জান্নাতুন নাঈম প্রীতি: এই পৃথিবীতে সবচেয়ে কঠিন কাজ হলো প্রিয়জনের মৃত্যুর সংবাদ লেখা। আমার লেখালেখি জীবনের, আমার শৈশবের, আমার তারুণ্যের সবচেয়ে প্রিয় বন্ধুর নাম হাসান আজিজুল হক। তিনি সম্পর্কে আমার তাই-ই, কিন্তু লেখক হিসেবে আমাদের যে সম্পর্ক তা আমি সারাজীবন লিখতে চাই। লিখতে চাই ‘আগুনপাখি’ লেখার কথা, লিখতে চাই ঘণ্টার পর ঘণ্টা আড্ডা দেওয়ার কথা, লিখতে চাই আমাদের সমস্ত বিতর্কের কথা। সেই অসংখ্য স্মৃতি কি কখনো ভুলতে পারবো? বাংলা সাহিত্য হারিয়েছে তার ছোটগল্পের রাজপুত্রকে, কিন্তু আমি হারিয়েছি সেই বন্ধুকে যে এই কিছুদিন আগেও আমাকে কথা দিয়েছিলোÑ সেরে উঠলে আমরা ইউরোপ দেখতে যাবো, শেকসপিয়ার অ্যান্ড কোম্পানিতে বসে আড্ডা দেবো, জোরে জোরে পাঠ করবো আর্নেস্ট হেমিংওয়ের ‘স্নোজ অব কিলিমাঞ্জারো’।
আমার জন্য তাঁর শেষ উপহার ছিলো আমার সবচেয়ে প্রিয় কবিতার অনুবাদ। এডগার এলান পো’র লেখা অষড়হব. কবিতার লাইনগুলো এ রকম- ¸ heart to joy at the same tone/And All I loved, I loved alone... কী অদ্ভুত! তিনি নিজেই একা হয়ে গেলেন আজ?
তিনি কোলাহল ভালোবাসতেন কেবল আড্ডা দিতে। কিন্তু নির্জনতায় ডুব দিতেন লেখার সময়টায়। এ রকম মানুষকে বিদায় দেওয়া যায় না। অসীম নির্জনতার জগতে তাঁকে আমন্ত্রণ। আর হ্যাঁ, লেখকেরা কখনোই মরেন না, তারা কেবল বই হয়ে যান। প্রিয় বন্ধু, প্রিয় আত্মীয় আমার, তুমিই বলো, তোমাকে কি কখনো বিদায় বলতে পারি? বন্ধুর জন্য লেখা আর আঁকা ছাড়া আর কিইই বা করতে পারি আমি? Clr পরিমার্জিত। Jannatun Nayeem Prity-র ফেসবুক ওয়ালে লেখাটি পড়ুন।