চকরিয়ায় অবস্থিত গ্রামীণ মৎস্য ও পশুসম্পদ ফাউন্ডেশনের ঘেরে ডাকাতি হওয়ার প্রায় দুইদিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ কোন ডাকাতকে গ্রেফতার করতে পারেনি। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে চকরিয়া সুন্দরবনের রামপুর মৌজার ৩০০ একর বিশিষ্ট এ চিংড়ি ঘের পরিদর্শন করেছেন চকরিয়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার অভিজিৎ দাশ ও চকরিয়া থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলামসহ একদল পুলিশ।
এদিকে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠিত ফাউন্ডেশনের চিংড়ি ঘেরে নতুন করে ডাকাতির ঘটনায় চকরিয়া এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। জানা যায়, গত মঙ্গলবার গভীর রাত আড়াইটার দিকে মুখোশ পরিহিত অস্ত্রধারী ৭-৮ জন ডাকাত গ্রামীণের খামার অফিস এলাকায় ঢুকে পড়ে। প্রত্যেকের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। ডাকাতেরা খামার অফিসের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে জিম্মি করে বিক্রির জন্য প্যাকেট করা বাগদা, কোরাল, বাটাসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৫০ হাজার টাকার মাছ লুট করে নিয়ে যায়। ঘের কর্মচারীদের দুটি মোবাইল ও ছয়টি টর্চলাইটও লুট করে নেয়। এ ডাকাতির সময় ঘেরের চার কর্মচারী আহত হয়েছেন। মারধরে ঘেরের মসজিদের ইমাম মোজাম্মেল হক, কর্মচারী নাসির উদ্দিন, মো. মোজাম্মেল ও মো. মিজান আহত হয়েছেন।
এলাকাবাসী জানান, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ মৎস্য ও পশুসম্পদ ফাউন্ডেশনের চিংড়ি ঘেরে নতুন করে ডাকাতির ঘটনায় সাধারণ মানুষ বিস্মিত হয়েছে।
ডাকাতির বিষয়টি নিশ্চিত করে গ্রামীণ মৎস্য ও পশুসম্পদ ফাউন্ডেশনের খামার ব্যবস্থাপক উৎপল কান্তি চৌধুরী জানান, বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করা হলে তারা চকরিয়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার অভিজিৎ দাশ ও চকরিয়া থানার ওসি)সরেজমিনে পরিদর্শন করে নতুন মামলা দায়ের করার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু আগে অনুরূপ দুইটি ঘটনায় মামলা চলমান থাকার পরেও সংশ্লিষ্ট কেউ শাস্তি না পাওয়ায় নতুন করে ডাকাতি করতে সাহস পেয়েছে পার্শ্ববর্তী সওদাগরঘোনা এলাকার এসব ডাকাত। ফল গ্রামীণের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত ছাড়া মামলা করার ব্যাপারে তিনি দ্বিধান্বিত।
উৎপলের তথ্য অনুযায়ী, এর আগে ২০২১ সালের ৫ জুলাই ও ২০২৪ সালের ৩ জুন দুই দফা ঘেরটি দখলে নিয়েছিল সন্ত্রাসীরা। গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সন্ত্রাসীরা ঘের ছেড়ে পালিয়ে গেলে গ্রামীণ মৎস্য ও পশুসম্পদ ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ আবার মাছ চাষ শুরু করে। সন্ত্রাসীদের দখলের ঘটনায় ২০২১ সালে চকরিয়া থানায় মামলা করা হয়েছিল। সেটি চলমান রয়েছে।
এ বিষয়ে চকরিয়া থানার ওসি শফিকুল ইসলাম জানান, খামার ব্যবস্থাপকের মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ ব্যাপারে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।