আইরিন হক, বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি: বিভিন্ন সময় চাকরির প্রলোভনে ভারতে পাচারের শিকার হওয়া ৩৫ জন বাংলাদেশি নাগরিককে আজ (২৭ মে) দুপুর থেকে বিকেলের মধ্যে ভারতের পেট্রাপোল চেকপোস্ট হয়ে বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ফেরত পাঠাবে ভারতীয় পুলিশ। ফেরত আসা ব্যক্তিদের মধ্যে ১৪ জন নারী ও ২১ জন পুরুষ রয়েছেন।
স্বদেশ প্রত্যাবাসন আইনের আওতায় তাদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে বলে জানা গেছে। ফেরত আসাদের মধ্যে রয়েছেন—আপন চন্দ্র সিংহ, আসমা খাতুন, আসমাউল হোসেন, বিউটি রানি দেবনাথ, রহমত আলি, জিয়াউর রহমান, রাখি সানা, আয়াত মোড়ল, রিমি মোড়ল, তহমিনা আক্তার, শাকিল হাওলাদার, সম্রাট গুপ্ত, আকাশ হক, শাহিনুর আলম, হানিফ আলি, দেবজিৎ রয়, রাসেল বাবু, ইব্রাহিম, সফর শেখ, আব্দুস সবুর, আল আমিন, সাজেদা ইয়াসমিন মুন্নি, সালমা, নাজমা খাতুন, ধিমান বারুই, শ্রাবণ হোসেন, রিফাত হোসেন, রিদয় রয়, ফারিয়া খান, জোহরা বেগম, সুমাইয়া আক্তার, নিঝুম দে, মিলি আক্তার, সিথি রয় ও প্রিয়ন্তি রয়।
ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে আটক হওয়া এই ব্যক্তিরা পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সরকারি হোমে আশ্রয়ে ছিলেন। তাদের মধ্যে অনেকেই দুই থেকে আট বছর পর্যন্ত আটকে ছিলেন। তাদের বয়স ১০ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে বলে জানা গেছে।
ফেরত আসা ব্যক্তিদের গ্রহণ করে আইনি সহায়তা দেবে চারটি এনজিও—জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার, মহিলা আইনজীবী সমিতি, রাইটস ও মানব উদ্ধার ও শিশু সুরক্ষা সংস্থা।
শার্শা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমান জানান, ফেরত পাঠানোর সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হাতে পাওয়ার পর বেনাপোল সীমান্তে তাদের গ্রহণ করা হবে।
মানব উদ্ধার ও শিশু সুরক্ষা সংস্থার চেয়ারম্যান সৈয়দ খায়রুল আলম বলেন, তাদের তথ্যমতে ভারতে পাচারের শিকার এমন প্রায় ৫০ হাজার বাংলাদেশি নারী ও পুরুষ রয়েছে। তিনি জানান, আজ ফেরত আসা ব্যক্তিদের মধ্যে ৬ জনকে তারা আইনগত সহায়তা দেবেন। পাচারকারীরা এসব মানুষকে কাজ, প্রেম বা অন্যান্য প্রলোভনের মাধ্যমে ভারতে নিয়ে বিক্রি করে দিত এবং ঝুঁকিপূর্ণ কাজে বাধ্য করত।
চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার ইয়াহিয়া নামের একজন অভিভাবক জানান, তার নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়েকে চাকরির প্রলোভনে ভারতে পাচার করে বিক্রি করা হয়েছিল। মেয়েকে গ্রহণের জন্য তিনি বেনাপোলে উপস্থিত হয়েছেন।
এনজিও ও সরকারি সংস্থাগুলোর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আজকের এই প্রত্যাবাসন বাস্তবায়ন হচ্ছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাচার প্রতিরোধে আরও কঠোর নজরদারি, সচেতনতা এবং আইন প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।