শামীম মীর গৌরনদী (বরিশাল)প্রতিনিধি-ওজনে কম এবং রুগ্ন হওয়ায় জেলার গৌরনদী উপজেলায় বিতরণের জন্য আনা ৬৫টি বকনা বাছুর ফেরত পাঠিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক রিফাত আরা মৌরি। একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়ে নিজ উদ্যোগে এ অনিয়মের প্রতিবাদ করায় ইউএনওকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাকার সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে উপজেলার জেলে জনগোষ্ঠীর বাসিন্দারা।
তারা জানান, বছরের পর বছর ধরে ছাগল ছানা ও বাছুর বিতরণে নানানভাবে অনিয়ম করা হচ্ছে। যারমধ্যে শুধু ওজনে কম দেওয়াই নয়; রোগাক্রান্ত পশু বিতরণ করা হতো। কেউ এর প্রতিবাদ করলে তাদের নানানভাবে হেনস্তা করা হতো।
আজ বুধবার দুপুরে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশীয় প্রজাতির মাছ, শামুক সংরক্ষণ ও উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় গৌরনদী উপজেলা মৎস্য অফিস ও উপজেলা প্রশাসনের সহায়তায় উপজেলা পরিষদ চত্বরে ৬৫ জন মৎস্যজীবির মধ্যে বকনা বাছুর বিতরণের জন্য আনা হয়।
দেশীয় মাছের প্রজনন রক্ষার্থে ও জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে মৎস্য অধিদপ্তর। সিমেন্স এলাইন্স বিডি লিমিটেড নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিক ধীরেন্দ্র নাথ গৌরনদী উপজেলার ৬৫ জন সুবিধাভোগীর মধ্যে বাছুর সরবরাহের কাজ পেয়েছেন।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রসেনজিৎ দেবনাথ বলেন, সুবিধাভোগীদের মাঝে বকনা বাছুর বিতরণের জন্য এসে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রিফাত আরা মৌরি দেখতে পান বকনা বাছুর রুগ্ন এবং খুবই কম ওজনের। ৭০ কেজি ওজনের বাছুর দেওয়ার কথা থাকলেও ঠিকাদারের সরবরাহকৃত বাছুরের ওজন ছিল ৫০ থেকে ৫৫ কেজি। তাই ইউএনও বিতরণ বন্ধ করে বাছুর ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছেন।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক ধীরেন্দ্র নাথের পক্ষে আসা ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, দিনাজপুর থেকে ট্রাকযোগে বাছুরগুলো আনার কারনে ওজন কিছুটা কমে গেছে।
উল্লেখ্য, এর আগে চলতি বছরের ২৭ ফেব্রæয়ারি একই প্রকল্পের মাধ্যমে ফোকাস ট্রেডিংয়ে নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গৌরনদীতে বাছুর বিতরণের জন্য এসে তোপের মুখে পরেছিলেন। ওইসময়ও রোগাক্রান্ত এবং ওজনে কম থাকায় তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক মো. আবু আবদুল্লাহ খান বাছুর বিতরণ না করে তা ফেরত পাঠিয়েছিলেন।
পরবর্তীতে সঠিক নিয়মে বাছুর আনার পর তা সুবিধাভোগীদের মাঝে বিতরণ করা হয়।
এবারও সেই একইভাবে অন্য একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বাছুর এনে নবাগত ইউএনও’র তোপের মুখে পরেছেন।