ময়মনসিংহ শহরের ঐতিহাসিক হরিকিশোর রোডের প্রায় ২০০ বছরের পুরোনো বাড়িটি ভাঙা নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছে শহরজুড়ে। পুরাতন জরাজীর্ণ এ ভবনটি ভেঙে সেখানে নতুন ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি। বাড়িটি সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষের স্মৃতিবিজড়িত উল্লেখ করে সেটি না ভাঙার আহ্বান জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলাদেশ সরকারকে এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে ভারত সরকারকে বিষয়টিতে নজর দিতে অনুরোধ করেন।
এমন পরিস্থিতিতে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসনের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পরে বুধবার বিকেল ৪টায় জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে তাঁর কার্যালয়ে একটি বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. মুফিদুল আলম বলেন, ‘এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশের সুনাম ক্ষুণ্ণ করার উদ্দেশ্যে একটি গোষ্ঠী মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘যে ভবনটি নিয়ে এই বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, সেটি বিশ্বখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায় বা তার পূর্বপুরুষের পৈতৃক বাড়ি নয়। সংশ্লিষ্ট সকল খতিয়ান ও রেকর্ডপত্র, যেমন সিএস, আরএস ইত্যাদি যাচাই করা হয়েছে। প্রতিটি খতিয়ানেই স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, এই সম্পত্তিতে সত্যজিৎ রায় বা তার পরিবারের কোনো সদস্যের নাম নেই। বর্তমানে আরএস রেকর্ডে এটি বাংলাদেশ সরকারের নামে লিপিবদ্ধ।’
ডিসি মুফিদুল আলম বলেন, ‘২০০৮ সালে বাংলাদেশ সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ শিশু একাডেমির নামে এই জমিটি যথাযথ প্রক্রিয়ায় বন্দোবস্ত করা হয় এবং তাদের নামে দলিল ও খতিয়ান রয়েছে। শিশু একাডেমি মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে ভবনটি ভাঙার কার্যক্রম শুরু করেছে, যা সরকারি বিধি অনুযায়ী সম্পূর্ণ বৈধ। এতে কোনো নিয়মের ব্যত্যয় ঘটানো হয়নি।'
এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর বিমল কান্তি দে, স্বাধীনতা পুরস্কারপ্রাপ্ত নাট্যকার ও কথা সাহিত্যিক ফরিদ আহাম্মেদ দুলাল এবং ঐতিহাসিক স্থাপত্যের ইতিহাস সংরক্ষক স্বপন ধর। উৎস: সমকাল।