্রাসন ও সদরপুর (ফরিদপুর) প্রতিনিধি : ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার খালাসি ডাংগী গ্রামে রাতে প্রকাশ্যে শটগান নিয়ে মহড়ার ঘটনায় আতঙ্কিত এলাকাবাসী। ‘পাখি শিকার’-এর নামে এই মহড়া চালানো হলেও পুলিশ নিরব ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, খালাসি ডাংগী গ্রামের বাসিন্দা সাবেক চর ঝাউকান্দা ইউপি চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন মৃধার ছেলে রায়হান মৃধার বাড়ির পাশে দুই ব্যক্তি শটগান হাতে প্রকাশ্যে মহড়া দেয়। এতে রায়হান মৃধাসহ স্থানীয়রা আতঙ্কে পড়েন। এর আগে একই এলাকায় বেশ কয়েকবার অপরিচিত ব্যক্তিদের দেশি অস্ত্র নিয়ে ঘোরাফেরার ঘটনাও ঘটেছে।
রায়হান মৃধা জানান, এই ঘটনায় তিনি চরভদ্রাসন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে—লোহার টেক গ্রামের চুননু খানের ছেলে জুয়েল খান এবং সৈয়দ আনোয়ার হোসেনের ছেলে তৈয়বুর রহমান রাত সাড়ে ১১টার দিকে শটগান নিয়ে ঘুরে বেড়ান।
এছাড়া এলাকায় সম্প্রতি চুরির ঘটনা ব্যাপক হারে বেড়েছে। গত ৩১ অক্টোবর হাজিডাঙ্গী গ্রামের খায়ের মণ্ডল ও ওবায়দুল মণ্ডলের দুটি ষাঁড় চুরি হয়। পাশাপাশি উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধারাবাহিকভাবে চুরি হচ্ছে।
টিলার চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুই দফায় ফ্যান, মোটর পাম্প ও বৈদ্যুতিক তার চুরি হয়েছে। আব্দুল শিকদার ডাংগী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকেও পাঁচটি ফ্যান, মোটর পাম্প ও সৌর বিদ্যুতের ব্যাটারি চুরি হয়েছে। দক্ষিণ নবাবগঞ্জ (খালাসি ডাংগী) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকেও একাধিকবার ফ্যান, ব্যাটারি ও তার চুরি হয়েছে। পদ্মা সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর আলমনগর, পূর্ব চরভদ্রাসন ও ইউসুফ শিকদার ডাংগী বিদ্যালয়েও একই ধরনের চুরির ঘটনা ঘটেছে।
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আজিজ হোসেন বলেন, “বেশিরভাগ বিদ্যালয়ে নৈশ্য প্রহরী না থাকায় চুরির ঘটনা ঘটছে।”
অভিযোগ রয়েছে, চরভদ্রাসন থানায় বহু অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরে আমলে নেওয়া হচ্ছে না। ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, অনেক সময় অভিযোগের মূল বিষয় উপেক্ষা করে উল্টোভাবে শুনানি পরিচালনা করা হয়, ফলে ভুক্তভোগীরাই বিপদে পড়েন।
এ বিষয়ে থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই রফিকুল ইসলাম বলেন, “বিষয়টি দেখছি।”
আর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সার্কেল) আজমির হোসেন জানান, “রাতে পাখি শিকারের নামে শটগানের মহড়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এলাকাবাসী ও সুশীল সমাজের নেতারা বলেন, “প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া এবং বিদ্যালয়গুলোতে বারবার চুরি পুলিশের ঢিলেঢালা নজরদারির ফল। এখনই কঠোর ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরও অবনতির আশঙ্কা রয়েছে।”