রিয়াদ হাসান: [২] রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) মায়ের ডাক আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে এ দাবি জানান নিখোঁজ রহমাতুল্লাহর মা মমতাজ বেগম।
[৩] সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০২৩ সালের ২৯ আগস্ট দিবাগত রাত আনুমানিক ১২টার সময় র্যাবের পোশাক এবং সাদা পোশাক পরিহিত লোকজন ঢাকার ধামরাই উপজেলার গাংগুটিয়া ইউনিয়নের বড় নালগ্রামের মৃত আব্দুর রবের ছোট ছেলে ইলেক্ট্রিক মিস্ত্রি রহমাতুল্লাহকে তুলে নিয়ে যায়। এরপর গত পাঁচ মাস ধরে র্যাব কার্যালয়, বিভিন্ন ডিবি অফিস, বিভিন্ন থানা ও হাসপাতাল ঘুরেও তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
[৪] নিখোঁজ রহমাতুল্লাহকে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানিয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তার মা মমতাজ বেগম বলেন, আমি এখন কাকে নিয়ে বেঁচে থাকবো। আমার শ্বাস-প্রশ্বাস রহমাতুল্লাহ। নিখোঁজ হওয়ার ৮ দিন আগে থেকেই প্রচণ্ড জ্বরে ভুগছিল সে। কিছু খেতে পারছিল না। আমার পাশেই ঘুমিয়ে ছিল, আমার পাশ থেকে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হলো, আজও ফিরে এলো না। প্রধানমন্ত্রী আপনি বলে দিন, আমি কোথায় কার কাছে গেলে আমার সন্তানকে ফিরে পাবো।
[৫] মায়ের ডাকের সমন্বয়কারী সানজিদা ইসলাম তুলির সভাপতিত্বে এবং মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসার পরিচালনায় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রহমাতুল্লহর বড় বোন রাজিয়া আক্তার।
[৬] তিনি বলেন, গত ২৯ আগস্ট দিবাগত রাতে আমাদের বাড়ি থেকে আইন প্রয়োগকারীর সদস্যরা বাড়ির মূল ফটকে কড়া নারে। আমার মা ঘরের দরজা ও মূল ফটক খুলে বাইরে বের হলে তাদের কয়েকজন ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে এবং আমার ভাই রহমাতুল্লাহকে জোর করে তুলে নিয়ে যায়। কি কারণে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে বলে, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পরের দিন আমার মা মানিকগঞ্জ ও ধামরাই যাওয়ার পর পুলিশ কোন তথ্য দেয়নি।
[৭] রাজিয়া আক্তার বলেন, পরবর্তীতে ৭ই অক্টোবর ২০২৩ সালে ধামরাই থানায় একটি সাধারন ডায়েরি গ্রহণ করে, ডাইরি নং-৩২৪। গুম হওয়ার ৫ মাস পরেও আমার ভাইকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আমার মা প্রচন্ড অসুস্থ হয়ে পড়েছে। আমার ভাই কোন রাজনৈতিক দলের সদস্য না, তার বিরুদ্ধে কোথাও কোন মামলা ছিল না। তার পরেও সে যদি কোন অন্যায় করে থাকে দেশের প্রচলিত আইনে গ্রেপ্তার করে শাস্তি দিতে পারতো, আমরা জানতে পারতাম সে কি অপরাধ করেছে। কিন্তু এখন আমরা কিছুই জানি না।
[৮] তিনি আরো বলেন, সারাদেশে আমার ভাইয়ের মতো শত শত মানুষ গুমের শিকার হয়েছে। মায়ের ডাক তাদের পাশে দাড়িয়েছে, আমার ভাইয়ের পাশেও দাড়িয়েছে। আমি সবাইকে ফেরত চাই।
[৯] এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন রহমাতুল্লাহর বড় খালা সায়রা খাতুন। অন্যান্য ভিকটিম পরিবারের সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঝুমুর আক্তার, বেবি আক্তার, মিনু আক্তার, ইমন ওমর, হ্যাপি আক্তার সুমনি, লামিয়া আক্তার মিম।
আপনার মতামত লিখুন :