হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর প্রতিনিধি: ফরিদপুরের সালথায় আমন জাতের ধান কাটা ও মাড়াই শুরু হয়েছে। কৃষক এখন এ কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এলাকার মাটি ও আবহাওয়া আমন ধান চাষের জন্য উপযোগী। তাইতো উৎপাদন ভালো হয় বলে এ উপজেলা ফসলটির জন্য বেশ পরিচিত।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার মাঠে মাঠে এখন সোনালি আমন ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজ চলছে। কৃষকরা যেভাবে মাঠে কাজ করছেন, তাতে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। ধান কেটে শুকিয়ে মেশিনের মাধ্যমে, কেউবা হাতে মাড়াই করছেন। এর পাশাপাশি, গরুর খাদ্য হিসেবে খড়ের চাহিদাও বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকরা ভালো দাম পাচ্ছেন। চাষাবাদে বেশ কিছু সমস্যার সম্মুখীন হলেও, ফলন ভালো হওয়ায় তারা কিছুটা আশ্বস্ত।
কৃষকরা বলছেন, বর্তমানে বাজারে ১২'শ থেকে ১৩'শ টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে ধান। অসময়ে আগাম এ ফসল কাটার কাজ পেয়ে খুশি কৃষি শ্রমিকরাও। এ ধান বিক্রির টাকায় কৃষক পেঁয়াজের আবাদ করছেন। এ কারণে বাড়তি অর্থ আসায় খুশি তারা। কৃষকদের দাবি, ভালো দাম পেলে তারা এ ধরনের চাষাবাদে আরও আগ্রহী হবেন।
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে সালথা উপজেলায় আমন ধানের চাষ হয়েছে ১২ হাজার ৩'শ হেক্টর।
সালথা উপজেলার খোয়াড় গ্রামের কৃষক মো. মিলু মাতুব্বর বলেন, ‘আমন জাতের ধানের চাষ করেছি। ফলন ও দাম ভালো পাচ্ছি। এখন পেঁয়াজের আবাদ করব। এ ফসল বিক্রির টাকা অন্য কৃষিকাজের প্রয়োজন মেটানো যাচ্ছে।’
একই এলাকার কৃষিশ্রমিক বাবু সরদার বলেন, এ সময় মাঠে কাজ ছিল না। অনেক কষ্টে দিন পার হচ্ছিল। আগাম ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ করে সংসারের অভাব দূর হয়েছে। এ কাজ শেষ হলে পেঁয়াজের কাজ শুরু হবে।
সালথা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুদর্শন শিকদার বলেন, 'এবার আমন ধানের যে ফলন পাওয়া যাচ্ছে, তা আশানরূপ। গত মৌসুমের চেয়ে এবার আমন জাতের ধানের ফলন বেশি হবে। সেই সঙ্গে ভবিষ্যতে আবাদ ও ফলন বৃদ্ধি পাবে। ধানের ফলন ও ভালো দাম পাওয়ায় খুশি কৃষকও। উৎপাদন বাড়াতে দুই ফসলি জমিকে তিন ফসলি করতে কাজ করছে কৃষি বিভাগ।'
তিনি আরও বলেন, 'উপজেলায় ইতোমধ্যে আগাম আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। বিশেষ করে স্বল্পবয়সী ধান কাটা ও মাড়াই চলছে। এ ফসল আগাম চাষ করে আবার সেই জমিতে কৃষকরা আগাম পেঁয়াজ চাষ করতে পারেন। এ কারণেই তারা বেশি আগ্রহী হচ্ছেন। এ জন্য কৃষি বিভাগ মৌসুমের শুরু থেকে প্রচারসহ কৃষকদের ধান উৎপাদনে কাজ করে আসছে বলে জানান তিনি।'