রাজশাহীতে দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ছাত্রী এক শিক্ষককে ছুরি মেরেছে। ঘটনাটির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। মঙ্গলবার বেলা পৌনে দুইটার দিকে নগরের সপুরা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। স্কুল থেকে টিসি দেওয়ায় ক্ষোভ থেকে সে এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আহত শিক্ষকের নাম মারুফ কারখী (৩৪)। তিনি রাজশাহী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের বাংলা বিষয়ের সহকারী শিক্ষক। মারুফ কারখীর ঘাড়ে ও হাতে জখম হয়েছে।
অভিযুক্ত ছাত্রীকে (১৬) পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সে রাজশাহী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। ‘উচ্ছৃঙ্খল আচরণের কারণে’ ২০২৩ সালে তাকে এ স্কুল থেকে টিসি দেওয়া হয়। এখন সে অন্য একটি স্কুলে দশম শ্রেণিতে পড়ে।
রাজশাহী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, টিসি দেওয়ায় স্কুলের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের ওপর ওই শিক্ষার্থীর ক্ষোভ ছিল। শুধু শিক্ষক মারুফ কারখী নন, যে কারও ওপর হামলা হতে পারত। দুর্ভাগ্যক্রমে শিক্ষক মারুফ কারখী হামলার শিকার হয়েছেন। তিনি বলেন, দুপুরে ওই ছাত্রী স্কুলের সামনের রাস্তায় অপেক্ষা করছিল। স্কুল ছুটি হলে শিক্ষক মারুফ কারখী স্কুটি নিয়ে বাসায় যাচ্ছিলেন। তখন সে ‘হেল্প, হেল্প’ বলে ডাকতে থাকে।
মেয়েটি বিপদে পড়েছে ভেবে ওই শিক্ষক স্কুটি থেকে নেমে তার কাছে যান। তখন কিছু বুঝে ওঠার আগেই মেয়েটি তাঁর গলা লক্ষ্য করে ছুরি চালায়। তখন ওই শিক্ষক হাত দিয়ে ছুরিটি ধরার চেষ্টা করেন। এতে তাঁর হাত ও ঘাড় কেটে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন মেয়েটিকে আটকে রেখে স্কুলে খবর দেন। স্কুল কর্তৃপক্ষ ওই শিক্ষককে রাজশাহীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নিয়ে যান। সেখানে ওই শিক্ষকের শরীরে তিনটি সেলাই লাগে। পরে ওই শিক্ষককে বাসায় পৌঁছে দেওয়া হয়।
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, ঘটনার পর ওই ছাত্রীর অভিভাবককে ফোন করে ডাকা হয়। অভিভাবক আসার পরে মেয়ের এমন কাণ্ডের কথা জানানো হয়। পরে ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের তিনজন স্টাফ তাঁদের বাসায় পৌঁছে দিয়ে আসেন। তবে এ নিয়ে আইনি কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ঘটনার একটি ভিডিওতে দেখা যায়, মেয়েটি অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করছে।
এ বিষয়ে রাজশাহী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাঈম আবদুল্লাহর পিএ আবদুর রউফ হোসেন জানান, এ বিষয়ে অধ্যক্ষ গণমাধ্যমে কথা বলবেন না।
নগরের বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাক আহম্মেদ জানান, এ ব্যাপারে স্কুল কর্তৃপক্ষ থানায় কোনো অভিযোগ করেনি। উৎস: প্রথম আলো।