এম.এ. লতিফ, আদালত প্রতিবেদক: [২] বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মালিবাগে জে এস ডায়াগনস্টিক সেন্টারে খতনা করতে গিয়ে শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তার দুই চিকিৎসককে আদালতে হাজির করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক রুহুল আমিন তাদের ৭ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন এবং আসামী পক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
[৩] শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালত রিমান্ড ও জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের ২ দিন জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন এবং আসামীদের বিরুদ্ধে আগামী ২৮ মার্চ তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয়ার জন্য তারিখ ধার্য করেন। গ্রেপ্তার করা আসামী দুজন হলেন- জে এস ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক ডা. এস এম মুক্তাদির ও ডা. মাহবুব মোরশেদ।
[৪] গতকাল মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে মালিবাগ চৌধুরীপাড়ার জে.এস. ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল চেকআপ সেন্টারে খতনা করাতে গিয়ে শিশু মৃত্যুর এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী শিশুর নাম আহনাফ তাহমিদ (১০) এবং সে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়তো। এ ঘটনায় শিশুর বাবা মোহাম্মদ ফখরুল আলম বাদী হয়ে তিনজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয় ৩/৪ জনকে আসামী করে রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় মামলা করেন।
[৫] মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৮ টার দিকে আহনাফ তামহিদকে সুন্নতে খাতনা করানোর জন্য তার বাবা ফখরুল আলম হাতিরঝিল থানার জে.এস. হাসপাতালের চিকিৎসক এস এম মুক্তাদিরের কাছে নিয়ে গেলে তিনি ওইসময় কিছু টেস্ট লিখে দেন। ফখরুল আলম ওই হাসপাতালেই টেস্টগুলো করতে দিয়ে ছেলেকে নিয়ে বাসায় চলে যান। রাতে চিকিৎসক ফোন করে জানান- রিপোর্টগুলো ভালো আছে, সুন্নতে খতনা করতে কোনো সমস্যা নেই।
[৬] পরদিন ২০ ফেব্রুয়ারি রাত পৌনে ৮টায় ছেলের সুন্নতে খতনা করানোর জন্য স্ত্রী খায়রুন নাহারকে সঙ্গে নিয়ে তিনি হাসপাতালে যান। ছেলেকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়ার সময় আসামীরা জানান তাদের ২০/২৫ মিনিট সময় লাগবে। তখন আহনাফের পিতা-মাতা বাইরে অপেক্ষা করতে থাকেন। ৩০/৩৫ মিনিট পর ওটি রুমের দরজায় নক করলে তারা জানান আরও কিছুক্ষণ সময় লাগবে। এভাবে এক ঘণ্টা পার হওয়ার পর আহনাফের পিতা ফখরুল ওটি রুমে প্রবেশ করতে চাইলে তাকে ভিতরে প্রবেশ করতে নিষেধ করা হয় এবং আরও কিছুসময় বাইরে অপেক্ষা করতে বলা হয়।
[৭] পরবর্তীতে সন্দেহ হলে ফখরুল জোর করে ওটি রুমে প্রবেশ করে দেখতে পান, তার ছেলে অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে এবং তার বুকে হাত দিয়ে চাপাচাপি করছে এবং নাকে ও মুখে নল দিয়ে রক্ত বের হওয়া অবস্থায় দেখেন। তখন চিকিৎসক এস এম মুক্তাদিরকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি সঠিক উত্তর দেননি।
[৮] ছেলের এই অবস্থা দেখে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাইলে তারা কর্ণপাত না করে নিজেরাই তার বুকে চাপাচাপি ও হাত-পা মালিশ করতে থাকেন এবং জোর করে তাকে ওটি রুম থেকে তারা বের করে দেন। ২ ঘণ্টা পার হলেও তারা ছেলের বর্তমান শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে সঠিক তথ্য না দিয়ে কালক্ষেপণ করতে থাকেন। এরপর ফখরুল জোর করে ওটি রুমে প্রবেশ করে জানতে পারেন তার ছেলে আহনাফ তামহিদ মারা গেছে। সম্পাদনা: এ আর শাকিল
প্রতিনিধি/এআরএস
আপনার মতামত লিখুন :