জাহাঙ্গীর লিটন : [২] জেলার রামগঞ্জে ইউপি নির্বাচনী সহিংসতায় নিহত সাজ্জাদুর রহমান সজিবের পরিবারে থামছে না কান্নার রোল। পরিবারের ২ ছেলের মধ্যে ছোট ছেলেকে হারিয়ে দিশেহারা বিধবা মা শামসুন্নাহার। এ ঘটনায় নিহতদের স্বজন ও এলাকাবাসী দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছেন। তবে, মুখ খুলতে নারাজ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা। এদিকে, পুলিশ সুপার বলছেন সহিংসতার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
[৩] নিহত সজিব রামগঞ্জ উপজেলার ইছাপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটির সভাপতি ও লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র এবং উপজেলার নয়নপুর গ্রামের মৃত- আব্দুস সাত্তারের ছেলে।
[৪] জানা যায়, তৃতীয় ধাপে ইউপি নির্বাচনে রবিবার (২৮ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে রামগঞ্জ উপজেলার ইছাপুর ইউনিয়নের নয়নপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের বাইরে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সমর্থকদের সংঘর্ষের ঘটনায় গুরুতর আহত হয় ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সজিব। পরে তাকে উদ্ধার করে চাঁদপুর হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
[৫] স্থানীয় দুদু মিয়াসহ কয়েকজন এলাকাবাসী জানান, সকাল থেকে নির্বাচনী কেন্দ্রে নৌকা প্রতিকের পক্ষে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। হঠাৎ বিকেলে প্রতিপক্ষ স্বতন্ত্র প্রার্থী আনারস মার্কার লোকজন কেন্দ্র থেকে বাহিরে ডেকে নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায় লাঠি দিয়ে পায়ে ও মাথায় আঘাত করলে মাটিতে লুটে পড়ে যায় সজিব। তাদের লাঠির আঘাতে গুরুতর আহত হন তিনি। পরে এলাকাবাসী ও স্বজনরা আহত অবস্থায় ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে চাঁদপুর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন।
[৬] স্থানীয় বাসিন্দা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী (আনারস প্রতিক) আমির হোসেন ও শাহনাজ আক্তার (নৌকা প্রতিক) এর লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। তারা দু’পক্ষই আওয়ামী লীগের লোক। আমরা সহিংস নির্বাচন চাই না।
[৭] নিহতের বোন সুফিয়া, সোনিয়া ও ভাগিনা তারেক এবং চাচা মুরাদ জানায়, নির্বাচনে কেন্দ্র থেকে ডেকে নিয়ে ৪/৫জনে মিলে জড়িয়ে ধরে সজিবকে পিঠিয়ে হত্যা করে। ছেলের হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি করেন তিনি। দোষীদের শাস্তি দাবি করেন তারা। তবে, প্রশাসন নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করেছেন বলে অভিযোগ তাদের। এসময় সুষ্ঠু নির্বাচন প্রত্যাশা করে সজিব হত্যার বিচার দাবি করেন।
[৮] প্রত্যক্ষদর্শী জসিম উদ্দিন বলেন, হঠাৎ কয়েকজন সন্ত্রাসী অতর্কিতভাবে সজিবের উপর হামলা চালায়। বাধা দিতে গেলে তাকেও পিঠিয়ে আহত করে। অনতিলম্বে হত্যাকারিদের গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি করেন তারা।
[৯] পুলিশ সুপার ড. এএইচএম কামরুজ্জামান বলেন, সহিংসতায় নিহতের ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। জড়িতদের গ্রেপ্তারের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ
আপনার মতামত লিখুন :