ফরহাদ হোসেন, ভোলা প্রতিনিধি: ঢাকা উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজে প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া মাসুমা বেগমকে (৩৫) ভোলার বোরহানউদ্দিন নিজ গ্রামে দাফন করা হয়েছে।
রোববার সকাল ৯টার দিকে বোরহানউদ্দিন উপজেলার বড় মানিকা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের কোড়ালিয়া গ্রামে তার জানাজার নামাজ শেষে রুন্দি বাড়ির (শ্বশুর বাড়ি) পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। মাসুমা ওই বাড়ির সেলিম রুন্দির স্ত্রী।
জানাযায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রায়হান উজ্জামানসহ বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ অংশ নেন। মাসুমা বেগম ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারী হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে কর্মরত ছিলেন। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে গ্রামের বাড়িতে।
এর আগে গত শনিবার (২৬ জুলাই) সকাল ১০টার পরে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
মাসুমার স্বামী মো. সেলিম বলেন, আমার স্ত্রী মাসুমা বেগম উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে অফিস সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। অভাবের তাড়নায় আমাদের বিয়ের পরপরই ঢাকায় চলে যাই। দুই ছেলে-মেয়েকে নিয়ে আমরা উত্তরার নয়ানগর এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতাম। গত ২১ জুলাই দুপুরে স্কুল চত্বরে প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমানটি বিধ্বস্ত হয়।
সে আগুনে মাসুমার শরীরের ৯০ শতাংশ দগ্ধ হয়। সেদিন স্কুলটি ছুটি হওয়ার পর মাসুমা বাচ্চাদের নিয়ে বের হচ্ছিল, এমন সময় দুর্ঘটনাটি ঘটে। ইচ্ছে করলে সে বের হয়ে নিজের জীবন রক্ষা করতে পারত। কিন্তু আমাদেরও বাচ্চা আছে, সে চিন্তা করে স্কুলের অন্য বাচ্চাদের বাঁচাতে গিয়ে মাসুমা আগুনে দগ্ধ হন। পরে তাকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়। সেখানেই আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল শনিবার সকালে মাসুমা মৃত্যুবরণ করেন। এছাড়া তিনি তার স্ত্রীর জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।
এছাড়া মাসুমার পরিবারের পাশে থেকে সহযোগিতার কথা জানিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য ও ভোলা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো.হাফিজ ইব্রাহিম।
উল্লেখ্য, উত্তরার মাইলস্টোন ট্রাজেডিতে এর আগে অগ্নিদগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন দৌলতখান উপজেলার দক্ষিণ জয়নগর ইউনিয়নের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আশরাফুল ইসলাম নীরব ও তাহমিনা দম্পতির দুই সন্তান মাইলস্টোনের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী নাজিয়া তাবাসসুম নিঝুম ও তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র আরিয়া নাশরাফ নাফি। সর্বশেষ মৃত্যুবরণ করেন প্রতিষ্ঠানটির অফিস সহকারী মাসুমা বেগম। এ নিয়ে মাইলস্টোন ট্রাজেডিতে প্রাণ হারালেন দুই শিশুসহ ভোলার ৩ জন।