প্রায় এক দশক কারাগারে আটক থাকার পর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন জনপ্রিয় ইসলামী লেখক ও ব্লগার শফিউর রহমান ফারাবী। শুক্রবার সকাল সোয়া ১০টায় তিনি গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান।
কাশিমপুর কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, জামিনের কাগজপত্র কারাগারে পৌঁছার পর তা যাচাই করা হয়। তার বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা না থাকায় তাকে মুক্তি দেওয়া হয়।
জানা গেছে, বিচারপতি মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি কে এম রাশেদুজ্জামান রাজার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ শফিউর রহমান ফারাবীর জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। আদালতে তার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন সিনিয়র আইনজীবী এসএম শাহজাহান ও মুহাম্মাদ হুজ্জাতুল ইসলাম খান। তাদের যুক্তি ছিল, চলতি মামলার চার আসামির স্বীকারোক্তিতে ফারাবীর নাম উল্লেখ নেই। কোনো প্রত্যক্ষ সাক্ষীও তার নাম বলেননি। এ ছাড়া তিনি নিজেও কোনো স্বীকারোক্তি দেননি। দীর্ঘ সময় কারাগারে থাকার বিষয়টিও বিবেচনায় নেওয়া হয়।
পরবর্তীতে চেম্বার আদালত রাষ্ট্রপক্ষের জামিন স্থগিতের আবেদন শুনানি শেষে ‘নো অর্ডার’ দেন। এতে হাইকোর্টের জামিন আদেশ বহাল থাকে।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি অমর একুশে গ্রন্থমেলা থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় লেখক অভিজিৎ রায়কে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ হামলায় তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যা গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় অভিজিতের বাবা অধ্যাপক অজয় রায় বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় মামলা করেন।
তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ছয় জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ওই বছরের ৬ আগস্ট ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ ২৮ জন সাক্ষী উপস্থাপন করে। ২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান পাঁচ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও শফিউর রহমান ফারাবীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। ওই বছরই ফারাবী হাইকোর্টে আপিল করেন।