মো:আদনান হোসেন ধামরাই ঢাকা থেকে: “মা তুমি চিন্তা করো না, আমি মরে গেলে তোমাকে বীরের মা বলে ডাকবে মানুষ। তুমি শহীদের মায়ের সম্মান পাবে। তোমাকে সবাই শ্রদ্ধা করবে”। গত বছর ৫ ই আগস্ট আন্দোলনে যোগ দিতে বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় মা বাধা দিলে এ কথা বলে বেরিয়ে যায় সাভার ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী আফিকুল ইসলাম সাদ। তার স্বপ্ন ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞানে পড়ার।কিন্তু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত হন তিনি।
আজকে ধামরাইয়ে শহীদ আফিকুল ইসলাম সাদের হত্যার এক বছর পূর্ণ হলো। গত বছর ৫ আগস্ট, ধামরাই হার্ডিঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সামনে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে তিনি শহীদ হন।
আফিকুল ইসলাম সাদ, যিনি সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র ছিলেন, তিনি "বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন"-এর একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে এক দফা এক দাবী আদায়ের আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে তিনি নিহত হন।ধামরাই উপজেলায় প্রথম শহীদ তিনি। নিহত সাদের গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার দড়গ্রাম এলাকায়। তার বাবার নাম শফিকুল ইসলাম। তিনি সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন।
নিহতের বাবা শফিকুল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব শহীদদের আত্মার শান্তির কামনা করে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে প্রথমবার বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, ২০২৪ সালেও সরকারের পতনের জন্য শতশত ছাত্রজনতা শহীদ হয়েছেন। যেমন ৭১ সালে যারা শহীদ হয়েছে, তাদের স্মরণে জাতীয় স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হয়েছে। আমি চাই এবারের পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ২০২৪ সালে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভ করা হোক।
গত বছর ৫ আগস্ট ধামরাই হার্ডিঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের সামনে আন্দোলনরত অবস্থায় পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হন সাদ। পরে এনাম মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে মৃত্যু হয় তার।পরে সেখান থেকে স্বজনরা তার মরদেহ নিয়ে প্রথমে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে, পরে সাভার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে, এরপর ধামরাই হার্ডিঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ মাঠে ও সবশেষ তার নিজ গ্রাম সাটুরিয়ার দড়গ্রামে জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হওয়ার পর দাফন সম্পন্ন করা হয়। আজ, সাদের স্মরণে ধামরাইয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।