আয়াছ রনি: [২] চাঞ্চল্যকর মেজর (অব:) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার কার্যক্রম সোমবার (৭ ডিসেম্বর) ৯ম দফার ২য় দিনের আদালতের বিচারকার্য সকাল সোয়া ১০টায় কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল এর আদালতে মামলার এ বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে জানান রাষ্টপক্ষের আইনজীবী এড. ফরিদুল আলম।
[৩] এই হত্যা মামলায় অভিযুক্ত ১৫ আসামি কার্যবিধি ৩৪২ ধারায় লিখিত বক্তব্যে ঘটনার সাথে জড়িত নন দাবি করে নিজেদের র্নিদোষ দাবি করেছেন। একই সঙ্গে কোনো আসামি সাফাই সাক্ষি উপস্থাপন করেননি। বরখাস্ত ওসি প্রদীপসহ ১৫ আসামির মধ্যে ১৪ জন তাদের লিখিত বক্তব্য আদালতে উপস্থাপন করেছেন। অপর আসামি এস আই নন্দ দুলাল রক্ষিতর পক্ষে আগামীকাল মঙ্গলবার লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করা হবে।
[৪] ৬৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ এবং জেরা সম্পন্ন হওয়ার পর কার্যবিধি ৩৪২ ধারায় সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে আসামিদের বক্তব্য গ্রহণ শুরু হয়। আদালতের কার্যক্রম চলাকালে বিচারক আসামিদের প্রত্যেককে নিজেদের অপরাধের বিষয়ে সরাসরি জানতে চেয়েছেন। লিখিত বক্তব্যের পাশাপাশি ওসি প্রদীপ সহ আসামিরা মৌখিক ভাবে বিচারকের প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন।
[৫] আদালতের কার্যক্রম শেষে আসামি পক্ষের আইনজীবী রানা দাশগুপ্ত জানান, সকল আসামি নিজেদের র্নিদোষ দাবি করেছেন। বিশেষ করে তাঁর মোয়াক্কেল প্রদীপ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন। মাদককারবারিরা তাকে ফাঁসিয়েছেন।
[৬] তবে এটাকে শেষ রক্ষার কৌশল বললেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এডভোকেট ফরিদুল আলম। তিনি জানান, ৮৩ জন সাক্ষির মধ্যে ৬৫ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন, জেরা শেষ হয়েছে। ওখানে পুলিশ কর্মকর্তারা যেমন রয়েছেন তেমনি মসজিদের ইমাম সহ বিভিন্ন পেশার মানুষ রয়েছেন। এখানে সাক্ষিদের মাদককারবারি বলাটা অযৌক্তিক।
[৭] উল্লেখ্য, গত বছর ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান
[৮] গত ২৩ আগস্ট সকালে কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল এর আদালতে মামলার বাদী শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌসের সাক্ষ্য প্রদানের মাধ্যমে চাঞ্চল্যকর মেজর (অব:) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার আনুষ্ঠানিক এ বিচার কার্যক্রম শুরু হয়।
[৯] নিহত সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে ২০২০ সালের ৫ আগস্ট টেকনাফ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশসহ ৯ জনকে আসামি করে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহ এর আদালতে চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলাটি দায়ের করেন। মামলাটি তদন্তভার দেওয়া হয় র্যাব-১৫ কে।
[১০] মামলার কার্যক্রম চলাকালে ১৫ জন আসামীকেও কড়া নিরাপত্তায় আদালতে হাজির করা হবে বলে জানান পিপি এডভোকেট ফরিদুল আলম। আসামীদের মধ্যে ১২ জন আসামী ১৬৪ ধারায় আদালতে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন। তারা হলেন : বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন পরিদর্শক লিয়াকত আলী, টেকনাফ থানার এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, এএসআই লিটন মিয়া, এপিবিএনের এসআই মো. শাহজাহান, কনস্টেবল মো. রাজীব ও মো. আবদুল্লাহ, পুলিশের মামলার সাক্ষী টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরের মারিশবুনিয়া গ্রামের নুরুল আমিন, মো. নিজামুদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিন।