মহসীন কবির: [২] বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা, মন্ত্রী, এমপি, মেয়রসহ অনেক ছাত্রলীগ নেতাও পদ হারিয়েছেন। অনেকে রাজনীতি থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছেন।
[৩] অশালীন মন্তব্য ও এক নায়িকার সঙ্গে অকথ্য ভাষায় ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর ব্যাপক সমালোচনার মুখে পদত্যাগ করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসান। এখন সংসদ সদস্য ও দলীয় পদসহ সব ক্ষমতাই হারানোর পথে তিনি।
[৪] ২০১৪ সালে আচমকা হজ, হজরত মুহাম্মদ (স) এবং তাবলিগ জামাত নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করে বিতর্কের ঝড় তোলেন তৎকালীন প্রতাপশালী রাজনীতিক ও মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। এর জেরে মন্ত্রিত্বের চেয়ার থেকে ছিটকে পড়েন তিনি। হারান সংসদ সদস্যের পদও। মোকদ্দমা লড়তে লড়তে কার্যত এখন রাজনীতি থেকে হারিয়ে গেছেন।
[৫] জাহাঙ্গীর আলম বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করলে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এর পরই তার বক্তব্য নিয়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি ওঠে গাজীপুর থেকে। এ সময় তিনি সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, তার বক্তব্য ‘সুপার এডিট’ করে প্রচার করা হয়েছে। এটা তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। পুরো ঘটনার জন্য ক্ষমাও চান। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। গত ১৯ নভেম্বর আওয়ামী লীগ তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে। গত ২৫ নভেম্বর জাহাঙ্গীর আলমকে মেয়র পদ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়।
[৬] বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে প্রথমে দলীয় পদ থেকে ছিটকে পড়েন কাটাখালী পৌরসভার মেয়র আব্বাস আলী। পরে তাকে গ্রেপ্তারের দাবিতে নিজ এলাকায়ই বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ হয়। একপর্যায়ে তাকে মেয়র পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়। বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে তার বিরুদ্ধে দায়ের হয় একাধিক মামলা। গত ১ ডিসেম্বর আব্বাস আলীকে ঢাকা থেকে র্যাব গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে তিনি পুলিশ রিমান্ডে রয়েছেন।
[৭] বিদেশে গিয়ে সরকারবিরোধী বক্তব্য দেওয়ায় সিলেটের গোলাপগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সভাপতি আমিনুল ইসলাম রাবেলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিদেশে বসে সরকার এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের বিরুদ্ধে মানহানিকর বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। সোমবার (৬ ডিসেম্বর) স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের পৌর-১ শাখার উপসচিব মোহাম্মদ ফারুক হোসেন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এতথ্য জানানো হয়।
[৮] ২০১৯ সালের ১০ অক্টোবর ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ায় খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও বিএমএ খুলনা শাখার সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলমকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। শৃঙ্খলা ভঙ্গ, সরকার প্রধান, দলীয় প্রধান ও রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য ফেসবুকে দেওয়ায় এবং তা স্থানীয় একটি পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার বাহারুল আলমকে বহিষ্কারের কারণ দেখানো হয়েছে চিঠিতে।
[৯] ২০২১ সালের ১৮ অক্টোবর কুমিল্লার ঘটনায় ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ায় যশোরের ঝিকরগাছার এক ছাত্রলীগ নেতাকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। রোববার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালাউদ্দিন কবির পিয়াস ও সাধারণ সম্পাদক তানজীব নওশাদ পল্লব স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। অব্যাহতিপ্রাপ্ত ছাত্রলীগ নেতা মেরাজ হোসেন মিঠু। তিনি ঝিকরগাছার গদখালী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহসভাপতির দায়িত্বে ছিলেন।