শিরোনাম

প্রকাশিত : ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১২:২৭ দুপুর
আপডেট : ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১২:২৭ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বেনাপোলে যুবদল নেতা খালেক হত্যা মামলায় ১৩ আসামি, চার পুলিশ কর্মকর্তাও অভিযুক্ত

আইরিন হক, বেনাপোল (যশোর): যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানাধীন পুটখালি ইউনিয়নের যুবদল নেতা আব্দুল খালেক হত্যাকাণ্ডে ১৩ বছর পর চারজন পুলিশ কর্মকর্তাসহ মোট ১৩ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নিহত খালেকের ছেলে আহসান হাবীব যশোর আদালতে মামলাটি করেন। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মামলা করতে না পারলেও সরকার পরিবর্তনের পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় এবার তিনি আদালতের শরণাপন্ন হন।

সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবা শারমিন অভিযোগ আমলে নিয়ে পুলিশের দায়ের করা পূর্বের মামলার নথি ও সিডি তলব করেন এবং আগামী ২০ নভেম্বর আদেশের জন্য দিন ধার্য করেন। বিষয়টি বাদীপক্ষের আইনজীবী দেবাশীষ দাস নিশ্চিত করেছেন।

আসামির তালিকা

মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে তারা হলেন—

  • রেজাউল ইসলাম রেজা ও তার ভাই আজিজুল ইসলাম
  • শাহাদৎ হোসেন
  • কামাল হোসেন
  • তারিকুল ইসলাম
  • আব্দুর রব
  • ইয়াকুব আলী
  • জিয়াউর রহমান
  • রিয়াজুল ইসলাম
  • সাবেক এসআই আবুল কালাম আজাদ
  • সাবেক ওসি (তদন্ত) সৈয়দ লুৎফর রহমান
  • সাবেক এসআই শিকদার মতিয়ার রহমান
  • তৎকালীন ডিবি এসআই আবুল খায়ের মোল্লা।

বাদীপক্ষের দাবি, এদের সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত এবং চাঁদা না দেওয়ার কারণে আব্দুল খালেককে হত্যা করা হয়।

২০১২ সালের ৩ জানুয়ারি দুপুরে ছেলে মুন্নাকে বেনাপোল হাইস্কুলে ভর্তি করানোর পর মোটরসাইকেলে করে তেল নিতে যান আব্দুল খালেক। দুপুর ১টা ২০ মিনিটের দিকে দিঘিরপাড় এলাকায় শাহজালাল ফিলিং স্টেশনের কাছে তিনি সশস্ত্র হামলার শিকার হন।

অভিযোগ অনুযায়ী, রেজাউল, আজিজুল, ইয়াকুব ও জিয়াউর রহমান আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি চালান। রেজাউলের গুলি খালেকের মাথা ভেদ করে বেরিয়ে যায়, যা ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু ঘটায়। অন্য আসামিরা চারপাশ ঘিরে সহযোগিতা করে।

মামলায় বলা হয়েছে, তৎকালীন এসআই আবুল কালাম আজাদ প্রকৃত আসামিদের রক্ষা করতে নিজের বাদী হয়ে মনগড়া মামলা দায়ের করেন। তদন্তে সাবেক ওসি সৈয়দ লুৎফর রহমান, এসআই শিকদার মতিয়ার রহমান ও ডিবি এসআই আবুল খায়ের মোল্লাও আসামিদের বাঁচাতে ভূমিকা রাখেন। ২০১৩ সালের ১৩ মার্চ তারা চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে প্রকৃত আসামিদের দায়মুক্ত করেন। এর পর থেকেই নিহতের পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় পালিয়ে থাকতে বাধ্য হয়।

মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, খালেক হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন পুটখালীর সিরাজুল ইসলামও, তবে তিনি বর্তমানে মৃত।

উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যশোরের বেনাপোল সীমান্ত এলাকায় প্রায় ১৬০ জন খুন হয়েছেন। অধিকাংশ হত্যার পেছনে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার, প্রতিশোধ ও আক্রোশমূলক দ্বন্দ্ব দায়ী ছিল বলে স্থানীয়রা জানান।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়