এন এ মুরাদ, মুরাদনগর : কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরায় বিএনপি নেতার অবৈধ সয়াবিন তেলের কারখানায় অভিযান পরিচালনা করেছে প্রশাসন। বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার ৬নং বাঙ্গরা পূর্ব ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমের কারখানায় এ অভিযান পরিচালনা করেন মুরাদনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাকিব হাসান খান।
এ সময় ফরচুন সয়াবিন তেল , প্রাইম সয়াবিন তেল, বাড়িধারা সয়াবিন তেল , আলম সয়াবিন তেল ও মক্কা- মদিনা সরিষা তেলের স্টিকারসহ ১৪শ খালি বোতল জব্দ এবং দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এর আগে এপ্রিল মাসে এই কারখানায় একবার অভিযান চালিয়ে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল।
স্হানীয় সূত্রে জানা যায়, বাঙ্গরা বাজারের ব্যবসায়ী ও বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর আলম, তার ভাই জামাল হোসেনসহ তাদের একটি বিশাল চক্র রয়েছে যারা দীর্ঘদিন বাঙ্গরায় অবৈধভাবে ভারতীয় চিনি, চাল এনে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ব্যবসা করে আসছেন।
বাঙ্গরা হাইস্কুলের পাশে এদের ৪ তলা বাড়ি। এই বাড়ির সামনে গভীর রাতে বড় বড় কাভারভ্যান ও ডিস্ট্রিক্ট গাড়ীতে চিনি, চাল, ও তেলের ড্রাম লোড আনলোড করতে দেখা যায় । বাঙ্গরায় এদের কয়েকটি গোডাউন রয়েছে । গোডাউনগুলো থানার খুব নিকটে হলেও এবিষয়ে পুলিশের কোনো ভূমিকা লক্ষ করা যায় না।
বাড়ির চারতলা ফ্ল্যাটে নকল তেলের কারখানা বসিয়ে নকল ভোজ্য তেল বিভিন্ন নামে বাজারজাত করার বিষয়টি এলাকাবাসী জানলেও ভয়ে কেউ মুখ খোলেনা। তাঁরা বলেন, এটি প্রশাসনের কাজ। অভিযান পরিচালনা করে যাওয়ার পর পরই তাঁরা নকল কারখানা চালু করে পুরোদমে কার্যক্রম চালিয়ে যায়। গত মাসে ইউএনও স্যার অভিযান করে বন্ধ রাখতে বলে গেছেন কিন্তু তারা বন্ধ রাখেননি।
উপজেলা প্রশাসন জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রাতে বাঙ্গরা বাজারের অসাধু ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলমের নকল সয়াবিন কারখানায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় বিভিন্ন কোম্পানির মোড়কে খোলা তেল বোতলজাত করে বিক্রি করার অপরাধে ওই প্রতিষ্ঠানকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাকিব হাছান খাঁন বলেন, বাঙ্গরা বাজারে দীর্ঘদিন যাবত অবৈধভাবে প্রতারণা করে খোলা তেল বোতলজাত করে ভিন্ন ভিন্ন ব্রান্ডের নামে বাজারজাত করে আসছিল জাহাঙ্গীর আলম ও তার ছেলে ওমর ফারুক ।
বৃহস্পতিবার রাতে কারখানায় অভিযান পরিচালনা করে জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে ওমর ফারুককে ২ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৩ মাসের কারাদন্ড প্রদান করা হয়। পাশাপাশি অবৈধ এ কারখানা বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এর আগেও ওই কারখানায় অভিযান চালিয়ে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল। জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাকিব হাছান খাঁন।