রাজশাহীতে মওসুমি ফলের বাজারে ধস: লোকসানে হিমসিম চাষি ও ব্যবসায়ীরা
ইফতেখার আলম বিশাল : রাজশাহীতে চলতি মওসুমে ফলের বাজারে ভয়াবহ ধস নেমেছে। একদিকে আমের দাম না থাকায় হতাশ আম চাষি ও ব্যবসায়ীরা, অন্যদিকে আমের প্রভাবে অন্যান্য ফলের বাজারেও পড়েছে নেতিবাচক প্রভাব। ড্রাগন, পেয়ারা, লিচু—সব ফলের দাম পড়ে গিয়ে উৎপাদক ও ব্যবসায়ীরা পড়েছেন চরম বেকায়দায়।
রাজশাহীর সবচেয়ে বড় আমের বাজার পুঠিয়ার বানেশ্বর থেকে জানা গেছে, আজ মঙ্গলবার হিমসাগর জাতের ভাল মানের আম বিক্রি হয়েছে ২০০০ থেকে ২১০০ টাকা মণ, নিম্নমানের হিমসাগর ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা। ল্যাংড়া ১৩০০ থেকে ১৬০০, আম্রপালি ১৯০০ থেকে ২০০০ এবং লক্ষণভোগ বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা মণ। লক্ষণভোগের এমন দরপতনে অনেক চাষি গাছ থেকেই আম পাড়ছেন না। আবার অনেকে বাধ্য হয়ে পাড়লেও বিক্রি না হওয়ায় পচে যাচ্ছে ফল।
রাজশাহী নগরীর আড়ত ও বাজারে আমের দাম কিছুটা এক। ফেরিওয়ালারা খিরসাপাত আম বিক্রি করছেন ২৫-৩০ টাকা কেজিতে, লক্ষণভোগ ১০-১৫ টাকায়। আড়তে ভাল মানের আমের খুচরা দাম ৪০-৪৫ টাকা কেজি, তবে অধিকাংশ জায়গায় ৩০-৩৫ টাকায় মিলছে আম। ঈদ উপলক্ষে মানুষ শহর ছাড়ায় আমের চাহিদা আরও কমে গেছে। ফলে পচে নষ্ট হয়েছে প্রচুর আম, এতে বড় ক্ষতির মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।
বানেশ্বরের আম ব্যবসায়ী আয়েস ও মুনসুর রহমান বলেন, "ঢাকার তুলনায় রাজশাহীতে দাম কিছুটা বেশি হলেও তাতেও লাভ হচ্ছে না। গাড়িভাড়া দিয়ে ঢাকায় নিয়ে গেলে লোকসান গুনতে হয়।"
ড্রাগন চাষিরাও পড়েছেন বিপাকে। মে মাসে যেখানে ড্রাগনের কেজি ছিল ৫৫০-৬০০ টাকা, এখন তা নেমে এসেছে খুচরা বাজারে ১৪০-১৫০ ও পাইকারিতে ১১০-১১৫ টাকায়। দাম না থাকায় অনেকেই ফল তুলছেন না। আবার গাছে রাখলে নতুন ফল আসতে দেরি হওয়ায় বাধ্য হয়ে তুলছেনও অনেকে।
গোদাগাড়ীর ছয়ঘাটি এলাকার ড্রাগন চাষি রকি জানান, "ফল তুললে গাছে নতুন ফুল আসবে, না তুললে আসবে না। এখন লোকসান মেনে ফল তুলছি।" লিচুর মৌসুম প্রায় শেষের পথে। বর্তমানে ভাল মানের লিচু বিক্রি হচ্ছে ৩৫০-৪০০ টাকা শতকে। শুরুতে কিছুটা দাম উঠলেও এখন তা পড়ে গেছে।