আনিস তপন, শিমুল চৌধুরী ধ্রুব: [২] দিনাজপুরের কাহারোলে অবস্থিত কান্তজিউ মন্দির পরিচালনা কমিটির অভিযোগ, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে মন্দিরের পাশে মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে করে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
[৩.১] তবে স্থানীয় মুসলমানরা বলছেন, মামলা এবং আপসনামামূলে এই জমির মালিক কান্তনগর গ্রাম জামে মসজিদ।
[৩.২] মসজিদ কমিটির সভাপতি আব্দুস সালাম বলেন, এখানে আগে থেকেই কাঁচা মসজিদ ছিল। এখন ২৫ লাখ টাকা চাঁদা তুলে তিনতলার ভিত দিয়ে সমজিদটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এর আগে এই জায়গাটি নিয়ে আদালতে মামলা হয়। সে সময় মামলার আদেশে উভয় পক্ষকে আপস করে নেওয়ার জন্য বলা হয়। সেই সূত্রে ১৯৭৬ সালের একটি আপসনামা মূলে ৮ শতাংশ জমির মালিক মসজিদ।
[৪] সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অভিযোগ, দিনাজপুর-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য জাকারিয়া জাকা এ কাজে সহযোগিতা করছেন। গত ১ মার্চ সবকিছু জেনেশুনেও মসজিদ নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন তিনি।
[৪.১] এ ব্যাপারে সংসদ সদস্য মো. জাকারিয়া জাকা বলেন, শুনেছি ৭৫ বছর ধরে ওই এলাকায় মসজিদ রয়েছে। নতুন করে মসজিদের ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এটি দেবোত্তর সম্পত্তি বলে পরে জানতে পেরেছি।এজন্য মসজিদ কমিটির দাবি করা এই সম্পত্তি বৈধ কি না, আমার জানা নেই। তারা দাবি করছে, জেলা প্রশাসন থেকে কাগজপত্র করা হয়েছে। এই কাগজপত্র সঠিক কি না, আমি জানি না।
[৫] এ নির্মাণকাজ বন্ধ চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন দিনাজপুর রাজ দেবোত্তর এস্টেটের এজেন্ট রণজিৎ কুমার সিংহ। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন বলছে, অভিযোগের পর নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে। উভয় পক্ষের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে সিদ্ধান্ত হবে। তবে স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, মসজিদের নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে।
[৬] জানতে চাইলে দিনাজপুর জেলা প্রশাসক শাকিল আহমেদ আমাদের নতুন সময়কে বলেন, আপাতত কোনো ঝামেলা হচ্ছে না। নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়েছি। ওইখানে আগে থেকেই মন্দির ও মসজিদ ছিলো। এখন বোধ হয় রিনোভেশন চলছে। আমরা অভিযোগ পাওয়ার পর কাহারোলের ইউএনওকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছি। তদন্ত শেষে আলোচনার মধ্যদিয়েই একটা সমাধান আসবে বলে আশা করছি।
[৬.১] এ ব্যাপারে কাহারোল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, তদন্ত চলমান রয়েছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখতে মসজিদ কমিটিকে নির্দেশ দিয়েছি।
[৭] এ ব্যাপারে দিনাজপুর জেলা পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, মন্দিরের পাশে মালিকানায় বিরোধপূর্ণ জমিতে স্থায়ী অবকাঠামো দিয়ে পাকা করে মসজিদ নির্মাণের চেষ্টা হচ্ছিল। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ কাগজপত্র যাচাই করে সেটির কাজ স্থগিত রেখেছে। সম্পাদনা: ইকবাল খান
আপনার মতামত লিখুন :