খালিদ আহমেদ: [২] বিশ্বমানবতার কল্যাণে শক্তিশালী অংশীদারিত্বের তাগিদ দিয়েছেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, কোভিড বাস্তবতায় শিক্ষাব্যবস্থায় প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য ডিজিটাল ডিভাইস নিশ্চিত করতে হবে বিশ্বনেতাদের। বাসস

[৩] প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ লক্ষ্যে আমরা শিক্ষা, বিজ্ঞান, সংস্কৃতি এবং যোগাযোগকে কার্যকর হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছি।

[৪] ফ্রান্সের প্যারিসে স্থানীয় সময় শুক্রবার বিকেলে ইউনেসকোর ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার সহিষ্ণুতা ও মর্যাদা সঞ্চারিত করার মাধ্যমে শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছে।

[৫] প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আমাদের সাফল্য উদযাপনের এক অনন্য মুহূর্ত। এ ছাড়া এটি শতবর্ষ উদযাপনের আগে পরবর্তী ২৫ বছরে সংস্থার কার্যকলাপগুলোকে পুনর্বিবেচনা এবং আত্মসমালোচনা করার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপলক্ষ।

[৬] তিনি আরও বলেন, ইউনেসকোর নীতির প্রতি বাংলাদেশের অঙ্গীকার ১৯৭২ সালে আমাদের প্রাথমিক সদস্যপদ লাভের মাধমে প্রতিফলিত। বলেন, আমরা এই সংগঠনকে বিশ্ব শান্তি ও সম্মিলিত সমৃদ্ধি জোরদারের জন্য অন্যতম কার্যকর মঞ্চ হিসেবে বিবেচনা করি।

[৭] বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শান্তিকেন্দ্রিক পররাষ্ট্রনীতি দ্বারা পরিচালিত বাংলাদেশ সর্বদা বিশ্ব শান্তি উদ্যোগের অগ্রভাগে থাকে। তিনি বলেন, শীর্ষ অবদানকারী হিসেবে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষায় আমাদের অংশগ্রহণ এমনই একটি ঘটনা।

[৮] শেখ হাসিনা বলেন, বৃত্তি প্রদান, লিঙ্গ-সংবেদনশীল দৃষ্টিভঙ্গি, স্কুল ফিডিং প্রোগ্রাম, আইসিটি শিক্ষার মতো পদক্ষেপের মাধ্যমে শিক্ষায় আমাদের বিনিয়োগ প্রচুর। বলেন, আমাদের সরকার স্কুলে বছরের শুরুতে প্রায় ৪ কোটি ২০ লাখ শিক্ষার্থীর মধ্যে বিনামূল্যে ৪০ কোটি পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ মহাপরিকল্পনা আইসিটি ভিত্তিক শিক্ষার মাধ্যমে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য প্রস্তুত করছে।

[৯] তিনি আরও বলেন, আমরা আমাদের শিক্ষা মহাপরিকল্পনায় আইসিটি চালু করেছি, এর আওতায় প্রায় ৮৩ হাজার স্কুলকে আইসিটি ডিভাইস সরবরাহ করা হয়েছে এবং ৩ লাখ ২৬ হাজার ৯৩৬ জন শিক্ষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

[১০] প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইউনেসকোর এই ঐতিহাসিক ৭৫তম বার্ষিকীতে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী ইউনেসকোর মহাপরিচালককে অভিনন্দন জানান। বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইউনেসকো বিশ্বের জন্য আশা ও শান্তির প্রতীক হয়ে উঠেছে।

[১১] তিনি বলেন, এ অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ কারণ এটি আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন একই সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু ছিলেন শান্তির প্রবক্তা এবং মানবতায় দৃঢ় বিশ্বাসী। মানুষের অদম্য কর্মস্পৃহা, অসম্ভবকে সম্ভব করার ও অনতিক্রম্য বাধা অতিক্রম করার ক্ষমতায় তার (বঙ্গবন্ধুর) গভীর আস্থা ইউনেসকোর চেতনা অনুরণিত করে।

[১২] প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার সৃজনশীল অর্থনীতির জন্য ইউনেসকো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্তর্জাতিক পুরস্কার’ প্রদান অনুষ্ঠানে যোগদানের কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, ‘এই আন্তর্জাতিক পুরস্কার অবশ্যই সৃজনশীল উদ্যোক্তা বিকাশে উৎসাহ জোগাবে।

[১৩] প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ইউনেসকো জাতির পিতার ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে একটি প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা করায় ‘মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টারে স্থান দেওয়ায় তিনি কৃতজ্ঞ। জনগণের নেতাকে এই ধরনের গভীর শ্রদ্ধা জানানোর জন্য আমি ইউনেসকোকে ধন্যবাদ জানাই।

মহামারি বহু মানুষের জীবন কেড়ে নিয়েছে এবং আমাদের জীবন বদলে দিয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এটি আমাদেরকে উদ্ভাবনী কাজ এবং গতির মাধ্যমে বেঁচে থাকতেও শিখিয়েছে।