জাকির তালুকদার: লাখ লাখ সন্তানকে শৈশব ও কৈশোর থেকে বঞ্চিত করে চলেছে ডিগ্রিধারী অশিক্ষিত পিতা-মাতা। জিপিএ-৫ পেতেই হবে সন্তানকে। স্কুলতো মোটেই যথেষ্ট নয়। তাই স্কুল ছুটি হতেই দৌড়ে কোচিং ক্লাসে। বাসায় ফিরেই দেখা যাবে বসে আছে ইংরেজি-বাংলা কিংবা ম্যাথের টিচার। শুক্রবার সঙ্গে যোগ হয় আরবি শিক্ষক। সন্তানের খেলার মাঠে যাওয়া নিষেধ, শিশু-কিশোর সংগঠনে যাওয়া নিষেধ। পাড়ার পাঠাগারে যাওয়া নিষেধ। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি এসে রবীন্দ্রসংগীত বাজায়। বই নিতে যেতে পারে না কিশোর-কিশোরী। পাঠ্যবই পড়ে আছে, আউট বই পড়ে সময় নষ্ট করা।
বেচারা সন্তান জানলোই না কীভাবে আরেকজনের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়। জানলোই না সমাজে আরও কত ধরনের কিশোর-কিশোরী আছে যারা তাদের পরিবারের মতো না হলেও ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়ে ওঠতে পারে। জানলোই না খেলার মাঠে বাদাম ভাগাভাগি করে খাওয়ার আনন্দ। সে তাই হয়ে ওঠে আত্মকেন্দ্রিক। এমনই আত্মকেন্দ্রিক যে অন্যদের কথা ভাবাতো দূরের কথা, পরবর্তী জীবনে মা-বাবার কথাও ভাবে না। মেয়েরা শেখে দুটৌ জিনিস। ইউটিউব দেখে দেখে নাচ। আর ফ্যাশন পেজ দেখে দেখে নতুন পোশাক কিনে দেওয়ার নাছোড় দাবি। ছেলেরা ছোট স্ক্রিনে মুভি দেখে শেখে ভায়োলেন্সের রকমফের। জিপিএ-৫ হলো। কিন্তু মেডিকেল-ইঞ্জিনিয়ারিং দূরের কথা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাতে পাস নম্বরটাই তুলতে পারে মাত্র ১০ শতাংশ শিক্ষার্থী। তখন যাও বেসরকারিতে পড়তে। বাপ-মাকে সেই গুচ্চোর খরচ যোগাতে হয় পেনশন বেচে বা অবৈধ টাকা উপার্জন করে। নিজেদের কর্মফল ভোগ করুন সম্মানিত পিতা-মাতা। লেখক : কথাসাহিত্যিক