অমর ডি কস্তা, নাটোর প্রতিনিধি: নাটোরের বড়াইগ্রামে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর দখলে থাকা সরকারী জায়গা জোরপূর্বক দখল করে বিএনপি’র অফিস ঘর নির্মাণ করছিলো স্বেচ্ছাসেবক দল ও তাঁতী দলের কয়েকজন স্থানীয় নেতা-কর্মী। পরে খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) উপস্থিত হয়ে নির্মাণাধীন ওই ঘর ভাঙ্গার নির্দেশ দিলে তা ভাঙ্গা হয়।
পরবর্তীতে এই ঘটনার জের ধরে দখলদার চিহ্নিত ওই নেতা-কর্মীরা হামলা চালায় ওই বাজারের ইজারাদার স্থানীয় যুবদল নেতা বাবলু প্রামাণিকের ওপর। এতে গুরুতর রক্তাক্ত আহত হন তিনি। তাকে বাঁচাতে এগিয়ে এসে আহত হয় তার নাবালক ছেলে আবু তালহা। শনিবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার নগর মেরীগাছা বাজারে এই ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা আহত পিতা বাবলু প্রামাণিক (৫০) ও ছেলে আবু তালহা (১৭)কে উদ্ধার করে বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এ ঘটনায় বাবলু প্রামাণিক বাদী হয়ে রবিবার রাত ১০টার দিকে বড়াইগ্রাম থানায় ৮ জনকে আসামী করে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। আসামীরা হলেন, রায়হান (৩৫), আনোয়ার (৩২), ইউনুস (৫০), তাইজুদ্দিন (৪৮), হাসেম (৪৫), ফুয়াদ (৪২), বানি আমিন (৫৫) ও নাহিদ (৩৫)। এদের সকলের বাড়ি মেরীগাছা এলাকায়।
অভিযোগে জানা যায়, মেরীগাছা বাজারে দীর্ঘবছর ধরে সরকারী জায়গায় কাঁচামালের ব্যবসা করে আসছিলো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বিদ্যুৎ মোল্লা। সম্প্রতি তার ব্যবসা সাময়িক বন্ধ থাকার সুযোগে স্থানীয় ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দল ও তাঁতী দলের কয়েকজন চিহ্নিত নেতা-কর্মী ওই জায়গা দখল করে এবং বিএনপি’র অফিস ঘর নির্মাণের কথা বলে সিমেন্টের খুঁটি দিয়ে টিনের ছাপড়া দেওয়ার কাজ শুরু করে। খবর পেয়ে ইউএনও লায়লা জান্নাতুল ফেরদৌস শনিবার সকাল ১১টার দিকে সরেজমিনে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ঘটনার সত্যতা পায় এবং তাৎক্ষনিক তিনি ওই নির্মাণাধীন ঘর ভাঙ্গার নির্দেশ দিলে তা ভাঙ্গা হয়। ইউএনও ঘটনাস্থল ত্যাগ করার পর বেলা ১২টার দিকে উল্লেখিত ওই নেতা-কর্মীরা আতর্কিত হামলা চালায় ইজারাদার বাবলু প্রামাণিকের ওপর। তারা ধারালো হাসুয়া, লোহার পাইপ, লোহার হাতুড়ি ও লোহার পাইপ দিয়ে উপর্যুপরী আঘাত করলে এতে রক্তাক্ত জখম হয় বাবলু প্রামাণিক। এ সময় পিতাকে উদ্ধার করতে এগিয়ে এলে ছেলে তালহা হামলা শিকার হয় এবং গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়। এসময় স্থানীয়রা এগিয়ে এসে হামলার শিকার পিতা-পুত্রকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
আহত বাবলু প্রামাণিক জানায়, বাজারের সরকারী জায়গা দখল করে ঘর নির্মাণ হচ্ছে এ খবর ইউএনও স্যারকে আমি দিয়েছি এমন সন্দেহ করে ওরা আমার ওপর হামলা চালিয়েছে। আমার নাবালক ছেলে আমাকে বাঁচাতে এসে সেও গুরুতর জখম হয়েছে। আমিতো এ খবর ইউএনও স্যারকে দেই নাই। তাহলে কেন আমাকে হত্যার চেষ্টা করা হলো। আমার ও আমার ছেলের ওপর অন্যায়ভাবে এই হামলার উপযুক্ত বিচার চাই।
বড়াইগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম সারোয়োর হোসেন জানান, এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।