ফিরোজ আহম্মেদ, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: রাজনীতির মাঠে আবারও দেখা গেল পরিচিত এক ‘রঙ বদলানো’ চিত্র। ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম দুলালের ভাই নুরে আলম বিশ্বাস ওরফে আলম বিশ্বাস সম্প্রতি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশে যোগ দিয়েছেন। যিনি একসময় আওয়ামী লীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন, এমনকি মৎস্যজীবী লীগের নেতাও ছিলেন, তিনিই এখন হয়ে উঠেছেন ইসলামপন্থী রাজনীতির মুখ।
সম্প্রতি শহরের এক আলোচনা সভায় ইসলামী আন্দোলনের অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন আলম বিশ্বাস। সেই আলোচনা অনুষ্ঠানের পর থেকে তিনি এখন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের উপদেষ্টার দায়িত্বও পেয়েছেন। ঝিনাইদহ জেলা শাখার উপদেষ্টা হিসাবে শপথও গ্রহণ করেছেন তিনি।
তবে তার এ ধরণের অবস্থান পরিবর্তনে ক্ষুব্ধ স্থানীয় জনতা। কেউ বলছেন, "ক্ষমতার পালা বদল দেখেই অনেকে চেহারা বদলাতে শুরু করেছেন। জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে রাজনীতি টিকে রাখা যায় না।"
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক আওয়ামী লীগ নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, "এইসব সুবিধাবাদীরা রাজনীতিকে কলুষিত করছে। যেখানে দল দুঃসময়ে ছিল, সেখানে তারা ছিলেন না। এখন পরিস্থিতি বদলাতে দেখেই তারা ধর্মের নামে নতুন মঞ্চে উঠছেন।"
এর আগে শহরের দেয়ালে দেয়ালে কখনো আওয়ামী লীগ নেতার ছবি, কখনো মৎস্যজীবী লীগের নাম, আর এখন ইসলামী আন্দোলনের ব্যানারে তার উপস্থিতি—সব মিলিয়ে সাধারণ মানুষের মনেও তৈরি হয়েছে দ্বিধা ও বিরক্তি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এ ধরণের ‘রাজনৈতিক রূপ পরিবর্তন’ গণতন্ত্র ও দলীয় শৃঙ্খলার জন্য হুমকি স্বরূপ। রাজনীতিতে আদর্শের জায়গা দখল করে যদি কেবল সুবিধা আর পদ-লাভ হয়, তাহলে ভবিষ্যতে জনআস্থা হারাবে সব রাজনৈতিক দলই।
এ ব্যাপারে আলম বিশ্বাস বলেন, আমি বরাবরই মসজিদ মাদ্রাসা নিয়ে কাজ করি। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এ যোগদান করেছি। আলম বিশ্বাস মৎস্যজীবী লীগ করতেন কি কারণে সেই ব্যাখা দিয়ে বলেন, নিজে শৈলকুপা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট করার জন্য মুলত মৎস্যজীবী লীগ করতেন।
এ ব্যাপারে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ জেলা শাখার সভাপতি ডাঃ এইচ এম মোমতাজুল করীম বলেন, আলম বিশ্বাস দলবল নিয়ে চরমোনাই গিয়ে নায়েবে আমীর ও পীর সাবেহের কাছে সদস্য ফরম পুরণ করার পর আমরা তাকে গ্রহন করি। তার আগে আমরা গ্রহন করিনি। তিনি বলেন, দাওয়াতের মাধ্যমে তিনি সেখানে গেছেন। এ বিষয়ে পীর সাহেব বলতে পারবেন, আমরা আর কিছুই বলতে পারবো না।