সোহাগ হাসান জয়,সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জে যমুনা রেল সেতুর পিলারে চিরচির ফাটলের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এই ভিডিও এর বিষয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, এগুলো আসল ফাটল নয়, প্রচণ্ড গরমের কারণে হেয়ারক্র্যাক বা চিরচির ফাঁকা সৃষ্ট হয়েছে। সেতুর ৮ থেকে ১০টি পিলারের নিচের স্থানে হেয়ারক্র্যাক শনাক্ত দেখা দেওয়ায় ওই স্থানেগুলোতে বিশেষ আঠার প্রলেপ দিয়ে মেরামতের কাজ করা হচ্ছে।
শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) বেলা ১১ টার দিকে যমুনা রেলওয়ে সেতু প্রকল্পের সহকারী প্রধান প্রকৌশলী নাইমুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এরআগে, বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) বিকেল থেকে একাধিক ফেসবুক পেজে যমুনা রেল সেতুর পিলারের ফাটলের কয়েকটি স্থানের ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে সেটা ভাইরাল হয়েছে।
নাইমুল হক বলেন, এটি নির্মাণ কাজের কোনো ত্রুটি নয়, আবার হানিকম্ব হয়েছে সেটাও নয়। মূলত প্রচণ্ড গরম বা বৈরী আবহাওয়ায় সেতুর পিলারে শূন্য দশমিক এক থেকে তিন মিলিমিটার পর্যন্ত ক্ষুদ্র আকৃতির ‘হেয়ার কাট’ বা চিরচির ফাঁকা সৃষ্টি হয়েছে। এটা সেতুর কংক্রিটের অবকাঠামোর স্থাপনার জন্য ক্ষতিকর না। ফলে ট্রেন চলাচলে কোনো প্রভাব পড়বে না। ফেসবুকে কেউ অসৎ উদ্দেশ্যে চিরচির স্থানের ছবি বড় আকারে দেখিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করে জন সাধারনের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
সেতুটি দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর চলতি বছরের (১৮ মার্চ) সেতুর পূর্বপাশে ইব্রাহিমাবাদ স্টেশশে বেলুন উড়িয়ে রেলসেতুর উদ্বোধন করা হয়। এতে রেলপথের সম্ভাবনাময় অগ্রযাত্রার এক নতুন দ্বার উন্মোচন হয়। সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১৬ হাজার ৭৮০ দশমিক ৯৬ কোটি টাকা। যার ৭২ দশমিক ৪ শতাংশ ঋণ হিসেবে দিয়েছে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) এবং বাকি অর্থ দিয়েছে সরকার। জাপানের ওটিজি এবং আইএইচআই যৌথভাবে সেতুটি নির্মাণ করেছে।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২৯ নভেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি এ সেতুর নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পরে ২০২১ সালের মার্চে পিলার নির্মাণের জন্য পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয়। ১৬ হাজার ৭৮১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে দেশের দীর্ঘতম যমুনা রেলসেতু। ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতুতে রয়েছে ৫০টি পিলার ও ৪৯টি স্প্যান। এটি ২০২৫ সালের ১৮ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়। এই রেলসেতুর দুটি লাইন (ডুয়েল গেজ ডাবল ট্র্যাক) রয়েছে। গত ১২ ফেব্রুয়ারি থেকেই নতুন সেতুর একটি লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছিল।