জান্নাতুন নাঈম প্রীতি : বাঙালির অন্যের জীবনে নাক গলানোর অভূতপূর্ব উদাহরণ সম্ভবত তসলিমা নাসরিন। তসলিমা নাসরিন টুইট করেছেন- তিনি নাকি ভেবেছিলেন ৩০ বছর বয়সের পরে মালালা ইউসুফজাই বিবাহ করবেন একজন প্রগতিশীল ইংরেজকে! ঠিক যেন আমাদের প্রায় প্রত্যেকেরই পাশের বাড়ির সেই আন্টি, যিনি রেজাল্টের দিন ছোক ছোক করে জিজ্ঞেস করেন, রেজাল্ট কেমন হইছে? কিংবা বিয়ে বাড়িতে গিয়ে যে অহেতুকই বলেন, কাচ্চির মাংসডা সিদ্ধ হয় নাই। ওমা, তোমার বাপ-মা বিয়েতে কিছু দেয় নাই? প্রিয় তসলিমা, সমগ্র বিশ্বের প্রতিটি মানুষেরই কি আপনার ইচ্ছা অনুযায়ী চলতে হবে? তিনি এর আগে ইংল্যান্ডের ক্রিকেটার মঈন আলীকে নিয়েও বলেছিলেন, মঈন আলী জঙ্গি হতে পারতেন, আবরার ফাহাদও জঙ্গি হতে পারতেন। মঈন আলীর ব্যাপারে ইংলিশ ক্রিকেট দলের প্রতিবাদের মুখে বলেছিলেন, আরে, আমিতো ফান করেছিলাম। তসলিমা, আপনি কি জানেন ‘রেজাল্ট ভালো হইছে’ জানলে পাশের বাসার আন্টিরাও ‘আমিতো জানতামই ভালো করবে’ জাতীয় কথা বলে থাকেন?
মালালা ইউসুফজাই বলেছিলেন, সম্পর্কের জন্য বিয়ে অপ্রয়োজনীয়। এরপর নিজেই বিয়ে করেছেন। এখানে সমস্যাটা কোথায়? মানুষ কি জন্মের পর যা শেখে বা বলে সেই একই কথাই মরার দিন পর্যন্ত বহাল রাখে? বদলায় না কিছু? বিয়েতো আমারও অপ্রয়োজনীয়ই লাগে, কিন্তু বাংলাদেশের মতো দেশে বিয়ে না করে এক ছাদের নিচে বসবাস দুইজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য ফৌজদারি অপরাধ। এখন যার বিয়ের ওপর আস্থা নেই কিন্তু আছে এ রকম দেশে যেখানে বিয়ের মতো অপ্রয়োজনীয় কাজ না করে সে সঙ্গীর সঙ্গে থাকবে কীভাবে?
তসলিমা নিজেই বিয়ের মতো অপ্রয়োজনীয় কাজটি তিনবার করেছিলেন কেন? জানি না। কেবল জানি মানুষ বড় হয়ে হয় বড় মানুষ, তসলিমা নাসরিন বড় হয়ে হওয়ার কথা ছিলো বড় লেখক, বড় নারীবাদী ইত্যাদি। কিন্তু তিনি বড় হয়ে বড় নারীবাদী বা লেখক হওয়ার পাশাপাশি হয়েছেন পাশের বাড়ির সেই আন্টি, যিনি বড় হলেও বাঙালি হিসেবে অন্যের জীবনে নাক গলানোতে বড় ভূমিকা পালন করছেন। অতঃপর, প্রিয় তসলিমা, এতো বড়ত্ব লইয়া বড় হওয়ার বিড়ম্বনায় আর কতোবার বড় বড় নাক গলানোতে আপনি ভূমিকা রাখিবেন?Jannatun Nayeem Prity-র ফেসবুক ওয়ালে লেখাটি পড়ুন।